আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

রাজধানীর বনানীর আগুনে নিহত রুমকির বাবার সঙ্গে শেষ ফোনালাপ

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০১৯, রাত ০৮:২৫

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ২৯ মার্চ॥ ঢাকার অভিজাত বনানী এলাকার কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ের ৩২ নম্বর হোল্ডিংয়ের ২৩ তলা এফ আর টাওয়ারের গতকাল বৃহস্পতিবার(২৮ মার্চ) দুপুরে বিধ্বংসী অগ্নিকান্ডে পুড়ে মারা যাওয়ার আগে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গ্রামে বাবা আশরাফ হোসেনের সাথে মোবাইলে কথা হয় রুমকি আক্তারের (৩০)। “বাবা” চারিদিকে আগুন আর ধোয়া। আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে বাবা। আমি আর হয়তো বাঁচবোনা বাবা। তোমার জামাইকেও খুঁজে পাইনি। তার মোবাইলও বন্ধ। বাবা আমি খুব কস্ট পাচ্ছি-আমি তোমাদের কাছে কোন ভুল করে থাকলে আমাকে ক্ষমা করে দিও বাবা। আমার জন্য তোমরা সকলেই দোয়া করো বাবা। এরপর মোবাইলের লাইনটি ডিসকানেন্ট হয়ে যায়। এই কথাগুলো ঠিক এ ভাবে মোবাইলে কল করে বাবাকে বলেছিল রুমকি আক্তার (৩০)। রুমকি আক্তারের এই কথা গুলোর রেকর্ড ভাসছিল এলাকায়। ওই ঘটনায় রুমকির স্বামী মাকসুদুর রহমান জেমি (৩২) ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে নিহত হয়। মর্মান্তিক শুধু নয় রিতিমত হৃদয়বিদালক। রুমকির মা রিনা বেগমের মৃত্যুর ৫ মাস যেতে না যেতে রুমকিও পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিলেন। আজ শুক্রবার (২৯ মার্চ) বেলা ১২টায় রুমকির মরদেহ নিয়ে আসা হয় জলঢাকা উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের চেংমারী বিন্নাকুড়ি আদর্শপাড়া গ্রামে। সেখানে দেখা যায় পরিবারের আহাজারি। চলছে শোকের মাতম। উপজেলার দুরদুরান্ত এলাকা হতে হাজারো নারী পুরুষ ছুটে আসে এখানে। জুম্মার নামাজ শেষে বেলা তিনটায় জানাজা শেষে মা রিনা বেগমের পাশে দাফন করা হয় রুমকিকে। পারিবারিক সুত্র মতে রুমকি ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা ছিলেন। জানা যায়,জলঢাকা বিন্নাকুড়ি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, জলঢাকা রাবেয়া কলেজ থেকে এইচএসসি, রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে ব্যবসা বানিজ্যে অনার্স এবং ঢাকা তিতুমির কলেজ হতে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে রুমকি।ঢাকায় মাস্টার্সে পড়াকালীন হেরিটেজ এয়ার এক্সপ্রেস ট্রাভেল এজেন্সিসে চাকুরি নেয় রুমকি। একই এজেন্সিতে চাকুরীরত ঢাকা গেন্ডারিয়া থানার আলমগঞ্জ ইউনিয়নের মৃত. মিজানুর রহমানের ছেলে মাকছুদার রহমানের(৩২) সাথে পরিচয়ের পর একটি ভাল সর্ম্পক গড়ে উঠে তাদের মধ্যে। পারিবারিকভাবে তিন বছর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে হয় তাদের। গত ১৭ মার্চ ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলো রুমকি। গত চারদিন আগে ফিরে যায় ঢাকায়। বলে গিয়েছিল রোজার ঈদে আসবে। আগুন লাগার পর রুমকি তার বাবাকে মোবাইল করে ওই কথা গুলো বলেছিল। ব্যবসায়ী আশরাফ আলীর দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে রুমকি আক্তার সবার ছোট ছিল। রুমকির চাচা আলহাজ্ব সৈয়দ আলী জলঢাকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। বড়ভাই রফিকুল ইসলাম রকি বাবার সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত। ছোট ভাই রওশন আলী রনি গ্রামের বিণ্যাকুড়ি স্কুলে শিক্ষকতা করে। এই শিক্ষক ভাই জানান, মাস্টার্সে পড়া কালীন ওই ট্রাভেলস কো¤পানীতে চাকুরী নেয় বোন রুমকি। কোম্পানীর মতিঝিল প্রধান অফিসে কাজ করতো তখন থেকে।৩/৪ দিন আগে মতিঝিলের অফিস মেরামত কাজ করায় তাকে বনানী অফিসে স্থানান্তর করে। সেখানে স্বামী মকছুদারসহ চাকুরী করছিলো। আগুনের ঘটনায় তারা দুইজনই মারা গেলো। ঘটনার দিন রাত নয়টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রুমকির লাশ ও ইউনাইট হাসপাতালে রুমকির স্বামী লাশ সনাক্ত করা হয়। মৃতদেহ নিয়ে আসতে বাবা আশরাফ হোসেন, মামা রউফুল ইসলাম ও ফুফা আতাউর রহমান । তারা ঘটনার দিন বিকাল ৬টায় সৈয়দপুর হতে বিমানে ঢাকায় গিয়েছিল। উদ্দেশ্যে বিমানে রওনা হন। রুমকির চাচা জলঢাকা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ আলী জানান, ৫ মাস আগে মারা যায় রুমকির মা রিনা বেগম। আজ আমরা হারালাম মেয়ে এবং জামাই। রুমকির বাবা জানান,তিন বছরের সংসারে প্রথমবারের মত আমার মেয়ে রুমকি সন্তান সম্ভবা ছিলো। ভেবেছিলাম নাতনী আসছে। নাতনীকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল আমার। ৫ মাস আগে রুমকির মাকে হারিয়েছি। আজ মেয়েকেও হারালাম। এক নিমিষেই আমার সব শেষ হয়ে গেল। আজ বাবা হয়ে মেয়ের মরদেহ আমাকে ঢাকা হতে গ্রামে বহন করে নিয়ে আসতে হলো। বুকটা যেন ভেঙ্গে যাচ্ছে- আল্লাহ ওদের জান্নাতবাসী করুক।

মন্তব্য করুন


 

Link copied