আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

গাইবান্ধায় গ্রেপ্তারের ভয়ে মাদ্রাসায় যাচ্ছেন না অনেক শিক্ষক

বুধবার, ২৭ মার্চ ২০১৩, রাত ১২:৩৫

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, উপজেলায় ৪৯টি মাদ্রাসা, ১৩টি কলেজ ও ৮৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন দুই হাজার ৬২৫ জন। এর মধ্যে মাদ্রাসাশিক্ষক রয়েছেন ৯৯৫ জন। সহিংসতার ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানায় ৩০টি মামলা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে ৫৯ হাজার ৮৪৫ জন। এর মধ্যে এক হাজার ৩৬৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা, মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয় সূত্রে ও সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুই শতাধিক শিক্ষক ২৮ ফেব্রুয়ারির সহিংস ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তারের ভয়ে কর্মস্থলে যাচ্ছেন না। পলাতক থাকা এসব শিক্ষক সহিংস ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি। উপজেলার ভুরারঘাট এমইউ সিনিয়র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কাজী সাখাওয়াত হোসেন ও সহকারী শিক্ষক শামছুল হক ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। হঠাৎ একদিন মাদ্রাসায় এসে হাজিরা খাতায় কয়েক দিনের উপস্থিতির স্বাক্ষর দিচ্ছেন তাঁরা। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবদুল হান্নান বলেন, ‘ওই দুই শিক্ষককে মামলার আসামি করা হয়েছে বলে শুনেছি। অনুপস্থিতির বিষয়ে কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ বামনডাঙ্গা আল-হিকমা একাডেমি দাখিল মাদ্রাসার সুপার জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার পর থেকে পলাতক। ২৮ ফেব্রুয়ারি বামনডাঙ্গা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে হামলা ও পুলিশ হত্যা মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। ইমামগঞ্জ ফাজিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হুমায়ুন কবীর, রুহুল কুদ্দুছ ও মোজামেঞ্চল হক সহিংস ঘটনার পর থেকে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত রয়েছেন। আজেপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবদুল হাকিম, সুন্দরগঞ্জ সদর দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল হোসেন, সহকারী সুপার ও পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম, খানাবাড়ি দাখিল মাদ্রাসার সুপার ইয়াকুব আলী, পঞ্চানন দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবেদ আলী, সীচা শুভজান আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আশরাফুল আলম ঘটনার পর থেকে কর্মস্থলে যাচ্ছেন না। ইমামগঞ্জ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাসুদার রহমান বলেন, শিক্ষকদের অনুপস্থিতির কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি পরিচালনা কমিটিকে জানানো হয়েছে। জামায়াত-শিবিরের সহিংসতার ঘটনায় শুধু মাদ্রাসার শিক্ষকই নন, জামায়াত-সমর্থক অনেক মাধ্যমিক এবং কলেজের শিক্ষকও কর্মস্থলে যাচ্ছেন না। উপজেলার বেলকা ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ছামিউল ইসলাম, প্রভাষক ও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাজেদুর রহমান, শোভাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সহকারী সেক্রেটারি আতাউর রহমানসহ বিভিন্ন কলেজ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা পলাতক রয়েছেন। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আহসান হাবীব বলেন, শিক্ষকদের অনুপস্থিতির বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘জামায়াত-শিবিরের সহিংস ঘটনার সঙ্গে মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জড়িত রয়েছে কি না, সেটা আমার জানা নেই। তবে এ ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত না থাকার জন্য মাদ্রাসার শিক্ষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’ অনুসন্ধানে জানা গেছে, গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসন থেকে ২০০১ সালে জামায়াতের প্রার্থী আবদুল আজিজ সাংসদ নির্বাচিত হন। জোট সরকারের আমলে তিনি উপজেলায় বেশ কিছু মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি করাসহ মাদ্রাসাগুলোতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ায় ভূমিকা রাখেন তিনি। এ কারণে সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় মাদ্রাসার সংখ্যা এবং শিক্ষকদের মধ্যে জামায়াতের প্রভাব বেশি। জানতে চাইলে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার (এসপি) এ কে এম নাহিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় মাদ্রাসার অধিকাংশ শিক্ষক জামায়াতের সক্রিয় নেতা-কর্মী। ২৮ ফেব্রুয়ারি তাঁরা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সহিংসতায় অংশ নিতে বাধ্য করেন।

তিনি বলেন, সুন্দরগঞ্জ আসনের জামায়াতের সাবেক সাংসদ আবদুল আজিজের ইন্ধনেই এই সহিংস ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

মন্তব্য করুন


 

Link copied