আর্কাইভ  মঙ্গলবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ● ৩ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   মঙ্গলবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: কুড়িগ্রামে অষ্টমীর স্নান করতে এসে মারা গেলেন পুরোহিত       বাস-পিকআপ সংঘর্ষে ১১ জন নিহত       উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: রংপুরে ৩০ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল        ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ডোমার ও ডিমলায় মনোনয়ন জমা দিলেন ৩৫ জন       নীলফামারীতে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী নারীকে গণধর্ষন -গ্রেপ্তার ৬      

 width=
 

ফাঁসির দাবিতে তারুণ্যের বজ্র আওয়াজে উত্তাল রংপুর

শনিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৩, রাত ১০:২১

ফরহাদুজ্জামান ফারুক, রংপুর: বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেই প্রতিদিন রংপুর মহানগরীর আকাশে বাতাসে প্রকম্পিত হচ্ছে ৭১’র স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা কাদের মোল্লাসহ সকল রাজাকারদের ফাঁসির দাবিতে তারুণ্যের বজ্র আওয়াজ। দিক বিদিক ছড়িয়ে পড়ছে আন্দোলনের দাবানলের শিখা। শনিবার পঞ্চম দিনের মতো রংপুরের রাজপথসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিলো আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে দেয়া যাবত জীবন কারাদণ্ড রায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী আন্দোলনে মুখর। গান, কবিতা আবৃত্তি, নাটকের প্রতিবাদী সংলাপ ছাড়াও মশাল মিছিল. মোমবাতি প্রজ্বলন, কুশপুত্তলিকাদাহ আন্দোলনকারীদের কণ্ঠে বারবার উচ্চারিত হয়েছে ফাঁসি ফাঁসি, ফাঁসি চাই-কাদের মোল্লার ফাঁসি চাই। ফাঁসি ফাঁসি, ফাঁসি চাই-রাজাকারের ফাঁসি চাই। সকাল সাড়ে দশটায় কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিবাদী শিল্পীরা কলেজ ক্যাম্পাস থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে খামার হয়ে পার্কের মোড় যায়। সেখানে থেকে আবার মিছিলটি ক্যাম্পাসে ফিরে এসে শহীদ মিনারে অবস্থান নেয়। মিছিলে কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল এন্ড কলেজ ও কারমাইকেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকরা অংশ নেয়। শহীদ মিনার চত্বরে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বক্তব্য রাখেন। সেখানে কাকাশিস, কানাসাস, স্পন্দন ও বিতর্ক পরিষদের শিল্পীরা জাগরণের গান, বিদ্রোহী কবিতা ও প্রতিবাদী শ্লোগান পরিবেশন করেন। অন্যদিকে বিকেল আড়াইটায় নগরীর জেলা পরিষদ চত্বরের সামনে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারী ছাত্র জনতা। সেখানে গণ জাগরণে উদ্দীপ্ত তরুণরা রং-তুলিতে প্রতিবাদী হয়ে উঠেন। আন্দোলনকারীরা জল রংয়ের আলপনায় তুলে ধরেন ৭১‘র ঘাতক দালালদের বিভিন্ন ব্যঙ্গ চিত্র ও শ্লোগান। এসময় সেখানে নানান বয়সের নানান শ্রেণীর মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখা গেছে। এসময় অনেকেই গণস্বাক্ষরে তাদের তীব্র প্রতিবাদের ভাষা তুলে ধরেন। ১৪ দলের পাবলিক লাইব্রেরীর মাঠে জনসভা শেষ হবার সাথে সাথেই জেলা পরিষদের সামনে ছাত্র জনতার গণ-জমায়েত পুলিশ লাইন স্কুল পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। শাহবাগ থেকে ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সন্ধ্যা ৬টায় কয়েক হাজার মানুষের হাতে জ্বলে ওঠে মোমবাতি। প্রতিবাদী মানুষের মোমবাতির আগুনে পুড়ে ছারখার হোক মুক্তিযুদ্ধের ঘাতক দালালরা এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন গর্জে ওঠা তরুণ সমাজ। পরে সেখান থেকে একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল মশাল ও মোমবাতি জ্বালিয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এসময় শ্লোগানে শ্লোগানে নগরীর বুকে রাজাকারদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী বজ্রপাত শুরু হয়ে। ফাঁসির দাবির তীব্রতা দিনের পর দিন গণ-মানুষের মনের ভাষাই পরিণত হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন আন্দোলনে যোগ দেয়া কারমাইকেল কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নুরুজ্জামান নির্যাস। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী মৌসুমি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আরেকটি ইতিহাস রচিত হবে তারুণ্যের আন্দোলনের সফলতা থেকে। এসময় রংপুর নগরীর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর মেডিকেল কলেজ, কারমাইকেল কলেজ, রংপুর সরকারী কলেজ, প্রাইম মেডিকেল কলেজ, ডেন্টাল মেডিকেল কলেজ, নর্দার্ন মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলনে সামিল হন। আন্দোলনকারীরা নগরীর তিনটি পয়েন্টে রাজাকারদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। মিছিল শেষে পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে জমায়েত হয়ে তারা প্রতিবাদী গানের সুরে রাজাকারদের বিরুদ্ধে হুংকার তোলে। পরে সেখানে রাত সাড়ে দশটায় পর্যন্ত বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীরা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’র কালজয়ী গান, কবিতা ও প্রতিবাদী সংলাপ পরিবেশন করেন।

মন্তব্য করুন


 

Link copied