আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

কুড়িগ্রামে ভুটানিজ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আলোর মুখ দেখতে বসেছে

 width=
 
শিরোনাম: রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর       কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি      

 width=
 

নারায়নগঞ্জ সিটি থেকে রংপুর সিটি: কোন পথে হাঁটবে আওয়ামীলীগ?

শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭, রাত ০৯:৩০

মহিউদ্দিন মখদুমী

আত্মবিশ্বাসী মেয়র ঝন্টু ভোটের রাজনীতিতে এগিয়ে। যেমনটা নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভি। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত দলীয় প্রতিকে প্রথমবার নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনের আগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা করে সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নের জন্য আইভিকে বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে প্রস্তাবনা পাঠিয়ে ছিল। নিজের নাম প্রস্তাবনায় না যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন আইভি। আওয়ামী লীগ অনেক বড় দল। বাংলাদেশের এমন কোনো জেলা নেই, যেখানে কম-বেশি নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা নেই। এ চিন্তা করে তিনি নারায়ণগঞ্জ সিটির মেয়র পদে মনোনয়ন চেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন করেন। ২০১৬ সালের ১৮ নভেম্বর বিকেলে আইভিকে ঢাকায় ডেকে পাঠানো হয়। সন্ধ্যার মিটিংয়ে মনোনয়ন বোর্ডে থাকা সকল সদস্য আইভির দক্ষতা ও জনপ্রিয়তার পক্ষে মত দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইভিকে সফল মেয়র হিসাবে উল্লেখ করে তাকে মনোনয়ন প্রদানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড নাসিক নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসাবে আইভীকেই বেছে নেন। কথা রেখেছেন আইভি। যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। উন্নয়নের পক্ষে রায় দিয়েছে নারায়গঞ্জবাসী। ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর নির্বাচনে ৮৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয় হয়েছে নৌকার, বিজয় হয়েছে আইভির। এখন তিনি কাজ করছেন সরকারের মিশন ও ভিশন বাস্তবায়নে।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নারায়গঞ্জ সিটি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিজয় লাভ ছিল সরকারের জনপ্রিয়তা ও জনগণের আস্থার বিজয়। নারায়গঞ্জ সিটি নির্বাচনে নৌকার বিজয়, আইভির জয় দেশের এই স্থিতিশীল উন্নয়নের রাজনৈতিক ধারায় একটি গভীর ছাপ ফেলেছে। যা এখনো খুব স্পষ্ট। অন্যদিকে ৩০ মার্চ ২০১৭ কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে নৌকার পরাজয়, সীমার পরাজয় আওয়ামীলীগের উপর আস্থাশীল দেশের জনগণের মনে একটি গোপন বেদনার সৃষ্টি করেছে। যার ক্ষত রয়ে গেছে। দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও আওয়ামীলীগের উপদেষ্টাগণ এ ব্যাপারে একমত যে, কুমিল্লার আফজাল-বাহার পরিবারের দ্বন্দ্ব নয় বরং কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী সিলেকশনে ভুল ছিল। একজন ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কতটুকু জনপ্রিয়তা থাকে? সীমা ছিল সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর। যার কারণে বিএনপির প্রার্থী সাক্কু গতবার আফজালকে এবার তার কন্যা সীমাকে পরাজিত করতে পেরেছে।

এ বছরই দেশের ৭টি সিটিতে নির্বাচন হবে। সবার আগে রংপুর সিটির ভোট। ২০১৮ সালে একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৭ সিটির ভোট আওয়ামীলীগ সরকারের উন্নয়ন ধারা চলমান রাখার জন্য জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের নীতি নির্ধারকগণ নিশ্চয়ই বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন। ভাবনায় রংপুর আমরা কিন্তু তাই স্বার্থপরের মতো ভাবছি, দেশের ৬ সিটির চেয়ে রংপুর সিটি নির্বাচন সবচেয়ে বেশী, অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ রংপুরকে উন্নয়নের আতুর ঘর থেকে বের করে এনেছে এই আওয়ামীলীগ সরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে এসেছে রংপুর বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিন একাডেমী, চারলেনের সড়কসহ অনেক কিছু। অপেক্ষায় আছে রংপুর উন্নয়নের আরও কয়েকটি মেগা প্রকল্প। আওয়ামীলীগ সরকার ছাড়া রংপুরের উন্নয়ন কোন সরকার করেনি। করার পরিকল্পনাও ছিল না। উন্নয়ন চাহিদার কথা মাথায় রেখে একাদশ সংসদ নির্বাচনে রংপুর বিভাগের ৩৩টি সংসদীয় আসন আওয়ামীলীগকে উপহার দিতে প্রস্তুত রংপুর বিভাগের জনগণ। এর শুরুটা করতে হবে আসন্ন রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের জয়লাভ করার মাধ্যমে। রংপুর সিটিতে নৌকার বিজয় বাকী ৬ সিটিসহ সংসদ নির্বাচনে পজিটিভ ইফেক্ট তৈরি করতে পারে।

আসন্ন রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে দেড় ডজন প্রার্থী আওয়ামীলীগের। রংপুর বিভাগ জুড়ে “জেগে উঠেছে আওয়ামীলীগ” এটি জ্বলজ্বল করা উদাহরণ। শুভ ইঙ্গিত আগামী দিনের। রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের বাইরে ব্যক্তি ইমেজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কথা হলো, রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কে, কোন প্রার্থী আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন পাবার অধিকার কিংবা যোগ্যতা রাখেন? এমন প্রশ্নে তৃনমূলের জনগণ বলেন,“আওয়ামীলীগ ঝন্টুরে মনোনয়ন না দিলে বেঈমানি হবে। ব্যক্তি ঝন্টুর উন্নয়ন দক্ষতা ও জনপ্রিয়তা আছে। নতুন ভোটার, উন্নয়ন সমর্থক ভোটার ও সংখ্যালঘু ভোটার এই তিন শ্রেণীর ভোটার ঝন্টুর জন্য রিজার্ভ। আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড যদি মেয়র ঝন্টুর হাতে নৌকা তুলে দেয় তবে, জনপ্রিয়তা, উন্নয়নের জোয়ার ও সাংগঠনিক শক্তি এই তিন কারণে রংপুর সিটিতে নৌকার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।”

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিংবা আওয়ামীলীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড অথবা রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা কি ভাবছেন? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ! রংপুরের সকল উন্নয়নের চিত্রপট মুছে দেবেন কি? কৃতিত্ব তুলে দেবেন কি অন্য কারো হাতে? রংপুরকে নিজ হাতে ধ্বংস করবেন, নাকি উন্নয়নের গতিতে রেখে দেবেন? এটি আপনার মানবিক চিন্তার ব্যাপার। কারণ রংপুরের উন্নয়ন কাণ্ডারি, অভিভাবক হিসেবে আপনার দিকে চাতক পাখির মতো উন্নয়নের পিপাসার্ত চোখে তাকিয়ে থাকতে হয় আমাদের।

রংপুরের উন্নয়ন কর্মী ও রংপুরবাসী উন্নয়ন চিন্তায় স্বার্থপরের মতো মনে করেন, রংপুর সিটিতে নৌকার পরাজয় হলে উন্নয়নের পরাজয় হবে। যার প্রভাব পড়তে পারে রংপুর বিভাগের ৩৩টি সংসদীয় আসনে এবং বাকী ৬ সিটি নির্বাচনে। কুমিল্লা সিটিতে নৌকা প্রতীকের পরাজয়ের রেশ কাটাতে রংপুর সিটিতে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এই নিশ্চয়তা তখনই নিশ্চিত হবে যখন যোগ্য, দক্ষ, জনপ্রিয়তার মানদণ্ডে সেরা প্রার্থীর হাতে নৌকা প্রতীক তুলে দেয়া হবে। তাহলে কি করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামীলীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড এবং রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা? নারায়নগঞ্জ সিটি নির্বাচনের সাফল্য নাকি কুমিল্লার পরাজয় কোন পথে হাঁটবে আওয়ামীলীগ? অপেক্ষা করছি দেখার জন্য। শুধুই অপেক্ষা।

লেখক: সাংবাদিক, দৈনিক মানবকন্ঠ,রংপুর অফিস।

মন্তব্য করুন


 

Link copied