মান-অভিমান থাকে সব সম্পর্কেই। প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তি না মিললেই আমাদের মন খারাপ হয়। আর আবেগের সম্পর্কে এই মন খারাপের সাথে মেশে ভালবাসার নানান হিসেব-নিকেশ। তখন ছোট্ট একটা বিষয়ে অভিমানের শুরু হলেও তা আর ছোট থাকে না। তাই প্রিয় সম্পর্কের অভিমান ভাঙানো অনেক সময়ই কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়ায়। কী করবেন তখন? মানুষটিকে কষ্ট পেতে তো দেওয়া যাবে না! আসুন জেনে নিই, বিশেষজ্ঞরা কী বলেন-
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ সাইন্স স্কুলের এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর সৌমিয়া প্রসাদ বলেন, আপনার প্রিয়জন হয়ত আপনার জন্য অনেক বিশেষ কিছু। তার জন্য আপনি সব করতে পারেন। কিন্তু তবুও একজন মানুষকে সব সময় সন্তুষ্ট রাখা কিন্তু সম্ভব নয়। তাই ঝগড়া নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে লাভ নেই। বরং কৌশল হিসেবে মেনে চলুন এই বিষয়গুলো-
বিষয় বদলাতে দেবেন নাঃ-
প্রায়ই দেখা যায় ঝগড়া বা মান অভিমানে এক বিষয় থেকে কথা পরিবর্তন হতে হতে অন্য বিষয়ে চলে যায়। ছোট একটা কথা থেকে শুরু হয়েছিল, কিন্তু পুরাতন অনেক কথা যোগ হতে হতে সেটা বিশাল আকার ধারণ করে। তাই কোনভাবেই বিষয়টি বদলাতে দেবেন না। কথা বলার সময় সাবধানে থাকুন, যাতে অপরপক্ষ কোনভাবেই আপনার কথাকে কেন্দ্র করে আরও রেগে না যায়!
পাল্টা অভিযোগ করবেন নাঃ-
ঝগড়া করার সময় আমাদের নিজেদের বাঁচানোর সবচেয়ে সাধারণ এবং পছন্দের উপায় হল পাল্টা দোষারোপ করে বেড়িয়ে পড়া। “তুমি কি কর? তুমি যখন কর আমার কেমন লাগে!” ইত্যাদি কথা বলে আমরা নিজেদের হয়ত সুরক্ষিত করি কিন্তু বিপদে ফেলে দিই সম্পর্কটাকে। নিজের অন্যায়টুকু মেনে নিন। অন্যায় না হলে বুঝিয়ে বলুন।
সময় দিনঃ-
অনেক ক্ষেত্রে সময়ই হয় শ্রেষ্ঠ সমাধান। সাথে সাথে আপনি রাগ ভাঙ্গাতে গেলে আপনার প্রিয়জন্য বুঝতে নাও চাইতে পারেন। ধাতস্থ হতে হয়ত একটু সময় চাই তার। তাকে একটু স্থির হতে দিন। হয়ত নিজেই সে বুঝতে পারবে আপনার কোন দোষ নেই। অথবা মাথা ঠান্ডা হলে আপনার কথা গ্রহণ করা সহজ হবে তার পক্ষে।
অহংকার ত্যাগ করুনঃ-
আমরা অনেক সময় অহংকারে নিজের ভুল দেখতে পাই না। প্রিয় মানুষটি কষ্ট পাচ্ছে দেখেও আমরা রাগ ছাড়তে পারি না। অভিমানকে গুরুত্ব দিই না। আপনার প্রিয়জন যখন অনেক সময় যাবত রেগে আছে, কষ্ট পাচ্ছে এবং আপনি কোনভাবেই বুঝতে পারছেন না কেন এই রাগ, পাল্টা আপনিও রেগে যাচ্ছেন, তখন একটু থামুন। ভাবুন। নিজের আচরণ খতিয়ে দেখুন। নিরপেক্ষ হয়ে বোঝার চেষ্টা করুন, ভুল আপনার নয় তো!
সরি বলুনঃ-
ভালবাসার মানুষকে সরি বললে কেউ ছোট হয়ে যায় না। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ক্ষমা চান। এরপর বিস্তারিত কথায় যান। অতিরিক্ত সরি আপনার আত্মসম্মানকে খাট করতে পারে। কিন্তু প্রয়োজন অনুযায়ী সরি বলা অনেক সময় সম্পর্ককে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচিয়ে দেয়।