আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

রংপুরে সরকারি ডাকবাংলো অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে এক যুগ্ন সচিব

বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০১৩, দুপুর ০৩:৩৬

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর আর.কে রোডের ইসলামবাগে অবস্থিত এই ডাকবাংলোটি। চারিদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী রয়েছে। ডাকবাংলোটি দেখভালের জন্য জেলা পরিষদ রেখেছে একজন সার্বক্ষনিক কেয়ারটেকার। বাংলোর দায়িত্বে থাকা কেয়ারটেকার মোহাম্মদ আলীকে বাংলোর পরিচর্যায় ব্যস্ত থাকার কথা থাকলেও তাকে ব্যবহার করা হচ্ছে ওই পরিবারটির আর্দালির কাজে। জানা গেছে, ওই যুগ্ম সচিব ডাকবাংলোর পশ্চিম পার্শ্বের একটি রুম একজন ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিকে ভাড়া দিয়েছেন। বাংলোর ভিতরে টিনের কাচা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন তিনি। ডাক বাংলোটি সরকারি হলেও বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই ওই সুরতি বাড়িটি সরকারি ডাকবাংলো।

জানা গেছে, সরকার ওই ডাকবাংলোটির পেছনে একজন কেয়ারটেকারকে প্রতিমাসে বেতন দেয় ৬ হাজার টাকা। সেখানে বিদ্যুৎ বিল আসে প্রতি মাসে পৌনে চার হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা। এছাড়াও সরকারি এই বাড়ির পেছনে খরচ হয় আরো ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। সব মিলে বাংলোর পেছনে সরকারের খরচ হয় ১৫ হাজার টাকা। অথচ তিনি মাত্র ৫ হাজার ২শ ৫০ টাকায় ৫টি রুম ব্যবহার করছেন ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। রংপুর জিলা পরিষদ সূত্র জানিয়েছে, সচিব আবুল কালাম আজাদ রংপুরে জোনাল সেটেলম্যান্ট অফিসে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি ২০০৯ সালে এই বাংলোটিতে থাকতে শুরু করেন। এরপর তিনি সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এতে করে চরম বিপাকে পড়ে জিলা পরিষদ। এক পর্যায়ে তিনি ঢাকায় জনপ্রশাসন বিভাগে পদোন্নতি পেয়ে যোগদান করেন। সেখানে যাওয়ার পরেও ওই বাংলোটি তিনি ছেড়ে দেননি। ৫টি রুমের ভাড়া ৫ হাজার ২শ ৫০ টাকা দেয়ার কারণে রংপুর জিলা পরিষদ অনেকটা ক্ষুব্ধ হয়েই গেল বছরের ১৮ জুন একটি বৈঠক করে। বৈঠকে ওই বছরের ১ জুলাই থেকে ৫ হাজার ২৫০ টাকার পরিবর্তে একবারে ১৫ হাজার ৭৫০ টাকায় বৃদ্ধি করা হয়। ১৫ হাজার টাকা ভাড়া করার পেছনে মুল কারণ হলো, যেন ওই সচিব বাংলোটি ছেড়ে দেন। তবুও তিনি বাংলোটি ছেড়ে দেননি। সরকারি সুযোগ সুবিধা নিয়ে তার স্ত্রী মঞ্জুয়ারা পারভীন জেলা প্রশাসন পরিচালিত রংপুর কালেক্টরেট স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন।

জিলা পরিষদের একটি সূত্র জানিয়েছে, ওই বাংলোর কেয়ারটেকার মোহাম্মদ আলীকে সরকার নিয়োগ করলেও ওই যুগ্ম সচিব তাকে ব্যবহার করছেন তার আর্দালি হিসেবে। তার এক সন্তানকে স্কুল থেকে আনা নেয়া, তার বাড়ির হাট বাজার করাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছেন।

সূত্র জানিয়েছে, প্রায় চল্লিশ শতক জমির উপর নির্মিত এই ডাকবাংলোটি সরকারি কর্মকর্তাদের রেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তিনি বাংলোটি এমনভাবে ব্যবহার করছেন, সরকারি অনেক কর্মকর্তা এবং স্থানীয়রা জানেন ওই বাংলোটি এখন সচিব মহোদয় ক্রয় করে নিজের আয়ত্তে নিয়েছেন। এ কারণে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে তার দখলেই রয়েছে। সেখানে তিনি এবং তার পরিবার ছাড়া নতুন কোন কর্মকর্তাকে বাংলোটিতে যাতায়াত করতে দেখা যায়নি।

জেলা পরিষদের এক কর্মকর্তা আক্ষেপ করে বলেন, তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন আর বাংলোটিতে রয়েছেন স্ত্রী সন্তানরা। অথচ বাংলো থাকার পরেও তিনি সেটি না ছাড়ায় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার দেলোয়ার বকতসহ অনেক কর্মকর্তাই থাকছেন সার্কিট হাউস, হোস্টেল, বাসা-বাড়ি ভাড়া করে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাঁচ করে এই ডাকবাংলোটি বেশ ছিমছাম। চারিদিকে নিরাপত্তা প্রাচীরে ঘেরা। রয়েছে অত্যাধুনিক সকল সুযোগ সুবিধা। যুগ্ম-সচিব আবুল কালাম আজাদ ঢাকায় সচিবালয়ে কর্মরত অবস্থায় কি করে সরকারি এই ডাকবাংলোটি বরাদ্দ নিয়েছেন, এই নিয়ে সকল সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দেয়া এক প্রজ্ঞাপনে দেখা গেছে, কোন সরকারি বা বেসরকারি কর্মকর্তা বদলী জনিত কারণে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের প্রেক্ষিতে বাসা না পাওয়ায় বিভাগীয় বা জেলা সদর/ উপজেলা পর্যায়ে অবস্থিত জিলা পরিষদের ডাকবাংলোতে সীট বা ক খালি থাকা সাপেক্ষে এবং পরিষদের অনুমোদন ক্রমে অবস্থান করতে পারবেন। কিন্তু তিনি ঢাকায় অবস্থান করলেও বাংলোটি না ছাড়ায় সরকারি অন্য কর্মকর্তারা ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন। বাংলোয় উঠতে পারছেন না তারা। রংপুর জেলা পরিষদে কর্মরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সরকারী নিয়ম অনুযায়ী কোন কর্মকর্তা সরকারি ডাকবাংলোয় পরিবার পরিজন নিয়ে এতদিন বসবাস করতে পারেননা। নিয়ম বহির্ভূতভাবে ওই কর্মকর্তা সেখানে বসবাস করছেন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে। অথচ রংপুরে কর্মরত অনেক সরকারি কর্মকর্তা সরকারি বাড়ির অভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে কর্মস্থল রংপুরে বসবাস করতে পারছেন না।

যুগ্ম সচিব আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের জানান, আমি ঢাকায় সরকারি কোন বাড়ি বরাদ্দ নেইনি। সে কারণে রংপুরের ওই বাংলোটিতে পরিবার পরিজন নিয়ে থাকছি এবং নিয়ম মাফিক ভাড়া প্রদান করছি। ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিকে ভাড়া দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অসহায় ও গরীব হওয়ায় তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার দেলোয়ার বখত জানান, এ বিষয়টি আমি জানতাম না। জেনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied