মমিনুল ইসলাম রিপন ॥শ্রাবণের শেষ প্রান্তে এসে তিস্তা পেলো তার পূর্ণ যৌবন, আর তিস্তা বাসি পেলো বন্যা ও প্লাবন। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তার তীরবর্তি ইউনিয়নগুলো এখন ভাসছে তিস্তার সেই যৌবনের পানিতে। গত দু’দিনের ভারী বর্ষণ ও উজানের পানিতে তিস্তার পানি অসাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। পানিবন্দী মানুষেরা পার্শ্ববর্তী বাধ গুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন।
শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার কোলকোন্দ, মর্ণেয়া, আলবিদিতর, লোহানী, লক্ষিটারী, গজঘন্টা ও সদর ইউনিয়নের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। তিস্তার তীরবর্তী বাধসহ পাশ্ববর্তী এলাকা গুলোতে আশ্রয় নিয়েছেন পানিবন্দীরা। কোলকোন্দ ইউনিয়নের তিস্তার বাধ ভেঙ্গে যাওয়ায় চিলাখাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীর গর্ভে যেতে বসেছে। স্থানীয়রা বালু’র বস্তা ফেলে বিদ্যালয়টি রক্ষার শেষ চেষ্টা চালাচ্ছেন।
গঙ্গাচড়া উপজেলা জাপার সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল আলম জানান, পানিবন্দী মানুষের সাহায্যার্থে এখন পর্যন্ত সরকারীভাবে কোন ত্রাণ দেয়া হয়নি। প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি লোকজন তাদের গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। পানির নিচে ডুবে গেছে সদ্য রোপণ করা জমির আমন ধানের খেত, নষ্ট হয়েছে সবজি ও মরিচ খেত। চারদিকে পানি আর পানি। লোকজন ও পশু-পাখি অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টি আর উজানের থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে তিস্তা নদীর পানি। কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টি আর উজানের ঢলে শুক্রবার সকাল থেকে পানি বাড়তে থাকে। এতে তিস্তার আশপাশের এলাকাসহ নীলফামারী, লালমনিরহাটের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব মুহাম্মদ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি শনিবার দুপুরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শণ করেন। এসময় তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের জানান, বর্ন্যা মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে সরকার। নদীর গর্ভে যেতে বসা চিলাখাল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বালুর বস্তা দিয়ে রক্ষা করা হয়েছে বলেও মন্ত্রী জানান।