আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

মহানায়ক উত্তম কুমার স্মরণ

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০১৪, দুপুর ০৩:২১

বিনোদন ডেস্ক:  ২৪ জুলাই বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়ক উত্তম কুমারের ৩৪তম প্রয়াণ দিবস। উপমহাদেশের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি এ অভিনেতা নীতিন বসু পরিচালিত ‘দৃষ্টিদান’ ছবিতে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করেছিলেন ভারতীয় চলচ্চিত্রে। এরপর সুচিত্রা সেনের সঙ্গে জুটিবদ্ধ হয়ে বদলে দিয়েছেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের গতিধারা।

পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে ভারতীয় চলচ্চিত্রে ছিল উত্তম কুমার সুচিত্রা সেনের একচেটিয়া আধিপত্য। এখনও ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল জুটি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় উত্তম-সুচিত্রাকে। এ জুটি এখনও আলোচিত হয় মানুষের মুখে মুখে। চলচ্চিত্রে অভিনয় করে উত্তম কুমার কিংবা সুচিত্রা সেনের মতো জনপ্রিয়তা এ উপমহাদেশের চলচ্চিত্রে খুব কম শিল্পীই অর্জন করতে পেরেছেন। উত্তম কুমার মঞ্চেরও সফল অভিনেতা ছিলেন। তবে চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবেই তিনি পরিচিতি পেয়েছেন।

উত্তম কুমারের আসল নাম অরুণ কুমার চ্যাটার্জী । ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তিনি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কলকাতার সাউথ সাবারবান স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে কলেজে ভর্তি হন। কলকাতার পোর্টে চাকরি নিয়ে কর্মজীবন শুরু করলে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করতে পারেননি। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসে চলচ্চিত্র জগতে প্রতিষ্ঠা পেতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। উত্তম কুমারের প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র ছিল দৃষ্টিদান। এই ছবির পরিচালক ছিলেন নিতীন বসু। এর আগে উত্তম কুমার মায়াডোর নামে একটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছিলেন কিন্তু সেটি মুক্তিলাভ করেনি। বসু পরিবার চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এরপর সাড়ে চুয়াত্তর মুক্তি পাবার পরে তিনি চলচ্চিত্র জগতে স্থায়ী আসন লাভ করেন। ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবিতে তিনি প্রথম অভিনেত্রী সুচিত্রা সেনের বিপরীতে অভিনয় করেন। এই ছবির মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সফল উত্তম-সুচিত্রা জুটির সূত্রপাত হয়।

উত্তম কুমার এবং সুচিত্রা সেন বাংলা চলচ্চিত্রে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে অনেকগুলো ব্যবসা সফল এবং প্রশংসিত চলচ্চিত্রে মুখ্য ভূমিকায় একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। এগুলোর মধ্যে প্রধান হলো- হারানো সুর, পথে হল দেরী, সপ্তপদী, চাওয়া পাওয়া, বিপাশা, জীবন তৃষ্ণা এবং ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট পাড়ার অভিনেতা থেকে অরিন্দমের নায়ক হওয়ার গল্প নিয়ে ছবিতে উত্তম অভিনয় করতে গিয়ে খুঁজে পেয়েছিলেন নিজেকে। তবে উত্তম কুমার নিজেকে সু-অভিনেতা হিসেবে প্রমাণ করেন `এ্যান্টনি ফিরিঙ্গি` ছবিতে স্বভাবসুলভ অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। কারণ এই ছবিতে উত্তম কুমার তার পরিচিত ইমেজ থেকে সরে আসার চেষ্টা করেছিলেন। এতে তিনি সফলও হয়েছিলেন।

উত্তমের সেই ভুবন ভোলানো হাসি, প্রেমিকসুলভ আচার-আচরণ বা ব্যবহারের বাইরেও যে থাকতে পারে অভিনয় এবং অভিনয়ের নানা ধরন, মূলত সেটাই তিনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন।১৯৬৭ সালে `এ্যান্টনি ফিরিঙ্গি` ও `চিড়িয়াখানা` ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন (তখন এই পুরস্কারের নাম ছিল `ভরত`)। অবশ্য এর আগে ১৯৫৭ সালে অজয় কর পরিচালিত `হারানো সুর` ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছিলেন সমগ্র ভারতজুড়ে।

সেই বছর `হারানো সুর` পেয়েছিল রাষ্ট্রপতির সার্টিফিকেট অফ মেরিট। ইংরেজি উপন্যাস ‘র‌্যানডম হারভেস্ট’ অবলম্বনে ছবিটি নির্মাণ করা হয়। প্রযোজক ছিলেন উত্তম কুমার নিজেই। কমেডি চরিত্রেও তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী। ‘দেওয়া নেওয়া` ছবিতে হৃদয়হরণ চরিত্রে অভিনয় করে সেই প্রতিভার বিরল স্বাক্ষরও রেখে গেছেন। এক গানপাগল ধনীপুত্র অভিজিৎ চৌধুরীর বাবা কমল মিত্রের সঙ্গে রাগারাগি করে বন্ধু তরুণ কুমারের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন।

বাবা গান পছন্দ করেন না, কিন্তু অভিজিৎ চৌধুরীর লক্ষ্য ছিল অনেক বড় শিল্পী হওয়া। নায়িকা তনুজার মামা পাহাড়ি স্যানালের বাড়িতে হৃদয়হরণ নামে ড্রাইভারের কাজ নেয়। সাবলীল অভিনয় দিয়ে ফুটিয়ে তোলেন হৃদয়হরণ চরিত্রটি। ছবিটির একটি আকর্ষণীয় সংলাপ ছিল ‘টাকাই জীবনের সবকিছু নয়’। এ ছাড়াও অত্যন্ত চমকপ্রদ একটি গানও রয়েছে- ‘জীবন খাতার প্রতি পাতায়, যতোই করো হিসাবনিকাশ, পূর্ণ হবে না’। হিন্দী ছবিতে উত্তম কুমার উত্তম কুমার বহু সফল বাংলা চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি হিন্দি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছিলেন।

তার অভিনীত হিন্দি চলচ্চিত্রের মধ্যে ছোটিসি মুলাকাত, অমানুষ এবং আনন্দ আশ্রম অন্যতম। সত্যজিতের ছবিতে উত্তম কুমার সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় দুটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। প্রথমটি নায়ক এবং দ্বিতীয়টি চিড়িয়াখানা। চিড়িয়াখানা চলচ্চিত্রে তিনি শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় সৃষ্ট বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। রোমান্টিক ছবির ফাঁকে দুই-একটা অন্য ছবিতেও অভিনয় করছেন তিনি। এর মধ্যে একদিন সত্যজিৎ রায়ের কাছ থেকে ডাক পেলেন উত্তম `নায়ক` ছবিতে অভিনয়ের জন্য। রোমান্টিক নায়ক ছাড়াও অন্যান্য চরিত্রেও তিনি ছিলেন অবিস্মরণীয়। মঞ্চের প্রতি ছিল তার অগাধ ভালোবাসা। যার প্রমাণ হিসেবে পাওয়া যায় ১৯৫৫ সালে যখন তিনি বাংলা ছবির সুপার হিরো। শত ব্যস্ততার মাঝেও মঞ্চের ডাকে সাড়া দিয়ে `শ্যামলী` নাটকে অভিনয় করেছেন।

চলচ্চিত্র পরিচালনা : চলচ্চিত্র পরিচালনায়ও সাফল্য দেখিয়েছেন উত্তম কুমার। ১৯৬৬ সালে শুধু একটি বছর শিরোনামের ছবি পরিচালনার মাধ্যমে উত্তম কুমার চলচ্চিত্রে প্রবেশ করেন। এরপর ১৯৭৩ সালে বনপলাশীর পদাবলী নামের একটি ছবি ব্যাপকভাবে প্রসংশিত হয়। উত্তম কুমার পরিচালিত সর্বশেষ ছবিটি মুক্তি পায় তিনি মারা যাবার পর ১৯৮১ সালে। ছবিটির নাম ‘কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী’ অভিনয়ে পাশাপাশি ছবি পরিচালনায়ও বিশেষ অবদান রয়েছে তার।

গান পাগল এক অভিনেতা : সঙ্গীতের প্রতিও ছিল তার অসীম ভালোবাসা। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় কিংবা মান্না দের গানেই সবচেয়ে বেশি ঠোঁট মিলিয়েছেন উত্তম। ছবির গান রেকর্ডিংয়ের সময় শিল্পীর পাশে বসে তার অনুভূতি উপলব্ধি করার চেষ্টা করতেন। এতে নাকি পর্দায় ঠোঁট মেলাতে তার বেশ সহজ হতো। সঙ্গীতপ্রেমী উত্তম ‘কাল তুমি আলেয়া’ ছবির সবগুলো গানের সুরারোপ করেন। ছবিটি ১৯৬৬ সালে মুক্তি পায়। অভিনেতা প্রযোজক, পরিচালক, সব মাধ্যমেই তিনি ছিলেন সফল। তবে সব কিছু ছাপিয়ে উত্তম কুমার এ উপমহাদেশের চলচ্চিত্র প্রেমীদের কাছে একজন কিংবদন্তি অভিনেতা হিসেবেই হাজার বছর বেঁচে থাকবেন। ১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মন্তব্য করুন


 

Link copied