বিশেষ প্রতিনিধি ১ অক্টোবর॥ নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় খগাখড়িবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী জিকরুল হকের (৪০) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী একটি পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে উপজেলার খগাখড়িবাড়ি গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে।
এলাকাবাসী জানায়, ঘটনার দিন সকালে বিদ্যালযের নৈশ প্রহরী জিকরুল হকের লাশ পুকুরে ভাসতে দেখে এক নারী পথচারী। পরে পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে।
খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথন বলেন,‘বিদ্যালয়ের পাশেই নৈশ প্রহরী জিকরুলের বাড়ি। রাতে তার স্ত্রী নার্গিস সহ ওই বিদ্যালয়ে থেকে দায়িত্ব পালন করতেন। শনিবার সকালে পথচারী এক নারী ওই পুকুরে জিকরুলের লাশ ভাসতে দেখে। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের খবরে আমি ঘটনাস্থলে এসে পুলিশে খবর দেই। পুলিশ বেলা ১১টার দিকে পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে।
নিহত জিকরুল হকের স্ত্রী নার্গিস বেগম বলেন, ‘রাতে আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। ভোরে জেগে দেখি ঘরে আমার স্বামী নেই। এরপর অনেক খোঁজাখুজির পর বিদ্যালয়ের পাশের পুকুরে আমার স্বামীর লাশ ভাসতে দেখে এলাকার লোকজন। নার্গিস বেগমের অভিযোগ তার স্বামীর গলায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। আর যে পুকুর হতে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে সেখানে হাটু পানি। ওই পানিতে কেউ ডুবে মরতে পারেনা। তার স্বামীকে কেউ হত্যা করে লাশ পুকুরে ফেলে গেছে বলে নার্গিস বেগম দাবি করেন। এ সময় তিনি স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে আহাজারীতে মাটিতে গড়াগড়ি দিতে থাকেন। তাকে শান্তনা দিতে গ্রামের শতশত নারী তাকে জড়িয়ে ধরে।
এদিকে অভিযোগ পাওয়া গেছে একটি প্রভাবশালী মহল মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে। পাশাপাশি লাশটি ময়না তদন্ত ছাড়াই দাফনের চেস্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
খগাখড়িবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমির হোসেন জানান, ২০১৩ সাল থেকে বিদ্যালয়ের খ-কালীন নৈশ প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন জিকরুল হক। সে প্রায় সময়ে তার স্ত্রী নার্গিস বেগমকে (৩৫) নিয়ে বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে অবস্থান করে দায়িত্ব পালন করতেন। শনিবার সকালে তার লাশ পুকুরে ভাসতে দেখে এলাকার লোকজন আমাকে খবর দেয়।
ডিমলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, নৈশ প্রহরীর মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক। তার গলায় আঘাতের চিহৃ রয়েছে। এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আগামীকাল রবিবার (২ অক্টোবর) নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়না তদন্ত করা হবে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদনের পর পরবর্তি পদক্ষেপ নেয়া হবে।