সংঘর্ষে বেঁচে যাওয়া অভিবাসীরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, অবস্থা ছিল ভয়াবহ। আহত তিনজন পৃথকভাবে জানিয়েছেন, লোকজনকে এলোপাথাড়ি ছুরিকাঘাত, রশি দিয়ে ঝোঁলানো ও নৌযানের ওপর থেকে ফেলে দেওয়া ছিল নিত্যদিনের ঘটনা।
বাংলাদেশ ও মিয়ানমার থেকে মালয়েশিয়াগামী সাত শতাধিক অভিবাসীকে শুক্রবার সকালে সুমাত্রা দ্বীপের আচেহ উপকূল থেকে উদ্ধার করে ইন্দোনেশীয় জেলেরা। তখন ওই নৌকাগুলো ডুবে যাচ্ছিল। ইন্দোনেশিয়া সরকার এখন তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে।
শনিবার বিবিসির মার্টিন প্যাটিনস ইন্দোনেশিয়ার বন্দরনগরী লাঙসায় অস্থায়ী ক্যাম্পে রাখা ওই সব অভিবাসীদের সঙ্গে কথা বলে এ ভয়াবহ তথ্য পেয়েছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, এখনো হাজারো অভিবাসী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জলসীমায় ভাসছে। কোনো দেশ তাদের নিজেদের জলসীমায় প্রবেশে অনুমিত দিচ্ছে না। তাদের কাছে খারাপ ও বিশুদ্ধ পানি ফুরিয়ে আসছে।
বেঁচে যাওয়া অভিবাসীরা বলেছেন, ‘সমুদ্রে যখন খাবার শেষ হয়ে যাচ্ছিল, তখন বাকি খাবার নেওয়ার জন্য এরকম তাদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। কেউ কেউ একে অপরকে ছুরিকাঘাত করে। আবার অনেকে নৌযান থেকে সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। মানব পাচারকারীরা অনেকে শাস্তি হিসেবে নৌকার সঙ্গে রশি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে।খাবারের অভাবে অনেকে মারা যান। তাদের লাশও সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়।’
অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে সমুদ্রপথে বিদেশ যাওয়া ঝুঁকি নেন সেদেশে জনগণ। আর মিয়ানমার সরকারের অত্যাধিক দমননীতির কারণে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার জন্য জীবন বাজি রেখে সমুদ্রে বেরিয়ে পড়েন দেশটির রোহিঙ্গা মুসলিমরা। তাদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।
জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অভিবাসীদের জন্য সীমান্ত উন্মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশী দেশগুলো সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এমনকি মিয়ানমার স্পষ্ট করে ঘোষণা দিয়েছে, রোহিঙ্গাদের তারা কখনো গ্রহণ করবে না। থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য অভিবাসী সম্মেলনেও যোগ দেবে না বলে জানিয়েছে দেশটি।