বগুড়া: বগুড়ার শিবগঞ্জে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সাড়ে পাঁচ হাজার উত্তরপত্র গুদাম থেকে গায়েব হয়ে গেছে। এতে ফলাফল পুনঃমূল্যায়নের আবেদনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের ফলাফল নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের হেফাজতে থাকা এসব খাতা চুরির বিষয়টি শনিবার বিকালে জানাজানি হয়।
এ চুরির ঘটনায় নানা রহস্যের সৃষ্টি করেছে। এছাড়া এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।
এদিকে ঘটনা তদন্তে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রোববার তাদের রিপোর্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করবে।
জানা গেছে, ৩১ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১৫ এর ফলাফল ঘোষণা হয়। শিবগঞ্জ উপজেলার উত্তরপত্রগুলো ২৮ বস্তায় ভরে মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গুদামে রাখা হয়েছিল। ওই গুদামের তালার চাবি উপজেলা শিক্ষা অফিসার জিল্লুর রহমান এবং অপর চাবি সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবু রায়হানের হেফাজতে রাখা হয়।
এদিকে যেসব শিক্ষার্থী কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পায়নি, তাদের ২০০ টাকা মূল্যায়ন ফি জমা সাপেক্ষে খাতা পুনঃমূল্যায়নের আবেদনের জন্য ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেয়া হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে ১২ উপজেলা থেকে এক হাজারের বেশী আবেদন জমা পড়ে।
গত ১৯ জানুয়ারির মধ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে উত্তরপত্রগুলো জেলা অফিসে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়। ২১ জানুয়ারি পুনঃমূল্যায়নের ফলাফল ঢাকায় পাঠানোর শেষ তারিখ ছিল। সব উপজেলা থেকে খাতা এলেও শিবগঞ্জের খাতা আসেনি। শিবগঞ্জ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গুদামে রাখা ২৮ বস্তার মধ্যে তিনটি গায়েব হয়ে যায়। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজার খাতা ছিল।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী ১৯ জানুয়ারি খাতা গায়েবের বিষয়টি জানতে পারেন। পরদিন শিবগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।
তিনি ঘটনাটি তদন্তে সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ সাহাকে আহ্বায়ক এবং শেরপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবদুল কাউয়ুম ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা শিক্ষা অফিসার সারোয়ার হোসেনকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদের রিপোর্ট দিতে বলা হয়। কিন্তু কমিটি শনিবার বিকাল পর্যন্ত রিপোর্ট জমা দেয়নি।
তদন্ত কমিটির প্রধান সাংবাদিকদের বলেন, গুদামের তালা অক্ষত দেখা গেছে। তার ধারণা, টিনের চালা কেটে চুরি হয়েছে। তবে এলাকাবাসী বলেছেন, গুদামের টিনের চালা কাটা ছিল না।
শিবগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান মোবাইলফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী জানান, কে বা কারা গুদাম থেকে সাড়ে ৫ হাজার খাতা চুরি করেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত এবং থানায় জিডি করা হয়েছে।
রোববার তদন্ত কমিটি তাকে রিপোর্ট দিলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।