ফরহাদুজ্জামান ফারুক, স্টাফ রিপোর্টার: রংপুরে বিসিআইসির সার ডিলারদের মজুদ রেজিস্টার নিরীক্ষা (অডিট) করতে আসা এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে অডিট সম্পন্ন না করেই ওই কর্মকর্তা রোববার সবার অগোচরে ঢাকা পালিয়ে গেছেন। বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এ্যাসোসিয়েশন (বিএফএ) রংপুর ইউনিটের পক্ষ থেকে বিষয়টি জেলা সার মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক এবং সদস্য সচিব ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে।
বিএফএ রংপুর ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, ২০১০-১১ অর্থবছরে বিসিআইসির বরাদ্দ দেওয়া টিএসপি(ট্রিপল সুপার ফসফেট), এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) এবং ডিএপি(ডায় এ্যামোনিয়া ফসফেট) সারের মজুদ নিরীক্ষার জন্য সরকার নির্ধারিত ঢাকার এসএম জাকারিয়া এ্যাণ্ড কোম্পানীর ব্যবস্থাপক আব্দুর রাশেদ খান রংপুর আসেন। গত শনিবার তিনি বিএফএ রংপুর ইউনিট কার্যালয়ে বসে ১০২ জন ডিলারের মজুদ রেজিস্টার নিরীক্ষার কাজ শুরু করেন। কিন্তু নিরীক্ষার আগেই তিনি প্রতি ডিলারের কাছ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে দাবি করেন বলে অভিযোগ উঠে। অন্যথায় রেজিস্টার নিরীক্ষা করবেন না বলে জানিয়ে দেন। নিরীক্ষা বাধ্যতামূলক হওয়ায় প্রথম দিন ৫০জন ডিলার দাবীকৃত টাকা দিয়ে নিরীক্ষার কাজ সম্পন্ন করান। শনিবার রাতে আব্দুর রাশেদ খান বাকি ডিলারদের কাছ থেকে ২ হাজার করে টাকা দাবি করলে বিএফএ কর্মকর্তারা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। বিষয়টি জানতে পেরে রোববার সকালে ঢাকা পালিয়ে যান অডিট কর্মকর্তা।
রংপুর নগরীর কলেজ রোডের সার ডিলার এস এম বদরুদ্দোজা অভিযোগ করেন, আমি মজুদ রেজিস্টার নিরীক্ষার জন্য নিয়ে গেলে আব্দুর রাশেদ খান ১ হাজার ৫০০ টাকা দাবি করেন। নইলে রেজিস্টার নিরীক্ষা করবেন না। বাধ্য হয়ে দাবীকৃত টাকা দিয়ে রেজিস্টার নিরীক্ষা করে নেই।
বিএফএ রংপুর ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন মওলা বলেন, বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা সার মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক এবং সদস্য সচিব ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালককে অবহিত করা হয়েছে। এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে সার উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হবে।
জেলা সার মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফরিদ আহাম্মদ বলেন, বিষয়টি জেনেছি। সংশ্লিষ্ট দফতরকে লিখিতভাবে অবহিত করা হবে।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে এসএম জাকারিয়া এ্যাণ্ড কোম্পানীর ব্যবস্থাপক আব্দুর রাশেদ খান বলেন, আমি জীবনে এমন কাজ করিনি। বিএফএ রংপুর ইউনিটের এক কর্মচারী আমার নাম ভাঙ্গিয়ে ডিলারদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছিল। বিষয়টি জানতে পেরে আমি ঢাকা চলে এসেছি। পরে সময় করে এসে বাকি কাজ সম্পন্ন করবো।