আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

প্রকৃত মৎস্যজীবিদের বিতাড়িত করে মাছ চাষ করছে প্রভাবশালীরা

বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০১৪, দুপুর ১০:৫৩

উলে¬খ্য, বন্যার হাত থেকে গাইবান্ধা শহরকে রক্ষায় ২০০০ থেকে ২০০২ সালে লুপ কাটিং করে ঘাঘটের গতিপথ পরিবর্তন করে দেয়া হয়। এসময় ঘোড়ার খুড়ের মতো আকৃতি নিয়ে প্রায় ৩ কি.মি. অংশ ঘাঘটের পরিত্যক্ত অংশটি খাল হিসেবে দীর্ঘদিন অব্যহৃত অবস্থায় পড়ে থাকে। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে মৎস্য বিভাগ অভ্যন্তরীন মুক্ত জলাশয়ে মৎস্য আবাসস্থল পুনরুদ্ধার প্রকল্প নামে পরিত্যক্ত ঘাঘটের ৫৮ হেক্টর আয়তনে মাছ চাষের লক্ষ্যে গোটা এলাকাটিকে ৩টি অংশে বিভক্ত করে। মাছ চাষ উন্নয়নে নদী তীরবর্তী এলাকার ১শ’ জন সুবিধাভোগী নির্ধারণ করা হয়। প্রথম অংশ অভয়াশ্রমে চিহ্নিত করে মোট ৩১ জন, দ্বিতীয় অংশে মাছ চাষে ২৪ জন এবং তৃতীয় অংশে একই উদ্দেশ্যে ৪৫ জনকে সদস্য করে ৩টি ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে ১০ বছরের জন্য গোটা জলাশয়টিকে লীজ দেয়া হয়। বছরে মাত্র ১৩ হাজার ২৯২ টাকা লীজ মানি নির্ধারণ করে ওই ৩টি গ্র“পের কাছে জলাশয়টি হস্তান্তর করা হয়। নারায়ন দাশ নামে এক মৎস্যজীবিকে এর দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে অন্যান্য মৎস্যজীবিসহ নারায়ন দাশকে জোরপূর্বক হটিয়ে দিয়ে প্রভাবশালীরা তাদের লীজকৃত জলাশয়টি দখল করে নেয়।

প্রভাবশালীরা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে ২০টি ভাগে জলাশয়টিকে বাঁশের বানা (ঘেরা) দিয়ে তাতে মাছ চাষের খামার গড়ে তোলে। এরমধ্যে ডেভিডকোম্পানীপাড়া ও ব্রীজরোড কালীবাড়িপাড়ায় ৩টি, পুরাতন বাজার এলাকায় ৫টি, শশ্মানঘাট এলাকায় ৩টি, নতুন বাজার এলাকায় ৪টি, মডার্ণ এলাকায় ৩টি, শশ্মান ঘাট এলাকায় ৩টি, নতুন বাজার এলাকায় ৪টি, মডার্ণ এলাকায় ৩টি এবং কুটিপাড়া এলাকায় ২টি প¬¬ট তৈরী করা হয়। এই বিভক্তির ফলে খালের স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং জলাশয়টি আবর্জনায় ভরে উঠে।

অথচ গাইবান্ধাবাসির দীর্ঘদিনের দাবী ছিল- মৎস্য চাষ মূখ্য নয়, ঘাঘট লেক সংস্কার করে এর দু’ধারে বিনোদন পার্ক গড়ে তোলা। যাতে থাকবে বসার আসন, আসনের উপর ছাতা, দু’পাড় জুড়ে থাকবে ফলজ ও বনজ গাছের সারি। ওই দাবির সমর্থনে ‘পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন’সহ বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন সময়ে মানববন্ধন, শোভাযাত্রা, সমাবেশ ও অন্যান্য কর্মসূচী পালন করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০০৩-২০০৪ সালের দিকে লেক উন্নয়নে একটি কর্মসূচী হাতে নেয়। এজন্য প্রধান কার্যালয় থেকে কিছু থোক বরাদ্দও আসে। কিন্তু নানা জটিলতায় ওই কর্মসূচী আর আলোর মুখ দেখেনি।

মাছ চাষের জন্য শুধু জলাশয় নয়, বরং খালের দুই পাড় দখল করে বহুতল বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। এছাড়া ঘাঘট খালের দুইপাড় কেটে বালু ও মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে এক শ্রেণীর মাটি ও বালু ব্যবসায়ি। ফলে খালটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মরা ঘাঘট খালটি জবর দখল করে বলেন, সরকারী যাবতীয় নিয়ম-কানুন মেনেই খালটি লীজ দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে সরকারী স্বার্থ যথাযথভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে না। এমনকি লিজ মানিও আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলা মৎস্য ব্যবস্থাপনা কমিটিকে এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

পৌর মেয়র মোঃ শামছুল আলম বলেন, শহরবাসির চিত্তবিনোদনের জন্য খালটি সুদৃশ্য ও মনোরম লেকে পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে এটি শহরবাসির কাংখিত বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত করা সম্ভব হবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied