আর্কাইভ  শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ● ৭ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: লালমনিরহাটে মোবাইল ফোনে কথা বলছিল, হঠাৎ পিছন থেকে ট্রেনের ধাক্কায় কাটা পড়লেন যুবক       ঠাকুরগাঁওয়ে নিখোঁজের ২ দিন পরে ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার       ছুটি বাড়ল সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে       ডিমলা উপজেলা নির্বাচন॥ এমপির ভাই, ভাতিজা ও ভাতিজি বউ প্রার্থী-তৃণমূলে ক্ষোভ       কিশোরী গৃহকর্মীকে খুন্তির ছ্যাকা; রংপুর মেডিকেলে মৃত্যু যন্ত্রণায় পাঞ্জা লড়ছে নাজিরা      

 width=
 

উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন বিলম্বে চলাচল : যাত্রী ভোগান্তি চরমে

রবিবার, ১৬ জুন ২০১৩, দুপুর ০২:২৭

ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপত্তার অভাব, প্রয়োজনীয় আসন সংকট, নির্ধারিত সময় থেকে বিলম্বে চলাচল, টিকিট প্রাপ্তিতে হয়রানি, চোরাচালানিদের দাপট ইত্যাদি সমস্যার কারণে প্রতিদিন শত শত যাত্রী দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছে। এতে যাত্রীরা ট্রেন ভ্রমণে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।

যাত্রীদের অভিযোগে জানা যায়, রাজধানী ঢাকার সাথে উত্তরাঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করার উদ্দেশে বাংলাদেশ রেল বিভাগ দিনাজপুর থেকে একতা ও দ্রুতযান, নীলফামারী থেকে নীল সাগর, রংপুর থেকে রংপুর এক্সপ্রেস এবং লালমনিরহাট থেকে লালমনি এক্সপ্রেস নামে ৫ টি আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করে। এই ট্রেনগুলো চালু হওয়ার পর উত্তরাঞ্চলের মানুষের রাজধানী ঢাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটা সহজ হয়। এছাড়া সড়ক পথের চেয়ে রেল পথে ভ্রমণ তুলনামূলক আরামদায়ক, ভাড়া কম এবং অনেকটা নিরাপদ হওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষ ঝুঁকি এড়াতে সড়ক পথের চেয়ে রেল পথে চলাচল করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

বিশেষ করে বঙ্গবন্ধু সেতু চালু হওয়ার পর সড়ক ও রেল পথে উত্তরাঞ্চলের সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধিত হয়। এই অঞ্চলের মানুষ আশা করেছিল আন্তঃনগর এই ট্রেনগুলোতে রাজধানী ঢাকার সাথে খুব দ্রুত যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হবে। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে এই ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে চলাচল করতে পারছে না। সবকটি ট্রেনই প্রতিদিন নির্ধারিত সময় থেকে বিলম্বে চলাচল করছে। এতে প্লাটফরমে অপেক্ষমাণ শত শত যাত্রী পরিবার পরিজন নিয়ে চরম দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া টিকিট কাউন্টারে টিকিট নিতে যাত্রীদের চরম ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়। আসন সংকটের অযুহাতে অধিকাংশ যাত্রীদের টিকিট দেয়া হয় আসনবিহীন। আবার একই সিট নাম্বারে একাধিক টিকিট দেয়ার কারণে ট্রেনের মধ্যে যাত্রীদের মাঝে আসন নিয়ে ঝগড়া বিবাদের ঘটনাও ঘটে। তাছাড়া ট্রেনের মধ্যে সাধারণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় চোরাচালানিদের দাপটে যাত্রী হয়রানির অভিযোগ নিত্যদিনের ব্যাপার।

পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রতি রেল বিভাগের বিমাতাসুলভ আচরণের ফলে এই অঞ্চলের ট্রেনগুলো নানাবিধ অব্যবস্থাপনার কবলে পড়েছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ রয়েছে।

বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লালমনিরহাট থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটি নির্ধারিত সময় বেলা ২টায় সান্তাহার স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ওই ট্রেন আসে সাড়ে ৩ ঘন্টা বিলম্বে বিকেল সাড়ে ৫টায়। এ সময় প্লাটফরমে অপেক্ষমাণ শত শত যাত্রীর মধ্যে নওগাঁ জেলার বদলগাছীর আব্দুল কুদ্দুস (৪২) নামে এক যাত্রী জানান, তিনি লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা যওয়ার উদ্দেশ্যে দুপুর ১টায় সান্তাহার রেলস্টেশনে আসেন। বৃদ্ধ মা, স্ত্রী ও দুই মেয়েকে সাথে নিয়ে তিনি প্রায় সাড়ে ৫ ঘন্টা ধরে প্লাটফরমে অপেক্ষা করছেন। তিনি বিরক্তির সাথে বলেন, যতক্ষণ যাবৎ প্লাটফরমে বসে আছি এতক্ষণ আমি ঢাকা পৌছে যেতাম। ট্রেনের এমন দুরবস্থা জানলে কখনোই ট্রেনের টিকিট কাটতাম না।

জয়পুরহাট জেলার তিলকপুর গ্রামের একরামুল ইসলাম (৪২) বলেন, রেল বিভাগের এই অব্যবস্থপনা ও উদাসীনতার কারণে এই ট্রেনগুলোতে যাত্রী সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। ফলে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ও লাভজনক সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি ক্রমান্বয়ে লোকসানের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে সান্তাহার জংশন স্টেশন মাস্টার হাবিবুর রহমান হাবীব এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, পশ্চিমাঞ্চল রেলে লোকবল সংকট, প্রয়োজনীয় কোচ ও লোকো মুটিভ (ইঞ্জিন) স্বল্পতার কারণে একই ইঞ্জিনে একই রেক (১০টি কোচে ১রেক) আপ-ডাউন করাতে হয়। এছাড়া সিঙ্গেল লাইনে আপ-ডাউন ট্রেন ক্রসিংয়ের সময় একটি ট্রেন যে কোন স্টেশনে দাঁড় করিয়ে রেখে বিপরীতমুখী ট্রেন পাস করাতে হয়। এতেও অনেক সময় অপচয় হয় এবং ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। ইত্যাদি নানা প্রতিকূল অবস্থার কারণে ট্রেনগুলো সময় মত চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তবে সরকার রেলের উন্নয়ন কল্পে বহুমুখী প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে এ সকল সমস্যা থাকবে না বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মন্তব্য করুন


 

Link copied