আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

সাফল্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকা ব্যর্থতার গল্প

বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫, বিকাল ০৬:০৫

প্রভাষ আমিন

আজ যখন বন্দুকের নলটা নিজেদের দিকে ফিরে গেছে, তখনই হইচই, মানবাধিকার প্রশ্নে তোলপাড়। র‌্যাব এবং ক্রসফায়ারের প্রতিষ্ঠাতা খালেদা জিয়া অনেকদিন ধরেই ক্রসফায়ারের বিপক্ষে সোচ্চার, এমনকি দাবি তুলেছেন র‌্যাব বিলুপ্তিরও। ক্রসফায়ার যদি খারাপ হয়, তাহলে সবসময়ই খারাপ। প্রতিপক্ষের লোক মারা গেলে ক্রসফায়ার ভালো, নিজেদের লোক মারা গেলে ক্রসফায়ার খারাপÑ এমন দ্বৈত অবস্থান দুঃখজনক। আসলে সম্প্রতি এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারি দলের চার নেতার ক্রসফায়ারে মৃত্যুর পরই দলে তৈরি হয় দ্বৈত অবস্থানের।

ক্রসফায়ারের পক্ষের সবকটি যুক্তিই আমি জানি। সন্ত্রাস দমনে সবচেয়ে কার্যকরী মহৌষধ ক্রসফায়ার। তাৎক্ষণিকভাবে সন্ত্রাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে এর কোনো বিকল্প নেই। জাস্টিস ডিলেইড, জাস্টিস ডিনাইডÑ এই তত্ত্বের পাল্টা সবচেয়ে কার্যকর তত্ত্ব ক্রসফায়ার। এটা ঠিক জনবহুল বাংলাদেশে লাখ লাখ মামলা বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। তাই সন্ত্রাসীদের বিচারও আটকে থাকে। বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে আদালতের বারান্দায় বারান্দায়। তার চেয়ে বড় কথা হলো, চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ সাক্ষ্য দিতে চান না। তাই তাদের ধরা হলেও শিগগিরই তারা জামিনে ছাড়া পেয়ে আবার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে।

সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো, ক্রসফায়ারের এক ধরনের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা আছে। আপনি যে কোনো সময় জনমত যাচাই করলে দেখবেন, ক্রসফায়ারের পক্ষে ভোট বেশি। আর এই জনমতের জোরে সবসময়ই সরকার এই অস্ত্রটির বহুল অপব্যবহার করে আসছে। বিএনপি আমলে প্রথমে অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে এবং পরে র‌্যাবের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের সূচনা। শুরুতেই এটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়ে যায়। ফলে এর বিপক্ষে কোনো ভয়েস ছিল না। তখনকার বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা ক্রসফায়ারের বিপক্ষে বলতে চাইলে দলের নেতারা তাকে বোঝান, ক্রসফায়ার খুব জনপ্রিয়, এর বিরুদ্ধে বলা ঠিক হবে না। কিন্তু শেখ হাসিনা কারো কথায় কান দেননি। তিনি ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে বলেছেন। আমি অপেক্ষায় ছিলাম, কোনো একদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে বন্ধ হবে ক্রসফায়ার। কিন্তু বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলাম, আওয়ামী লীগ আমলেও ক্রসফায়ার বন্ধ হয়নি। খুব সমালোচনা হলে একটু কমেছে। কিন্তু একেবারে বন্ধ হয়নি কখনোই। আর দেশি-বিদেশি সমালোচনার স্রোত ক্রসফায়ার কমলেই বেড়ে যায় গুম। তার মানে বিচার ছাড়া মানুষ হত্যা বন্ধ হয়নি কখনোই। আমি বরাবরই ক্রসফায়ারের নামে হত্যার বিরুদ্ধে। কিন্তু একটা সময় ছিল যখন ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে কোনো লেখা কেউ ছাপত না। তাই আমার একাধিক লেখা আলোর মুখ দেখেনি।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ক্রসফায়ার বন্ধ না হলেও ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে লেখার পরিবেশ তৈরি হয়। তারপর থেকে আমি বিরামহীনভাবে ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে লিখে গেছি। অল্প যে কজন আমার লেখা পড়েন, তারা নিশ্চয়ই বিরক্ত হচ্ছেন। আমি বারবার একই কথা লিখছি। কিন্তু ক্রসফায়ার বন্ধ না হলে লেখাও বন্ধ করা ঠিক হবে না। বন্ধ হোক আর না হোক, ন্যায্য কথাটা লিখতেই হবে। ক্রসফায়ার নিয়ে শুধু রাজনীতিবিদদের অবস্থানই দ্বৈত নয়। এমনকি সুশীল সমাজেও রয়েছে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড। কোনো কোনো ক্রসফায়ারকে প্রয়োজনীয় ভেবে চুপ থাকেন অনেকেই। শিশু হত্যাকারীকে ক্রসফায়ারে দেওয়া হয়েছে, তাই এখন বিরুদ্ধে বলা যাবে না। ছাত্রলীগকে ক্রসফায়ারে দেওয়া হয়েছে, তাই এখন চুপ করে থাকতে হবে। এমন দ্বৈত অবস্থান ঠিক নয়। আমার কথা পরিষ্কার, ক্রসফায়ার অন্যায়। তাই প্রতিটি ক্রসফায়ারই অন্যায়। আমরা তো কখনো নিজামীর ক্রসফায়ার দাবি করি না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে তো বঙ্গবন্ধুর খুনিদের ক্রসফায়ারে দেয়নি। আত্মস্বীকৃত খুনি, রাষ্ট্রের জন্মের যারা বিরোধিতা করেছিল; তাদের বিচার হবে সাধারণ আইনে, বছরের পর বছর ধরে; আর খুচরা সন্ত্রাসীদের ধরে সঙ্গে সঙ্গে মেরে ফেলা হবে; একই দেশে এমন দ্বৈত ব্যবস্থা চলতে পারে না, চলা উচিত নয়।

আমি বরাবরই ক্রসফায়ারের বিরুদ্ধে। কারণ আমি বিশ্বাস করি, যা দেওয়ার ক্ষমতা নেই, তা কেড়ে নেওয়ার অধিকারও কারো নেই। বিজ্ঞান অনেককিছু আবিষ্কার করেছে। সবকিছুই এখন হাতের মুঠোয়। কিন্তু বিজ্ঞান এখনো মানুষকে জীবন দেওয়ার কোনো কৌশল আবিষ্কার করতে পারেনি। প্রতিটি মানুষের জীবনই স্রষ্টার এক অপার দান। প্রতিটি মানুষের জীবনই অমূল্য, মানে যা মূল্য দিয়ে কেনা যায় না। তাই তো পৃথিবীর অনেক দেশে মৃত্যুদণ্ডের বিধানই নেই। যেসব দেশে আছে, যেমন বাংলাদেশ, সেসব দেশেও মৃত্যুদ- কার্যকরের আগে আইনের অনেক ধাপ পেরুতে হয়। নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড হলে হাইকোর্টে আপিল করা যায়। হাইকোর্ট রায় বহাল রাখলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে যাওয়া যায়। আপিল বিভাগের রায়েরও রিভিও চাওয়া যায়। রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া যায়। সবকটি ধাপে মৃত্যুদ- বহাল থাকলেও রাষ্ট্রপতি চাইলে কাউকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং যুদ্ধাপরাধীরা আইনের এই প্রটেকশন পেয়েছেন। কোনো আসামি পলাতক থাকলে রাষ্ট্র তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করে। এতগুলো ধাপ পার হতে হয়, কারণ রাষ্ট্র চায় যেন কোনো নির্দোষ বা মৃত্যুদ- পাওয়ার মতো নন, এমন কেউ যেন ফাঁসির দড়িতে না ঝুলেন। কিন্তু এখন সন্ত্রাসীদের ধরে র‌্যাব বা পুলিশের কারো সিদ্ধান্তেই ক্রসফায়ারের নামে হত্যা করা হয়। চাঞ্চল্যকর মামলার বিচারের জন্য দেশে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা আছে। কিন্তু ক্রসফায়ার হলো দ্রুততম বিচার। ধরো আর মারো। মারার পর ক্রসফায়ারের যুক্তি হিসেবে নিহতের নামে মামলার লম্বা ফিরিস্তি দেওয়া হয়। যত বেশি মামলা, ক্রসফায়ার যেন তত বেশি জায়েজ। আমি ধরে নিচ্ছি মামলাগুলো সব সত্যি এবং যিনি মারা যাচ্ছেন তিনি সত্যি খারাপ এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে মামলাগুলো ছিল, সাধারণ আইনে বিচার হলে কি তার ফাঁসি হতো, নাকি যাবজ্জীবন হতো, না ৭ বছরের জেল হতো? ক্রসফায়ারের ক্ষেত্রে এসবের কোনো বালাই নেই। লোক খারাপ হলেই যেন তার বেঁচে থাকার অধিকার নেই।

সব আমলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইজিপি বা র‌্যাব মহাপরিচালক ক্রসফায়ারের যুক্তি হিসেবে আত্মরক্ষার অধিকারকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেন। আমিও মানি আত্মরক্ষার অধিকার যে কারো আছে, র‌্যাব-পুলিশের তা আরো বেশি করে আছে। আমাদের জীবন শান্তির, স্বস্তির, নিরাপদ করার জন্যই র‌্যাব-পুলিশের হাতে অস্ত্র দেওয়া হয়। প্রয়োজনে সে অস্ত্র তারা ব্যবহারও করতে পারেন। কিন্তু বারবার অস্ত্র ব্যবহারের যুক্তি হিসেবে যে আষাঢ়ে গল্প বলা হয় তা কেউ বিশ্বাস করে না। র‌্যাব প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত কমবেশি ২ হাজার মানুষ ক্রসফায়ারে মারা গেছেন। এসব ঘটনায় একবারও র‌্যাব বা পুলিশ সত্যি সত্যি আত্মরক্ষার জন্য গুলি করেছে কি না সন্দেহ। ক্রসফায়ারের গল্পটা এখন বাংলাদেশের শিশুরাও জানে। আসামিকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তার সহযোগীরা র‌্যাব বা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তখন দুই পক্ষে গোলাগুলি হয় এবং শুধু র‌্যাব বা পুলিশের হাতে থাকা লোকটিই মারা যায়। এমন ঘটনা যে ঘটতে পারে না বা অতীতে ঘটেনি, তা আমি বলছি না। কিন্তু ক্রসফায়ারের এই গল্পটি এতই ক্লিশে যে এখন সত্যি সত্যি র‌্যাব বা পুলিশের ওপর হামলা হলেও তা কেউ বিশ্বাস করবে না।

সাধারণ আইন অনুযায়ী আপনি যখন কাউকে গ্রেপ্তার করবেন, তার নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনার। আন্তর্জাতিক যুদ্ধেও এই নিয়ম মানা হয়। কিন্তু প্রতিটি ক্রসফায়ারেই র‌্যাব বা পুলিশ নিজেদের হেফাজতে থাকা মানুষটির নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়। তার মানে প্রতিটি ক্রসফায়ার র‌্যাব বা পুলিশের একেকটি ব্যর্থতার গল্প। একবার দুবার যদি আপনি অস্ত্র উদ্ধারে গিয়ে হেফাজতে থাকা আসামিকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হন, সাধারণ আইনে বলে, আপনাকে এই দায়িত্ব আর দেওয়া হবে না। ব্যর্থতার জন্য আপনাকে জবাবদিহি করতে হবে। কিন্তু র‌্যাব-পুলিশের এই ব্যর্থতাতেই যেন লুকিয়ে আছে সেই বাহিনীর সাফল্য। ব্যর্থতা ছাড়াও র‌্যাব-পুলিশ প্রতিটি ক্রসফায়ারে আরো দুটি অপরাধ করে। প্রথমত ঠাণ্ডা মাথায় খুন, দ্বিতীয়ত প্রথম অপরাধটি ঢাকার জন্য মিথ্যা বলা। এই যে ২ হাজার ক্রসফায়ার, একটারও কি কোনো তদন্ত হয়েছে? কেউ কি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন? কোনো ক্রসফায়ার নিয়ে বেশি হইচই হলে, নামকাওয়াস্তে তদন্ত হয় বটে। কিন্তু পরে সেই তদন্ত হারিয়ে যায় কৃষ্ণ গহ্বরে।

তবে ক্রসফায়ারের জন্য আমি কখনোই র‌্যাব বা পুলিশকে দায়ী করি না। কারণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া তাদের পক্ষে দিনের পর দিন এ অন্যায় চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

সরকার যখন সিদ্ধান্ত নেয় তখন ক্রসফায়ার কমে, যখন সিদ্ধান্ত নেয় তখন গুম বাড়ে, যখন সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্রলীগ নেতাও মরে যায়। হাজারীবাগের ছাত্রলীগ নেতা আরজু হত্যার পর অনেক হইচই হলে র‌্যাব ২-এর পরিচালক লে. কর্নেল মাসুদ রানাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন? তার অপরাধটা কি? মাসুদ রানা কি নিজের সিদ্ধান্তে আরজুকে খুন করেছেন? তিনি নিশ্চয়ই শুধু আদেশ পালন করেছেন। ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদের ক্রসফায়ারে হত্যাকে অনেকে সরকারের দৃঢ়তা হিসেবে দেখছেন। অনেকে বলছেন, এই সরকার এতই কড়া, কাউকেই ছাড়ে না। কিন্তু হাতে অস্ত্র থাকলেই তা দিয়ে খুন করার মধ্যে কোনো কৃতিত্ব নেই। পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাবের অনেক কৃতিত্ব আছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে তাদের অবদান অনস্বীকার্য। অনেক জটিল মামলার রহস্য উদঘাটন করে চমক দেখিয়েছে র‌্যাব। তবে আমি র‌্যাবের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব মানি, দেশে গজিয়ে ওঠা জঙ্গি গোষ্ঠীর নেটওয়ার্ক তছনছ করে দেওয়া। কিন্তু তাদের অনেক কৃতিত্ব ম্লান হয়ে যায় ক্রসফায়ারের গ্লানিতে। ক্রসফায়ারকে অনেকে সাফল্য বা কৃতিত্ব হিসেবে বিবেচনা করেন। কিন্তু ক্রসফায়ার আসলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দলিল।

ক্রসফায়ার হলো আইনের শাসনের অনুপস্থিতির সূচক। সুশাসনের সঙ্গে ক্রসফায়ার সমান্তরাল নয়। যত বেশি ক্রসফায়ার, মানতে হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তত খারাপ। মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার তত্ত্বে আমি কখনোই বিশ্বাসী নই। সন্ত্রাসী, ছাত্রলীগ-যুবলীগকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, মেরে ফেলা কোনো সমাধান নয়। আরেকটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো, আপনি যখন কাউকে একটা অন্যায় করার অনুমতি দেবেন, সেই অনুমতি ব্যবহার করে সে আরো অনেক অন্যায় করে বসবে। তখন তাকে কিছু বলার নৈতিক জোর আপনার থাকবে না। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনা তার উদাহরণ হয়ে থাকবে। এমন কত সত্যিকারের নির্দোষ মানুষও ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছেন, কে জানে।

সম্প্রতি বিবিসি সংলাপে এক দর্শকের প্রশ্নের জবাবে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ক্রসফায়ারের পক্ষে যুক্তি দিতে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, আপনারা কেউ কি বলতে পারবেন, এ পর্যন্ত কোনো সন্ত্রাসীর বিচার আইনের মাধ্যমে করা সম্ভব হয়েছে? মাননীয় মন্ত্রীর সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত। আইনি প্রক্রিয়ায় সন্ত্রাসীদের বিচার করা সম্ভব নয়। আইন আদালত নয়, সন্ত্রাস দমনে ক্রসফায়ারই একমাত্র সমাধান। তাই যদি হয়, তাহলে আইন আদালত, বিচার ব্যবস্থা রেখে লাভ কি, সব বন্ধ করে দেওয়া হোক। আপনারাও আইন প্রণয়ন বাদ দিয়ে র‌্যাবে যোগ দিন। আর সংসদ ভবনকে র‌্যাবের সদর দপ্তর বানিয়ে ফেললেই সব ল্যাঠা চুকে যায়।

মন্তব্য করুন


 

Link copied