শুক্রবার, ১৪ জুন ২০১৩, দুপুর ১১:২৮
নদী ভাঙনে বিলিন হতে চলেছে ঠাকুরগাঁওয়ের চা বাগান। চা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও ভর্তুকি ও ঋণের ব্যবস্থা না থাকায় এর আবাদ সম্প্রসারিত হচ্ছে না। যেটুকু জমিতে চা বাগান রয়েছে তাও বিলিন হয়ে যাচ্ছে নদী ভাঙনে। এজন্য কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা ও অসহযোগিতাকে দায়ী করছেন চা চাষিরা। ১৯৯৯ সালে ঠাকুরগাঁও জেলার সদর, পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল, বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুর উপজেলার ১৫ হাজার হেক্টর জমিকে চা চাষের উপযোগী চিহ্নিত করে পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ড। কিন্তু গত ১৪ বছরে ওই পরিমাণ জমিতে চা চাষ শুরু করা যায়নি। ২০০৭ সালে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ধনতলা ও কান্তিভিটা সীমান্ত এলাকায় অ্যামিন্টে টি স্টেট নামে একটি প্রতিষ্ঠান মাত্র ১২ একর জমিতে চা চাষ শুরু করে। দুই বছর আগে ওই বাগানটি গ্রিন ফিল্ড টি স্টেট নামে একটি কোম্পানি কিনে নেয় এবং এ বছর থেকেই তারা চাষাবাদ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়। এ ছাড়াও ওই এলাকায় গেল বছর আরো চারজন ক্ষুদ্র চাষি সাড়ে চার হেক্টর জমিতে চা সম্প্রসারণের কাজ শুরু করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা না করায় তারা চা চাষ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। ধনতলা সীমান্তের দিঘলবস্তি গ্রামের ক্ষুদ্র চা চাষি সহর উদ্দিন বলেন, ‘‘গত বছর এক বিঘা জমিতে চাষ চাষ শুরু করেছি। কিন্তু চা চাষে চারা বাবদ চা বোর্ডের ভর্তুকির টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও আজও পাইনি সেই টাকা।’’ ওই গ্রামের ক্ষুদ্র চাষি দবিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘ভর্তুকির টাকাতো নেই। চা চাষ সম্প্রসারণ করতে ব্যাংক থেকেও কোনো ঋণ পাওয়া যাচ্ছে না। পাশ্ববর্তী জেলা পঞ্চগড়ে ব্যাপক হারে চায়ের আবাদ হলেও ঠাকুরগাঁওয়ে তার উল্টো। ব্যাংক ঋণ ও ভতুর্কির টাকার আজও পাননি ক্ষুদ্র চাষিরা। এতে চা চাষে আগ্রহীরাও পিছিয়ে যাচ্ছেন। অন্য দিকে সীমান্ত ঘেষা নাগর নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে চা বাগানগুলো। গেল কয়েক বছরে একটি বাগানের এক একর চা বাগান নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙন রোধ করতে না পারায় চা চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই। চা চাষি মকবুল হেসেন বলেন, চা বাগানের সাথেই নাগর নদী। প্রতিবছরই ভাঙ্গছে। কিন্তু চা বোর্ড কিংবা পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙ্গন রোধে কোন পদক্ষেপই নিচ্ছেন না। এতে হুমকির মুখে রয়েছে অনেক চা বাগান। আগ্রহী চা চাষি আব্দুস সামাদ বলেন, ‘‘দেড় বিঘা জমি তৈরি করছি চা চাষের জন্য। কিন্তু ভর্তুকির টাকা, ব্যাংক ঋণ না পাওয়া আর নদী ভাঙনে সেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি।’’ গ্রিন ফিল্ড টি স্টেটের ম্যানেজার ইব্রাহীম খলিল সবুজ জানান, গত কয়েক বছরে প্রায় এক একর জমির চা বাগান নদী গর্ভে বিলিন হয়েছে। নদী ভাঙন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে চা বাগান ও চাষিরা। ঠাকুরগাঁওয়ে চা চাষ সম্প্রসারণে এসব সমস্যার কথা স্বীকার করে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানালেন পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের উন্নয়ন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আমির হোসেন। ঠাকুরগাঁওয়ে চায়ের আবাদ সম্প্রসারিত হলে একদিকে যেমন চাষিদের ভাগ্য খুলবে, অন্য দিকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে চা রফতানি করে অর্জিত হতে পারে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা।
মন্তব্য করুন
টপ নিউজ’র আরো খবর
সংশ্লিষ্ট
দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে রেকর্ড
সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিন উদ্ধার
সোনার দামে সব রেকর্ড ভাঙল
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল বিশ্বে একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত- প্রধানমন্ত্রী