আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ● ৫ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: সার্ভার ডাউন: রসিকে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে ভোগান্তি চরমে       রংপুরে ফটোসাংবাদিক ফিরোজ চৌধুরীর একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী       ডোমার ও ডিমলা উপজেলা নির্বাচনে ৩৫ জনের প্রার্থীতা বৈধ ॥ চেয়ারম্যান পদে ১২ জনের মধ্যে আওয়ামীলীগের ৭ জন প্রার্থী       নীলফামারীতে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালন       নীলফামারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু      

 width=
 

রৌমারী উপজেলা আ’লীগ নড়বড়ে !

শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০১৪, দুপুর ০২:২৩

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা আ’লীগের সিনিয়র এক নেতা বলেন, ‘রৌমারী আ’লীগের এখন খুব নাজুক। কর্মীদের সঙ্গে নেতাদের কোনো মিল নেই। নেতারা যার যার মতো। দলীয় কোনো কর্মসূচী ও সাংগঠনিক কার্যক্রম হয় না গত ৬ বছর থেকে। কতিপয় নেতার দুর্নীতি আর সেচ্ছাচারিতার কারনে সাধারণ মানুষ আ’লীগের প্রতি ক্ষুদ্ধ হয়ে আছে।’ ওই নেতা আরো জানান, বর্তমান আ’লীগ সভাপতি আজিজুল হক দীর্ঘদিন থেকে বয়স্ক জনিত অসুস্থ রয়েছে। দল থেকে তিনি অনেক দুরে। এ অবস্থায় দলের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মিনু একক আধিপাত্য বিস্তার করেছে। তিনিও দলের সাংগঠনিক তৎপরতায় কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বর্তমানে রৌমারী আ’লীগ গতিহীন ও দেউলিয়া হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

উপজেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ শাহনেওয়াজ তুহিন জানান, গত ২০০৮ সালে দলের সম্মেলন হয়েছে যার মেয়াদ ছিল ৩ বছর। সেখানে ৬ বছর অতিবাহিত হচ্ছে কিন্তু কোনো সম্মেলন হচ্ছে না। জেলার সকল উপজেলায় সম্মেলন হলেও শুধু রৌমারীতে হয়নি। এ অবস্থায় দলের সদস্যরা বর্তমান কমিটির প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করেছে। গত ২ বছর আগে কুড়িগ্রাম জেলা আ’লীগ সম্মেলনের উদ্যোগ নিলেও কয়েকজন নেতার স্বার্থ হাসিলের জন্য তা ভেস্তে যায়। বর্তমানে রৌমারী উপজেলা আ’লীগ মাঝি বিহীন নৌকার মতো। কারন উপজেলা সভাপতি এখন অচল। ওনার বয়স হয়েছে অনেক। তার মধ্যে গত ৪ বছর থেকে তিনি অসুস্থ্য। দলের সাংগঠনিক অবস্থা নড়বড়ে। ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দলের কমিটি থাকলেও উপজেলা কমিটি নড়বড়ে হওয়ার কারনে মাঠ পর্যায় তৎপরতা নেই। এভাবে চলতে থাকলে রৌমারী উপজেলা থেকে আ’লীগ একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

রৌমারী সদর ইউনিয়ন আ’লীগ সাধারণ সম্পাদ রাজু আহম্দে খোকা জানান, বিগত ৫ বছর আ’লীগের এমপি থাকা সত্ত্বেও দল একটুও আগায়নি বরং পিছিয়ে গেছে। কারন এমপি জাকির হোসেন দলের জন্য কোনো কাজ করেননি। তিনি সব সময় নিজের জন্য করেছেন। তার কারনে ছাত্রলীগ ও আ’লীগের মধ্যে গ্রুপিংয়ের সৃষ্টি হয়েছে। দলের নেতাকর্মীদের প্রতি তিনি কখনও আন্তরিকতা দেখাননি। এ কারনে গেল সাদামাঠা সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি জেপি’র প্রার্থী সঙ্গে তিনি হরে যান। আ’লীগ একটি বড় সংগঠন। মাঠ পর্যায়ে ও ওয়ার্ড দলের কমিটি নেতাকর্মী থাকলেও কিভাবে আ’লীগের প্রার্থী পরাজিত হয়।

যাদুরচর ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী জানান, যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে রৌমারী আ’লীগ আজ মেরুদন্ডহীন হয়ে পড়েছে। এর কারন কতিপয় নেতার দুর্নীতি আর ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবে। ৬ বছর থেকে যে সম্মেলন হচ্ছে না এর কারন উপজেলা সহসভাপতি জাকির হোসেনের অপতৎপরতা। তিনি সংসদ নির্বাচনে সাইকেলের প্রার্থীর সঙ্গে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘তার কারসাজিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আ’লীগ জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষে মাঠে কাজ করেছে। যাতে আমি নির্বাচিত হতে না পারি। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে দলের নেতাকর্মীরা তা করেননি। আর এ কারনে আমি বিজয়ী হয়েছি।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের সাধারণ এক সদস্য বলেন, ‘রৌমারী আ’লীগকে পচাচ্ছে গুটি কয়েক নেতা। এর মধ্যে গত ৫ বছর এমপি থাকাকালিন জাকির হোসেনের দুর্নীতি এবং তাঁর অনুগত্য সুবিধাবাদি কিছু নেতা-কর্মীর লুটপাটে দলের ভাবমুর্তি জিরো কইরা দিছে। আ’লীগের এমপি হইয়া আ’লীগের নেতাকর্মীদের নামে মামলা করেছে জাকির হোসেন। অন্যদিকে ক্ষমতার দাপটে সরকারি বিভিন্ন দপ্তর থেকে সুবিধা নিয়েছেন উপজেলা নেতারা।’

এসব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদ রেজাউল ইসলাম মিনু বলেন, ‘দলের কেন্দ্রীয় কর্মসূচী পালন করা হয় না, এটা সত্য নয়। সকল কর্মসূচী যথা নিয়মে পালন করা হয়। আমি মনে করি উপজেলা আ’লীগ আগের চেয়ে আরো গতিশীল। অন্যান্য যে অভিযোগ তাও সত্য নয়। কারন উপজেলা কমিটিতে ৭জন সহসভাপতি রয়েছে। সভাপতি অসুস্থ্য এতে কোনো সমস্যা নেই।’ ৬বছর থেকে সম্মেলন হয় না, এটা তিনি স্বীকার করে বলেন, ‘বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে কোনো অনাস্থা প্রস্তাব করা হয়নি। তাছাড়া কমিটির সদস্য তা করতেও পারে না।’ উপজেলা আ’লীগের সহসভাপতি ও সাবেক এমপি জাকির হোসেন বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করেন। তার মতামত নেওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে অনেকবার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।

রৌমারী উপজেলা আ’লীগের সম্মেলন কেন হচ্ছে না-এমন বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম জেলা আ’লীগ সভাপতি আমিনুল ইসলাম ওরফে মজনু মন্ডল জানান, নানা কারনেই সম্মেলন হয়নি। তবে রমজান ঈদের পরে সম্মেলন করা হবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied