আর্কাইভ  শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪ ● ৭ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শনিবার ● ২০ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: নীলফামারীতে গোপন বৈঠক থেকে জামায়াতের ৩ নেতা গ্রেপ্তার       পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ       

 width=
 

পাবনায় প্রতারক চক্র গ্রেফতার

বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০১৯, দুপুর ০২:৩০

গত জানুয়ারী/২০১৯ হতে জুন/২০১৯ পর্যন্ত ভূক্তভোগী মামলার বাদী মাহবুব হক এর “মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশ” এর এবং তার রুপালী ব্যাংক লিঃ, ঈশ্বরদী শাখার সিসি একাউন্টের দেখাশোনা করাকালে তারই কর্মচারী মোঃ মনজুর রহমান (ডিস্টিবিউশন ম্যানেজার) মোঃ ইমন হোসেন (২৩) (এসআর) দু’জন মিলে প্রায় ৩৩,৩৬,০০০/- (তেত্রিশ লক্ষ ছত্রিশ হাজার) টাকা আত্বসাৎ করে। উক্ত প্রতারণার ঘটনায় ভূক্তভোগী ঈশ^রদীর মোঃ মাহবুব হক থানায় অভিযোগ দিলে ঈশ্বরদী থানার মামলা নং-৫৪, তারখি-২২/০৬/২০১৯ খ্রিঃ, ধারা-৪০৬/৪২০ পেনাল কোড রুজু হয়। থানা পুলিশ তদন্ত করে কোন কুল কিনারা করতে না পারায় উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ মামলার তদন্তভার পিবিআই, পাবনা জেলার উপর অর্পণ করে।

পিবিআই, পাবনা জেলা প্রধান মামলাটি তদন্তের নির্দেশনা পেয়ে এসআই মোঃ সবুজ আলীর উপর তদন্তভার অর্পণ করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ সবুজ আলী কিছুদিনের মধ্যেই তথ্য-প্রযুক্তি সহায়তায় মামলার রহস্য উদঘাটন করে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদেরকে সনাক্ত করে। পিবিআই, পাবনা জেলা প্রধান অতিরিক্তি পুলিশ সুপার জনাব মোঃ তরিকুল ইসলাম এর সার্বিক তত্তাবধানে মূল আসামীকে গ্রেফতারের জন্য একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়। মামলার মূল আসামীকে গ্রেফতার করার জন্য বিভিন্নস্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তারই অংশ হিসেবে গত ২০/০৮/২০১৯ খ্রিঃ সময় অনুমান ভোর অনুমান ০৪.০০ ঘটিকায় ঢাকার মিরপুর এলাকা হতে আসামী ১। মোঃ ইমন হোসেন (২৩), পিতা-মৃত বাবলু রহমান, সাং-পুরাতান ঈশ^রদী (রিফুজীপাড়া এয়ারপোর্ট মোড়), থানা-লালপুর, জেলা-নাটোরকে এবং অপর আসামী ২। মোঃ মনজুর রহমান (৩৬), পিতা-মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, সাং-সাদীপুর, থানা-লালপুর, জেলা-নাটোরকে গত ২০/০৮/২০১৯ খ্রিঃ বিকাল ১৭.০০ ঘটিকায় ঈশ^রদী পোস্ট অফিস মোড় হতে গ্রেপ্তার করে। পিবিআই, পাবনা জেলা প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ তরিকুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ সুবজ আলীর সাথে কথা বলে জানা যায় যে, এজাহারনামীয় নামীয় আসামী মোঃ ইমন হোসেন ২০১৬ খ্রিঃ হতে মামলার বাদী মাহবুব হক এর “মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশ” এর ঈশ^রদী ও আটঘরিয়া উপজেলার এসআর হিসেবে চাকুরী করত এবং তদন্তেপ্রাপ্ত আসামী মোঃ মনজুর রহমান ২০১৫ খ্রিঃ হতে মাহবুব হক এর অধীনে “মোবাইল ব্যাংকিং শিওর ক্যাশ” এর পাঁচ (০৫) উপজেলার ডিস্ট্রিবিউশন ম্যানেজার হিসেবে চাকুরী করত।

আসামী ইমন হোসেন ও মনজুর রহমান বাদীর রুপালী ব্যাংক লিঃ, ঈশ^রদী শাখার দুটি একাউন্টের দেখাশোনা করত। আসামী মনজুর রহমানের মামলার বাদীর সিসি একাউন্ট থেকে বিভিন্ন সময় টাকা উঠিয়ে ধারের টাকা হিসেবে জানুয়ারী/২০১৯ হতে জুন/২০১৯ পর্যন্ত প্রতি মাসে ২/৩ বার বিভিন্ন অংকের টাকা তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ঈশ্বদীর হীরক ও বদরুলকে প্রদান করত। এভাবে মনজুর নিজে ও তার নির্দেশে আসামী ইমন হোসেন হীরককে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা প্রদান করে এবং মনজুর নিজে বদরুলকে প্রায় ৮ লক্ষ প্রদান করে। তদন্তেকালে জানা যায় যে, হীরক ও বদরুল তার বন্ধু মনজুররের নিকট বিভিন্ন অংকের টাকা গ্রহণ করে প্রতি মাসেই তা পরিশোধ করত। উক্ত পরিশোধের টাকা হতে কিছু টাকা মনজুর মামলার বাদীর সিসি একাউন্টে জমা দেয়। কিন্তু আসামী মনজুর তার বন্ধু হীরক ও বদরুলের নিকট হতে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা গ্রহণ করলেও বাদীর সিসি একাউন্টে জমা না দিয়ে আত্বসাৎ করে নিজ প্রয়োজনে ব্যবহার করে। বিষয়টি আসামী ইমন হোসেন আসামী মনজুরকে জানালে সে বলে যে, তার বন্ধু হীরক একটি সিসি লোন করবে সেখান থেকে টাকা নিয়ে সে তা বাদীর সিসি একাউন্টের সাথে সমন্বয় করবে। এক পর্যায়ে আসামী মোঃ মনজুর রহমান ও আসামী মোঃ ইমন হোসেন রুপালী ব্যাংক লিঃ, ঈশ^রদী শাখায় গিয়ে সেকেন্ড ম্যানেজার কামরুল ও ম্যানেজারের সাথে কথা বলে বাদীর একাউন্টের এস,এম,এস এলার্টের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে।

গত ২০/০১/২০১৯ খ্রিঃ এর পর হতে বাদীর মোবাইল নম্বরে উপরোক্ত ব্যাংক হিসাব নম্বরের কোন এসএমএস যায়নি। কিন্তু বাদীর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে আসামীদের ব্যবহৃত নম্বর হতে ভূয়া এস,এম,এস আসত যা ব্যাংকের ব্যবহৃত নয়। আসামী মোঃ ইমন হোসেন ও আসামী মনজুর রহমান বাদীকে প্রতারণামূলকভাবে বাদীর মোবাইল নম্বরে যেটি উভয় আসামী অফিসে ব্যবহার করত। আসামীরা বাদীকে ভূয়া মেসেজ পাঠালে বাদী মনে করে যে, ব্যাংক হতে উক্ত মেসেজ তার কাছে পাঠানো হয়। বাদী রুপালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে বিষয়টি অবহিত করলে সে জানায় যে, নেটওয়ার্কের সমস্যাজনিত কারণে তার মোবাইল নম্বরে এস,এম,এস যায়নি।

বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বাদী ব্যাংক ম্যানেজারকে বললেও সে তাতে কর্ণপাত করেনি। সর্বশেষ গত ২০/০৬/২০১৯ খ্রিঃ আসামী মনজুর রহমান আসামী ইমন হোসেনকে বাদীর শিওর ক্যাশের একাউন্ট হতে ৪,২৪,০০০/- (চার লক্ষ চব্বিশ হাজার) টাকা উত্তোলন করে তার মনোনীত ব্যক্তিকে দিতে বললে সে ব্যাংক হতে উক্ত টাকা উত্তোলন করে এবং তার নিকট থাকা বাদীর টাকাসহ মোট ৪,৭৩,০০০/- টাকা সঙ্গে করে যশোরে পালিয়ে যায়। পরবর্তিতে তার দুর সম্পর্কের এক প্রবাসী মামার মাধ্যমে এক দালালের মাধ্যমে বিদেশের পালানোর জন্য ঢাকায় আত্বগোপন করে থাকে। কিন্তু আসামী মনজুর রহমান সু-কৌশলে হোয়াইট কলার ক্রিমিনালের মত মামলার বাদীর সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে তার ব্যবসায়িক পরিচালনা করে। উপরোক্ত আসামীদ্বয় দীর্ঘ পরিকল্পনার মাধ্যমে বাদীর সরলতার সুযোগ নিয়ে তাকে আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত করে নিজেরা লাভবান হওয়ার জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা আত্বসাৎ করেছে মর্মে পর্যাপ্ত তথ্য-নির্ভর সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট গ্রেফতারকৃত উভয় আসামী মামলারা বাদীর মোট ৩৩,৩৬,০০০/- টাকা আত্বসাতের কথা স্বীকার করেছে।

পিবিআই, পাবনা জেলা প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জনাব মোঃ তরিকুল ইসলাম ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মোঃ সবুজ আলী জানান গ্রেপ্তারকৃত মূল আসামী ঘটনার পর থেকেই কৌশল অবলম্বন করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় পলাতক ছিল। অনেক কৌশল অবলম্বন করে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে । তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে এবং তারা বিজ্ঞ আদালতে স্বেচ্ছায় বাদীর বিপুল অংকের টাকা আত্বসাতের বিষয়ে ফৌঃকাবিঃ ১৬৪ ধারায় স্বীকরোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied