আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

প্রজাতন্ত্রের কর্মীরা রাজনৈতিক বৈঠক করতে পারেন কিনা ?

শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৪, দুপুর ১০:৩৭

দিলরুবা সরমিন

এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হলো, যে সব সরকারী কর্মকর্তারা এই বৈঠক করেছেন তাঁরা সকলেই নাকি পদবঞ্চিত, সুবিধা বঞ্চিত। তাঁরা কেউই কিন্তু দেশ ও জাতির কোন মঙ্গল এর লক্ষ্যে এই সভায় যোগ দেন নি বা দেশ ও জাতি আজ কেমন আছে বা মানুষের দূর্ভোগ কমানোর জন্য তাঁরা কী করতে চান বা মানব কল্যানে তাঁদের পদক্ষেপ সম্পর্কে তাঁরা আলোচনা করেন নি । এখানে প্রথম বিষয়টি হলো, প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসাবে তাঁরা কোন রাজনৈতিক দলের প্রধান এর সাথে বা নূন্যতম হিসাবে বললে কোন রাজনৈতিক দলের কারো সাথেই বৈঠক করতে পারেন কিনা ? বাংলাদেশ সংবিধান এবং সরকারী কর্মচারী বিধিমালা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে সেই অধিকার দিয়েছে কিনা এটি সর্বাধিক বিবেচ্য বিষয়। দ্বিতীয়ত এই সকল সরকারী কর্মকর্তারা তাঁদের নিজস্ব পদমর্যাদা, সুযোগ সুবিধা, আরাম আয়েশ বঞ্চিত হওয়ার বিষয় নিয়েই চিন্তিত বিধায় সেই সকল নিজস্ব ও ব্যক্তি স্বার্থ হাশিলের জন্যই বেগম খালেদা জিয়ার সাথে বৈঠক করেছেন। কোন জাতীয় স্বার্থে নয় । বেগম খালেদা জিয়া পর পর কয়েকবার প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী পাশাপাশি বাংলাদেশের একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেত্রী হওয়ার পরও গুটিকয় স্বার্থপর সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপ সচিব এর সাথে মাঝ রাতে গোপন বৈঠক করে কতটুকু প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন সেটিও ভাবার বিষয়। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ও নির্লজ্জ বিষয় হলো , গণ মাধ্যমে এই সংবাদ খুবই গুরুত্বের সাথে সচিত্র প্রকাশের পরও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রথম শ্রেনীর নেতারা খবরটিকে বেমালুম মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাহলে সত্যবাদী কে ? কারা ? বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে যদি এই সব কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চাকুরীচূতি বা দমন- পীড়নের খর্গ নেমে আসার সম্ভাবনা তাঁরা অনুভব করেই থাকেন সেই ক্ষেত্রে তাঁদের নিজস্ব কোন দাপ্তরিক দোষ ক্রুটি  যদি না থাকে ক্ষতি কী দাপ্তরিকভাবেই সেই গুলি মোকাবিলা করার ? ক্ষমতার বাইরে বসবাসকারীনি বেগম খালেদা জিয়া কী করবেন ? বা তাঁকেই বা কেন এই বিপাকে ফেলা ? সরকার তদন্ত প্রক্রিয়ার বিষয়টি শুরু করবেন এই রবিবার থেকে,  জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী এমনটি  জানিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সাথেই এবং নিরপেক্ষভাবেই দেখা ভাল। সরকারী কর্মকর্তা- কর্মচারীরা আমাদের কষ্টের টাকায় বেতন - ভাতা - সুযোগ - সুবিধা ভোগ করে থাকেন। তাঁরা যদি এমন পজিশনে বসে কেবল তাঁদের স্বার্থ সিদ্ধির কথাই বিবেচনায় আনেন তাহলে তো তাঁদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় এ্যকশনের পাশাপাশি প্রচলিত আইনেও বিচার হতে পারে। কারন তাঁরা কেবল প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী নন তাঁরা বাংলাদেশী বাঙ্গালী এবং সুবিধাভোগী জনগোষ্ঠি। এই সব সরকারী আমলারা (সকলেই নয়) যুগে যুগে আমাদেরকে নানাভাবে হেনস্তা করেই চলেছে। অহেতুক গসিপ করে সময় কাটাবে অথচ জন গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয়ের ফাইল দ্রুত ছেড়ে দেয়া বা কোন উন্নয়নমূলক কাজ শেষ করার জন্য সঠিক কর্মকৌশল ও বাজেট এর পূর্ণ বাস্তবায়ন এদের দ্বারা কতটুকু হয় সেটি আমাদের দেখা আছে। আশ্চর্যজনকভাবে  দাতা সংস্থার অগাধ বিশ্বাস এই সব আমলা নির্ভর উন্নয়নে। যার ফলশ্রুতিতে বলা যায় বাংলাদেশে বহু বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ( কেন্দ্রীয় বা আঞ্চলিক, স্থানীয় ) মাঝপথেই মুখ থুবড়ে পড়ে গিয়েছে। আর এন জি ও ব্যুরো নামের যে যন্ত্র আমাদের ঘাড়ের উপর সিন্দবাদের বুড়োর মত চেপে বসেছে সেটিও এই আমলাদের অবদান। এরা সবাই ােটামোটি ব্যস্ত কে কত বার বিদেশ ভ্রমণ করবে, কে কোন পাঁচতারকা হোটেলে সভা অলংকৃত করবে, কে সরকারী খরচে হজ্জ যাত্রী হবে,  কার ছেলে মেয়েকে বিদেশে সরকারী খরচে পড়াশুনা করতে পাঠাবে এই সব জটিল এবং নিজ স্বার্থ নির্ভর বিষয় নিয়ে। প্রজাতন্ত্রের কাজ এরা করছে কোথায় ? এদের রাজনীতি করার কথা না থাকলেও নির্ভয়ে নির্বিঘেœ প্রজাতন্ত্রের ঠান্ডা ঘরে বসে এরা যে দিনের পর দিন কেবল রাজনীতিই করে যাচ্ছেন এটি কি সরকার এতদিন জানতেন না ? আসলে সবাই সব কিছুই জানেন । জানি না কেবল আমরা যারা সাধারন জনগন । যারা সরকার নির্ধারিত নিয়মিত সকল প্রকার কর পরিশোধ করি আর সেই করের টাকায় যারা ঠান্ডা গাড়ীতে বসে আমাদেরকে ধ্বংস করার পাঁয়তাড়া করেন। ক্ষমতায় যেই থাকুক সেই এই আমলাগুলির খপ্পরে পড়ে বারংবার। ১৯৯০ এ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে জনতার মঞ্চের উত্থান এর সাথে বর্তমান অবস্থার তুলনা করে সরকারী কর্মকর্তাদের নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য কোন অবস্থাতেই কারো সাথেই গোপন বৈঠক করা আমাদের কাম্য নয়।  যেমন টি কাংখিত নয় প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে মেধাবী কোন কর্মকর্তাকেও তাঁর নিজ অবস্থান চ্যূত করা। প্রজাতন্ত্রে এসব কিছুই চলতে পারে না। অথচ এই সবই ঘটছে বাংলাদেশে।  বাংলাদেশের মানুষের ভোটের চেয়ে যেমন ক্ষমতাশালী হতে পারে না কোন বন্দকের নল। নাম প্রকাশ না করে এক যুগ্ম সচিব বলেছেন যে, ”অফিস সময়ের বাইরে তিনি সরকারী কর্মকর্তা নন তাই যে কোন স্থানে যেতে পারেন। ” আসলেই কী ? তাহলে  বিকাল ৫টার পর সরকারী বাড়ী , গাড়ী ছেড়ে আম জনতার কাতারে আসুন। আমরাও খুশী হবো আর আপনিও দৃষ্টান্ত হবেন। তিনি আরো উদাহরন টেনেছেন শাহবাগ আন্দোলনের বিষয়ে। এই বিষয়ে লক্ষ্যণীয় দিক হলো, এই যুগ্ম সচিব বোধহয় জানেন ই না শাহবাগ আন্দোলন কোন ক্ষমতার পদবঞ্চিতদের আন্দোলন ছিল না। ছিল মানবতাবিরোধীদেরকে সঠিক বিচারের দাবীতে আন্দোলন। আসলে তুলনা করতে হয় কার সাথে,  কোন বিষয়ে সেটিও এই সব আমলাদের জানা নাই অথবা জানলেও ইচ্ছা করেই আমাদেরকে বোকা বানাবার চেষ্টা করেই যাচ্ছেন।  সরকারী চাকুরী বিধি ভঙ্গ করবেন আর উদাহরণ টানবেন উল্টা পাল্টা এটি তো হতে পারে না। আমরা বেকায়দায় আছি। যেমন টি সকল সরকারের সময়ে থাকি। প্রজাতন্ত্রের নিয়ম ভঙ্গকারীদেরকে বিভাগীয় সাজার দিয়েই সরকার খালাশ। এটি এখন পরিবর্তন করা দরকার। তাহলে ভবিষ্যতে যেই ক্ষমতায় আসুক তাঁর প্রতি জনগণের আস্থা থাকবে অটুট। প্রচলিত আইনে বিচার করার ব্যবস্থা করা দরকার। তাহলেই বুঝবে যে, সরকারী অফিসে বসে কেবল নিজ স্বার্থ সিদ্ধির জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ ফাইল এর কপি সরকারের বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়ে গণ প্রজাতন্ত্রের বাংলাদেশের  জনগণের কাছেই তাদের জবাবদিহিতা । এখানে শেখ হাসিনা বা রওশন এরশাদ বা খালেদা জিয়া কোন টার্গেট নন । দেশের মানুষের কাছে এই সব আমলাদের জবাব দিতেই হবে। দেশকে অস্থির  করার কোন ষড়যন্ত্রই আর যেই হোক প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা করতে পারেন না। ১/১১ এমনি এমনি ই আসে নি । সেদিনও এই সব গুটি কয় স্বার্থপর আমলারাই সব কিছুর গুরু ছিলেন।  বাংলাদেশ সংবিধান লঙ্ঘন এর দায় এবং সরকারী কর্মচারী বিধিমালা ভঙ্গেও দায় এরা কোন মতেই এড়াতে পারেন না।

লেখিকা: আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী

মন্তব্য করুন


 

Link copied