আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

 width=
 
শিরোনাম: কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর      

 width=
 

কেমন আছে বদরগঞ্জের আদিবাসী সম্প্রদায়?

বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০১৬, দুপুর ০৪:৫৮

বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের আদিবাসী পল্লী বড়পাড়ায় গতকাল আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন, কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী মানুয়েল মারডী (২৩)। এই ইউনিয়নের আদিবাসী জনগোষ্ঠির জীবন-জীবিকা, শিক্ষা-স্বাস্থ্য, বাসস্থান-চিকিৎসাসহ নানা বিষয়ে বঞ্চণা ও বৈষম্যের কথা বলেন রোজিনা তিরকি, সুচন্দা এক্কা, জোসিলা কিসপট্টা, লুচি মিঞ্জীসহ আরো অনেকেই।

উপজেলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত লোহানীপাড়া ইউনিয়নের বনজ পরিবেশে আদিবাসী গ্রামগুলো অবস্থিত। লোহানীপাড়ার শিমুল ঝুড়ি, বড়পাড়া, কুড়াপাড়া, কামারপাড়া, তরফ ডাঙ্গা, সাজানো গ্রাম, দিঘলটাড়ী, দিগ্যাপাড়া গ্রামে প্রায় ৫ হাজার আদিবাসীর বাস, যা ওই ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যার এক অষ্টমাংশ।

আদিবাসীরা সর্বদাই অবহেলিত। জীবিকার তাগিদে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও শ্রম দিয়ে থাকেন। শুধু তাই নয়, কর্মক্ষেত্রে অনেকাংশে পুরুষের চেয়ে নারীরাই বেশী শ্রম দিয়ে থাকেন। তবুও শ্রম বৈষম্য থাকায় নারী শ্রমিকরা তাই সর্বদাই বঞ্চনার শিকার হন। যেখানে পুরুষ শ্রমিকরা প্রতিদিনের মজুরী পান ২৫০ টাকা, সেখানে একজন নারী শ্রমিক পান ১৮০ টাকা। তাছাড়া বছরের বেশির ভাগ সময় আবার কর্ম মিলেনা। তাই কর্মহীন সময়ে আদিবাসীরা বন-জঙ্গলে ঘুরে ফল-মূল সংগ্রহ ও পশু-পাখি শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। আবার কেউ কেউ জীবন বাঁচাতে অন্যত্র ছুটে যান। সেকারণে গ্রামের সিংহভাগ নারী-পুরুষ এখন ঢাকাসহ দেশের নানা জায়গায় গিয়ে নানাভাবে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

এ বিষয়ে বড়পাড়ার এতোয়া কেরকাটা (৫০) জানান, সরকারীভাবে এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলে আমরা বেকারত্বের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ফিরে পাবো। ইউপি সদস্য পাতরাজ তিরকি জানান, আদিবাসীরা নানা প্রতিকুলতার কারণে তাদের কৃষ্টি-কালচার আজ হারাতে বসেছে। তিনি বলেন, আদিবাসী ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সরকারকে আদিবাসীদের প্রতি নজর দিতে হবে। তাই তিনি আদিবাসীদের জন্য পৃথক কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের দাবী জানান। বড় পাড়া ক্যাথলিক চার্চের ফাদার বনিফাস মুরমু বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোয় আদিবাসীদের মাতৃভাষা চর্চার জন্য আলাদা বিভাগ চালুর দাবী জানান। প্রাক্তন শিক্ষক ফিলিপ কেরকাটা বলেন, বর্তমান সরকার আদিবাসীবান্ধব। বর্তমান সরকার আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য নানামুখী উদ্যোগ নেয়ায় তিনি সরকারের ভুয়সী প্রশংসা করেন।

উপজেলা আদিবাসী স্টুডেন্ট ফোরামের সভাপতি লিটন সরেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরেন আদিবাসী শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। এ আন্দোলনের ফলে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের কিছুটা অধিকার আদায় হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এ অঞ্চলের আদিবাসীরা সরকারী সুবিধা কম পাচ্ছে। চাকুরীর ক্ষেত্রে কোটা থাকলেও সেখানেও বৈষম্যর শিকার হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারীভাবে যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তা পর্যাপ্ত নয়।

সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পেয়ারী কুজুর বলেন, কারমাইকেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে লেখাপড়া শেষে স্কুলে শিক্ষকতা করছি। আদিবাসী সন্তানদের শিক্ষাদানের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছি। তিনি বলেন, একমাত্র শিক্ষাই পারে একটি জাতিকে আলোকিত করতে।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমাদের গ্রামে অনেক ছেলে মেয়ে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ গুলোতে লেখাপড়া করছে। এটা পরিবর্তনের আভাস বলে তিনি মন্তব্য করেন। দিঘরি পরিষদের সাবেক সম্পাদক বিকাশ কুজুর বলেন, আদিবাসীদের মাঝে জাতি বিভেদ থাকায় অনেক জাতি সুযোগ সুবিধা পেলেও সাঁওতাল ও বুনোরা সে সব সুবিধা থেকে সর্বদাই বঞ্চিত থাকেন।

এদিকে এলাকা ঘুরে জানা গেছে, আদিবাসীদের উন্নয়নে বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থা কাজ করে গেলেও আদিবাসীরা নানান প্রতিকুলতার শিকার হওয়ায় তাদের তেমন উন্নতি হচ্ছেনা।

মন্তব্য করুন


 

Link copied