বিনোদন পিপাসু মানুষের উপচে পড়া ঢলে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে ব্যস্তময় রংপুর মহানগরী থেকে একটু দূরে গড়ে ওঠা কোলাহলমুক্ত প্রয়াস সেনা বিনোদন পার্ক, ভিন্নজগত, ফ্যান্টাসি জোন, সিটি চিকলি পার্ক। একই চিত্র দেখা গেছে, রংপুর চিড়িয়াখানা, কালেক্টরেট সুরভী উদ্যান, মহিপুরঘাট, তিস্তা সড়ক সেতু পয়েন্ট, টাউন হল চত্ত্বরসহ নগরীর একমাত্র সিনেমা হল শাপলা টকিজে।
নিসবেতগঞ্জের স্মৃতিবিজড়িত রক্ত গৌরব চত্ত্বর ঘাঘট নদীর অংশ বিশেষসহ পাশ্ববর্তী বিস্তৃত নিচু এলাকায় গড়ে ওঠেছে প্রয়াস সেনা বিনোদন পার্ক। এখানে সেনা সদস্যদের নিখুঁত কারিগরি পরিকল্পনায় বাঁশ ব্যবহারে সাজানো এ বিনোদন পার্কের মুল গেট পেরিয়ে প্রথমেই চোখে পড়বে অসংখ্য রকমারী দোকান। ঠিক যেমন সমুদ্র সৈকত পাড়ের আদলে রকমারী দোকানের হাট। নানা রকমের পণ্য দিয়ে সাজানো হয়েছে দোকানগুলো।
হস্তশিল্প সামগ্রী, খেলনা, খাবারের দোকান, নদীর বুকে ভাসমান বিলুপ্ত আশির দশকের বেশ কিছু নৌকা নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের। কেউ কেউ আনন্দের মাত্রা বাড়াতে ক্যামেরার ক্লিকে স্মৃতির ফ্রেমে বন্দি করছেন প্রিয় মূহুর্তগুলোকে।
অন্যদিকে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে বাংলাদেশ বেতার রংপুর কেন্দ্রের কোল ঘেষেই নির্মিত রংপুর সিটি চিকলি পার্ক। সেখানে বিশাল চিকলিবিলের আশপাশ ঘিরে সাজানো হয়েছে শিশু-কিশোরদের আকৃষ্ট করার মতো নানা আয়োজন। বিলের বুকে স্পিডবোর্ড চলছে দ্রুত বেগে এ পাশ থেকে ওপাশ। হৈ হুল্লোরে মেতে উঠছে সবাই। আর স্পিডবোর্ডের ছুটে চলার বেগে বড় বড় ঢেউ এসে ধাক্কা মারছে বিলের দু’কূলে। ছিটকে আসা জলরাশিতে মজা করছেন ছোট বড় সব মানুষই।
এখানে দিনের আলো পুবাকাশে হারিয়ে গেলেই সন্ধ্যায় আকাশে অন্যরকম এক দৃশ্যের অবতারণ দেখা যায়। মেঘের কোলে দোল খেতে খেতে নিভে যায় দিনের প্রদীপ। তখন দূর থেকে ভেসে চিরচেনা ভাওয়াইয়ার সুর।
চিকলি পার্কের মতো ভিন্নজগত, রংপুর বিনোদন উদ্যান ও চিড়িয়াখানা, কালেক্টরেট সুরভী উদ্যান, ফ্যান্টাসি জোন, মহিপুরঘাট, তিস্তা সড়ক সেতু পয়েন্ট, টাউন হল চত্ত্বরসহ রংপুর মহানগরীর একমাত্র সিনেমা হল শাপলা টকিজেও মানুষের উপচে পড়া ভীড় দেখা গেছে।
রংপুর বিনোদন উদ্যান ও চিড়িয়াখানায় পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা শফিকুল ইসলাম শফি নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ব্যস্ততা আর ডিউটির মাঝে একটু সময় করে ঘুরতে খুবই ভালো লাগছে।
অন্যদিকে চিকলি পার্কে কথা হয় এক ব্যাংক কর্মকর্তার সাথে। এসময় তিনি সাম্প্রতিক সময়ের জঙ্গি হামলা ও নাশকতার প্রসঙ্গ ধরে বলেন, ঈদের দিন যারা শোলাকিয়া ঈদগাহ্ মাঠের কাছে সন্ত্রাসী হামলা করে। মানুষ হত্যা করে। ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। তারাতো মানুষ না। ওদের কোনো ধর্ম নেই। ওরা ধর্মের নামে যারা মানুষ হত্যা করে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে, তা ছোট বড় সব বসয়ী মানুষের এ ঢলই ভেস্তে যাবে। আমরা কেউই ভীতু নই।
প্রয়াস বিনোদন পার্কে মারুফা আক্তার জিম্মি, ইভান মল্লিকসহ বেশ কয়েকজন তরুণ-তরুণীরা জানান, নগরীর এতো কাছাকাছি সুন্দর পরিবেশে এসে মন ভরে গেছে। সুশৃংখল পরিবেশে আমরা খুবই খুশি।
প্রকৃতি ও বিনোদন প্রেমীর জন্য অত্যন্ত ভালো বিনোদনের জায়গা রংপুরের বিনোদন স্পটগুলো। আর ঈদ এলে এই সব স্পট হয়ে যায় মানুষের ভীড়ে কানায় কানায় পূর্ণ।