আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

মাও সে তুং

বুধবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫, সকাল ০৭:৫৩

ডেস্ক : ১৯৪৯ সালে সমাজতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৭৬ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মাও সে তুং চীন শাসন করেন। এ বিপ্লবী মার্কসবাদী তাত্ত্বিক ও রাজনৈতিক নেতা কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। মার্কসবাদ-লেনিনবাদে তার তাত্ত্বিক অবদান, সমর কৌশল ও তার কমিউনিজমের নীতি একত্রে মাওবাদ নামে পরিচিত। তিনি সারাবিশ্বের অসংখ্য বিপ্লবীর অনুপ্রেরণা। মাও ১৯৭৬ সালের এ দিনে (৯ সেপ্টেম্বর) মারা যান।

চীনের হুনান প্রদেশের শাওশান গ্রামে ১৮৯৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর মাও সে তুং জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মাও জেন সেং ছিলেন ধনাঢ্য কৃষক। মা ওয়েন চি মেই ছিলেন খুবই ধর্মপরায়ণ। ওয়েন চেয়েছিলেন, ছেলেও যেন ধর্মের পথে বিকশিত হন। আর সে কারণেই মাওকে পারিবারিক ও ধর্মীয় কঠোর অনুশাসনের মধ্য দিয়ে বড় হতে হয়েছে।

১৯০১ সালে আট বছর বয়সে মাও গ্রামের পাঠশালায় ভর্তি হন। ১৯০৬ সালে মাওয়ের গ্রামের পড়াশোনা শেষ করেন। এর পর ভর্তি হন চ্যাংশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। ওখানকার লাইব্রেরিতে তিনি এ্যাডাম স্মিথের ‘দ্য ওয়েলথ অব নেশনস’সহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ বই পড়ার সুযোগ পান।

১৯১১ সালে মাওয়ের বয়স যখন ১৮, তখন চীনের ক্ষয়প্রাপ্ত চিং রাজবংশের বিরুদ্ধে বিপ্লব সংগঠিত হতে শুরু করে। সপ্তদশ শতাব্দী থেকে সমগ্র চীন শাসন করে আসা সেই রাজবংশ ১৯১১ সালের বিপ্লবের মুখে আর টিকে থাকতে পারেনি। বিপ্লব শুরুর অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই পতন ঘটে যায় তাদের। তরুণ বয়সেই মাও রাজনৈতিক চিন্তাধারার ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে বামপন্থী রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণার প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করেন। মার্কসবাদের প্রতি প্রবলমাত্রায় আকর্ষণ ছিল তার। ১৯২০ সালের দিকে তিনি একজন মার্কসবাদী হিসেবে চীনা রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেন। ১৯২১ সালে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না প্রতিষ্ঠায় তার উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল। ১৯৩৫ সালে মাও কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতার শীর্ষে পৌঁছে যান, তারপর থেকে রাজনীতির মাঠে পার্টির ক্ষমতা ও কার্যকর ভূমিকা বাড়তে শুরু করে এক অদম্য গতিতে।

১৯৪৭ সালের মধ্যে চিয়াং কাই শেকের নেতৃত্বাধীন চীনের জাতীয়তাবাদী সরকারের বিরুদ্ধে সার্বিক সংগ্রামের প্রস্তুত নিতে শুরু করে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়না। দুর্দান্ত প্রতাপের সঙ্গে সংগ্রাম পরিচালনা করে মাও সে তুং ১৯৪৯ সালে কমিউনিস্টদের নিয়ে এলেন চীনের মাটিতে। চীনের শাসন ব্যবস্থায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ পায় দলটি।

মাও যখন চীনের ক্ষমতায় আসেন তখন সমগ্র বিশ্বে চীনের পরিচয় ছিল একটি অনুন্নত ও দারিদ্র্যপীড়িত দেশ হিসেবে। চীনকে নতুনভাবে মাও সে তুং নির্মাণ করতে শুরু করলেন সমাজতন্ত্রের আদর্শে। যদিও তিনি রাজনৈতিকভাবে কঠোর একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেন। কিন্তু তারপরও চীন উত্তরণের পথে হাঁটতে শুরু করে। তিনি সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিপ্লব সংগঠিত করার পাশাপাশি সামাজিক বিপ্লব ঘটানোরও চেষ্টা করেছিলেন।

কিন্তু চীনের উন্নয়নের ব্যাপারে মাওয়ের সব সিদ্ধান্তই সফলভাবে কার্যকর হয়নি। ১৯৫৮ সালের দিকে মাও চীনে গ্রেট লেপ ফরওয়ার্ড কর্মসূচি চালু করেছিলেন। কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিকে দ্রুত শিল্পভিত্তিক অর্থনীতির রূপান্তরের পরিকল্পনাটি সফল হয়নি। ১৯৬৬ সালের দিকে অনেক কমিউনিস্ট নেতার বিরোধিতাকে উপেক্ষা করেই কালচারাল রেভ্যুলেশন বা সাংস্কৃতিক বিপ্লব নামে আরেকটি পরিকল্পনা হাতে নেন। এ পরিকল্পনার কারণে চীনের কমিউনিস্ট শাসন ব্যবস্থায় দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে শুরু করে। তবে এসব কোনো কিছুই মাওকে পরিকল্পনার বাস্তবায়ন থেকে হটাতে পারেনি। কিছু একান্ত অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন পরিচালনা করতে থাকেন আর অন্যদিকে কমিউনিস্ট পার্টির কিছু আমলা তৎকালীন সময়ে তাদের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। ১৯৬৮ সালের দিকে এ আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটে।

প্রথম জীবনে মাও সে তুং বিশ্বাস করতেন, শহরে শিল্প-কারখানার শ্রমিকরাই হচ্ছে কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ ধারণা অনুযায়ী চীনের উন্নয়নের পথে তিনি অগ্রসর হননি। মার্কসবাদী এই দর্শনকে টপকে ১৯৫২ সালের দিকে মাও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার প্রধান সমর্থন তিনি চীনের সাধারণ কৃষকসমাজ থেকেই আদায় করবেন। জাতীয়তাবাদীদের সঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টি অব চায়নার দীর্ঘ লড়াইয়ের সময় পার্টির ক্ষমতার প্রধান ভিত্তিই ছিল চীনের গ্রামাঞ্চলে, সে কথা ভুলে যাননি মাও। চীনের কৃষিজীবী মানুষকে প্রাধান্য দিয়েই তিনি পার্টির শাসন ব্যবস্থার নীতিনির্ধারণ করেছিলেন। মাওয়ের রাষ্ট্রনীতি চীনকে বদলে দিয়েছিল। দেশটির সর্বজনীন আধুনিকায়ন, দ্রুতগতিতে শিল্পায়ন এবং গণশিক্ষার ব্যাপক অগ্রগতিতে মাও সে তুং বিশাল অবদান রাখেন।

বিপ্লবীদের কথা অবলম্বনে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied