আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

বিএডিসি’র অবহেলা ও দুর্নীতি: লালমনিরহাটে ৩০০ বিঘা জমি অনাবাদী থাকার আশঙ্কা

রবিবার, ১০ আগস্ট ২০১৪, দুপুর ০২:২১

এ পরিস্থিতিতে কৃষি বিভাগও যেখানে সময় মত আমন চারা রোপনের জন্য চাষীদেরকে সেচ যন্ত্র চালু করার পরামর্শ দিচ্ছে- সেখানে, লালমনিরহাট বিএডিসি সেচ বিভাগ কৃষক ও কৃষির স্বার্থ বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ায় সদর উপজেলার একটি গভীর নলকূপ সামান্য মেরামতের কাজে গাফলতি করায় গত দু’সপ্তাহ ধরে গভীর নলকূপটি অকেজো হয়ে পড়ে আছে। ফলে, এ নলকূপটির আওতায় তিনশতাধিক বিঘা জমিতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষকরা। একারনে সাধারন কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এজন্য বিএডিসি’র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দায়ী করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারন চাষীরা।

জানা গেছে, লালমনিরহাট সদর উপজেলার পশ্চিম বড়–য়া গ্রামে স্থাপিত গভীর নলকূপটি বর্তমান পরিস্থিতিতে আমন চারা রোপনের জন্য চালু করতে গিয়ে হঠাৎ বিকল হয়ে পড়ে। বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে স্থানীয় বিএডিসি’র দায়ীত্বশীল কর্মকর্তাদের অবহিত করলে তাদের পছন্দের একজন মেকানিককে ডেকে সহযোগিতা নেয়ার পরামর্শ দেন তারা।

এ গভীর নলকূটির অপারেটর ও এলাকার কৃষকরা অভিযোগে জানান, পাম্প এবং বৈদ্যুতিক মটরের সাথে সংযুক্ত একটি রড (শ্যাফ্ট বলে পরিচিত) এক স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ায় নলকূপটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু চাষীদের অভিযােগে জানা যায়, শ্যাফ্ট নামের রডটির ১০ ফুট মাত্র অংশটি পরিবর্তন না করে বিএডিসি’র দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের যোগসাজসে গভীর নলকূপটির মূল্যবান পাম্পসহ ৪০ ফুট মোটা স্টীলের পাইপ তুলে হেড এবং অন্যান্য মূল্যবান যন্ত্রাংশ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে জানা গেছে। এসমস্ত মূল্যবান যন্ত্রাংশ পাচার করতে চাষীরা বাঁধা প্রদান করলে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সে উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়। এতে সামান্য মেরামতের কাজ না করে গত প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে গভীর নলকূপটি ফেলে রাখা হয়েছে বলে চাষীরা অভিযোগে জানিয়েছেন।

বড়ুয়া গভীর নলকূপের অপারেটর মোঃ শাহজাহান আলী অভিযোগ করে জানান, বিএডিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাহাঙ্গীর আলম-এর পরামর্শ মোতাবেক তাদের পছন্দের মোঃ ফারুক নামের একজন মেকানিককে ডাকলে দুর্নীতিবাজদের যোগসাজসে মাত্র ১০ ফুটের মোটা রডের শ্যাফ্টটি পরিবর্তন করার বদলে গভীর নলকূপের ৪০ ফুট পাইপ, পাম্প এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। তিনি আরও অভিযোগে জানান, নলকূপটির অত্যন্ত মূল্যবান যন্ত্রাংশ খুলে নিয়ে নিম্ন মানের শ্যালো মেশিনের পাইপ, পাম্প দিয়ে কর্মকর্তারা গোজামিল দেয়ার চেষ্টা করে। আমরা এতে বাধা দেয়ায় দুর্নীতিবাজদের সে চেষ্টা সফল হয়নি। আর এ কারনেই দুর্নীতিবাজরা নলকূপটির সামান্য মেরামতের সগযোগিতা না করে তিন সপ্তাহ ধরে টালবাহানা শুরু করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

সংশ্লিষ্ট একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় বিএডিসি’র গুদামে আজ চালিয়ে নেয়ার মত পুরাতন অনেক শ্যফ্ট এবং যন্ত্রাংশ পড়ে থাকলেও সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজদের কৃষক এবং কৃষির স্বার্থ পরিপন্থি ভূমিকার কারনে গভীর নলকূপটি অকেজো হয়ে রয়েছে। এজন্য বর্তমান পরিস্থিতিতেও চাষীরা জরুরী সেচ দিতে পারছে না। এতে শত শত কৃষক আমন চারা রোপন করতে না পারায় মারাত্বক ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে পড়েছেন।

উল্লেখ্য, বৃষ্টিনির্ভর এবং বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চলতি আমন চাষ মৌসুমে লালমনিরহাট সহ পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাতের অভাবে চাষীরা তাদের জমিতে আমন চারা রোপন করতে পারছে না। বর্তমান খরা পরিস্থিতির দরুন এ এলাকার মাঠ-ঘাট, খাল-বিল শুকিয়ে খাঁ খাঁ করছে। এদিকে, চারা রোপনের উপযুক্ত সময় দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়ায় শত শত কৃষক মরিয়া হয়ে বাড়তি খরচ জুগিয়ে সেচ যন্ত্রের মাধমে সেচ দিয়ে রোপন কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন । লালমনিরহাট কৃষি বিভাগের কর্মকর্তরাও এ পরিস্থিতির মুখে সেচ যন্ত্র চালু করে রোপন অব্যহত রাখার জন্য মাঠ পর্যয়ে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করছেন। লালমনিরহাট কৃষি দপ্তর সূত্র জানায়, গত বছর জুলাই এবং আগষ্ট মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত যেখানে ৬০০ মিলিমিটারের বেশী বৃষ্টিপাত হয়েছিল, সেখানে, চলতি মৌসুমের একই সময় লালমনিরহাট জেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ২০০ মিলিমিটারের কিছু বেশী । সংশ্লিষ্ট সুত্র আরও জানায়, জেলায় বর্তমানে ৮০ টির বেশী গভীর নলকূপ এবং ৭ হাজার ৫ শত’র বেশী অগভীর সেচ যন্ত্র চালু করে এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে সম্পুরক সেচ দিয়ে চারা রোপন করা হয়েছে। জেলায় এবারে ৮০ হাজার ৫ শত ৬৩ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে এ অঞ্চলের আমনের আবাদ রীতিমত হুমকিতে পড়বে বলে সংশ্লিষ্ট সকলেই আশংকা করছেন।

লালমনিরহাটে অকেজো হয়ে পড়া বড়ুয়া গ্রামের গভীর নলকূপটি সামান্য মেরামতের গাফিলতির বিষয়ে বিএডিসি’র কর্মকর্তাদের টালবাহানা নিয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ সাফায়াত হোসেন এই জরুরী সময়ে উৎপাদনের স্বার্থে বিএডিসি’র এটুকু সহযোগিতা করা উচিত বলে মন্তব্য করেন। এ ব্যাপারে বিএডিসি’র সেচ বিভাগের লালমনিরহাটস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যান। এদিকে এগভীর নলকূপ সেচ এলাকার শতাধিক কৃষক তাদের সমূহ ক্ষতির জন্য বিএডিসি’র কর্মকর্তাদের দায়ী করেন এবং দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেন।

মন্তব্য করুন


 

Link copied