আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

সৈয়দপুর থানার ওসির ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন !

শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬, বিকাল ০৫:২৮

জনগন কর্তৃক ধৃত দুই ছাগল চোরকে মাদকসেবি সাজিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে প্রেরণ করেছে সৈয়দপুর থানা পুলিশ। আদালত উভয়ের ১৫ দিন করে কারাদন্ড দিয়েছে। প্রকৃত বিষয়টি আড়াল করার এ ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সূত্রমতে, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার জসিম বাজার এলাকার দরিদ্র জিয়াউল হকের পালিত তিনটি খাসিসহ প্রায় ৭০ হাজার টাকা মূল্যের ৬টি ছাগল ১১ সেপ্টেম্বর রাতে চুরি যায়। ঈদের দিন (১৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় শফিকুল (২২) ও নাঈম (২১) নামে দুই ছাগল চোরকে আটক করে শহরের রসুলপুর মহলাবাসী। শফিকুল রসুলপুরের আলতাফ হোসেনের ও নাঈম ওই এলাকার শহিদুল ইসলামের পুত্র। ছাগল চোর আটকের খবর পেয়ে ছাগলের মালিক জিয়াউল স্থানীয় লোকজন নিয়ে রসুলপুরে গিয়ে আটক চোরদ্বয়কে জিজ্ঞাসা করলে শফিকুল ও নাঈম ছাগল চুরির সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তারা জানায়, কয়ানিজপাড়ার হাফিজের পুত্র রাফিক ওরফে রাফি (২৫) ছাগলগুলো চুরি করে। পরবর্তীতে ডোমপট্টির মাছুয়ার পুত্র মানিক ওরফে ভিকি (২০) মিলে তারা ছাগলগুলো বিক্রি করে দেয়। শফিকুল জানায়, ছাগল বিক্রির ৩ হাজার টাকা সে ভাগ পেয়েছে। স্থানীয় জনগনকে সে আরো জানায়, রাফি এর আগে গরু চুরি করে হাটে বিক্রি করেছে। ছাগল চুরির বিষয়ে সে বলে, জনৈক বাদশার জুয়ার আসরে রাফি ১০ হাজার টাকা হেরেছে। তাই টাকা জোগাড় করতে চুরির ঘটনা ঘটায়। পরে স্থানীয় লোকজন আটক ছাগল চুরির সাথে জড়িত শফিকুল ও নাঈমকে সৈয়দপুর থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরদিন (১৪ সেপ্টেম্বর) ছাগলের মালিক জিয়াউল হক থানায় রাফি, ভিকি, শফিকুল ও নাঈমের নামে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু পুলিশ দুই দিন পর (১৫ সেপ্টেম্বর) আটক শফিকুল ও নাঈমকে মাদকাসক্তের দায়ে ভ্রাম্যমান আদালতে প্রেরণ করেন। আদালতের বিচারক সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সালেহ মো. মূসা জঙ্গী তাদেরকে ১৫ দিন করে কারাদন্ড প্রদান করেন। অভিযোগ উঠেছে, থানা কর্তৃপ শফিকুল ও নাঈমকে আদালতে পাঠানোর সময় তাদের প্রকৃত বয়স উলেখ না করে কম বয়স দেখানো হয়েছে। যা থানায় বাদীর অভিযোগে দেয়া বয়সের সাথে মিল নেই। ফলে চোরকে মাদকাসক্ত এবং তাদের বয়স কম দেখানোর এমন ঘটনা এখন টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে। অপরদিকে, ওই অভিযোগের অভিযুক্ত মানিক ওরফে ভিকিকে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন এসআই গৌতম চন্দ্র রায়। তারপর রাতে আটক ভিকিকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। ছাগল চুরির অভিযোগকারী জিয়াউল হক জানান, ভিকিকে আটক হওয়ার পরপরই তার (ভিকির) বাবা আমার সাথে যোগাযোগ করে বলেন, ছাগল বিক্রির ভাগের যে টাকা ভিকি পেয়েছে তা আমি দিয়ে দিবো। আপনি আমার ছেলের নাম অভিযোগ থেকে বাদ দেন। ভিকিকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়া ব্যাপারে এসআই গৌতম চন্দ্র রায় বলেন, ওসি স্যারের নির্দেশে অঙ্গিকারনামা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছাগল চুরির মূল হোতা রাফিকে ধরিয়ে দেয়ার শর্ত রয়েছে ওই অঙ্গিকারনামায়। চুরির সাথে জড়িত চোর ধরবে আর এক চোরকে- এমন অঙ্গিকার বিষয়ে একজন আইনজীবি বলেন, তাহলে কি পুলিশ সামান্য ছাগল চোরকে ধরতে ব্যর্থ ? সৈয়দপুরের বিশিষ্ট আইনজীবি মো. ওবায়দুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগে উলেখিত আসামীকে পুলিশ অন্য মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতে পাঠাতে পারেননা। যা স¤পুর্ন রুপে বেআইনি। তিনি আইন অমান্য করে দোষী ব্যাক্তিদের সুকৌশলে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। অপরদিকে, বাদীর ন্যায় বিচার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, থানা কর্তৃপরে বিষয়ে বাদী অবশ্যই আদালতের আশ্রয় নিতে পারবেন। সৈয়দপুর থানার ওসি আমিরুল ইসলাম বলেন, আটক শফিকুল ও নাঈম ছাগল চুরির সাথে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেনি। তারা এলাকায় মাদকসেবি হিসেবে পরিচিত। তাই তাদেরকে মাদকাসক্ত হিসেবে ভ্রাম্যমাণ আদালতে পাঠানো হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি ওই অভিযোগে তারা দোষী বা সংশিষ্টতা থাকার প্রমান মিলে তাহলে তারা শাস্তি পাবে। কিন্তু একই অভিযোগে দুবার শাস্তি পেলে পুলিশ এরজন্য দায়ী হবে কিনা- তার সদুত্তর মিলেনি। এ প্রসঙ্গে কথা হয় সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) জিয়াউর রহমান জিয়ার সাথে। তিনি বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখবেন বলে  নিশ্চিত করেছেন।

মন্তব্য করুন


 

Link copied