আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ● ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৬ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি       রংপুর বিভাগে আসছেন ভূমিমন্ত্রী       রংপুর জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের নব নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত       রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় বৃষ্টির জন্য ইস্তিস্কার নামাজ আদায়       যুদ্ধ নয়, আলোচনায় সমাধান সম্ভব : প্রধানমন্ত্রী      

 width=
 

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় ছিটমহলগুলোতে মহান বিজয় দিবস পালিত

সোমবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১২, রাত ১২:০৫

নিজস্ব সংবাদদাতা,নীলফামারী॥ ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের সাথে নিয়ে সব বয়সের নারী পুরুষ আনন্দ উৎসবে মেতেছে। তাদের কণ্ঠে সুর আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি। এরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় ছিটমহলের বাসিন্দা। আনন্দ উৎসবের তাদের মাঝে শ্লোগান ছিল জামায়াত শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধ করন ও যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসীর পাশাপাশি ছিটমহল বিনিময় বাস্তবায়নের দাবি। রবিবার মহান বিজয় দিবসে বাংলাদেশের অভ্যন্তরের নীলফামারীতে ৬টি ভারতীয় ছিটমহলে পত পত করে উড়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। সকালে একযোগে সকল ছিটমহলে তারা উত্তোলন করে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় ছিটমহল-বাসী জাতীয় সঙ্গীত আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি পরিবেশন করে। সেই সাথে ছিটমহলে অস্থায়ী স্মৃতি সৌধ তৈরি করে পু¯পমাল্য অর্পণ করেন ছিটমহল-বাসী। এসব ছিটমহলে বিজয়দিবস উপলক্ষে খেলাধুলা পুরস্কার বিতরণ,আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল উৎসব মুখর পরিবেশে। ডোমার উপজেলায় ২ নম্বর ছিটমহল কোটভাজনীর চেয়ারম্যান আলতাফুর রহমান,৩ নম্বর ছিটমহল বালাপাড়ার ছিটমহলের চেয়ারম্যান সফিকুল ইসলাম কাজল ছিটমহলের বোতলগঞ্জ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এর সাথে ছিটের বাসাবাড়িতে জাতীয় পতাকা পতপত করে উড়তে থাকে। ছিট-বাসী জানায় তারা একই সাথে নীলফামারীর সাথে একীভূত ৬টি ছিটমহলে বিজয় দিবস পালন করছেন। ডিমলা উপজেলায় ২৮ নম্বর বড়খানকীবাড়ী খারিজা ছিটমহলের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন (৬৩) ,২৯ নম্বর তালুক বড়খানকী খারিজা ছিটমহলের বাসিন্দা বাচ্চু (৪১) ও মোজাম্মেল (৪৬),৩০ নম্বর বড়খানকি গিদালদহ ছিটমহলের বাসিন্দা নূর হোসেন (৪১) ও ৩১ নম্বর ছিটমহল নগর জিগাবাড়ির বাসিন্দা অতুল চন্দ্র রায় বলেন আমরা ছিটমহলে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে বিজয় দিবস পালন করছি। তিনি বলেন আমরা এই বিজয় দিবসের মাধ্যমে বাংলাদেশী হিসাবে মুক্ত হতে চাই। এ সময় তারা আরও বলেন আমরা গত তিন বছর ধরে ছিটমহলে অভ্যন্তরে বিজয়দিবস ও স্বাধীনতা দিবস পালন করে আসছি এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করছি। আমরা বাংলাদেশী নাগরিক হিসাবে মনে করি। দুদেশের সরকার প্রধানদের কাছে শুধু আমাদের একটিই অনুরোধ আমাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দিন।

 নাগেশ্বরী: বাঁশ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে উদ্দীপনা উৎফুল্লের মধ্য দিয়ে দাশিয়ারছড়া ছিটমহল-বাসীরা মহান বিজয় দিবস পালন করেছে। এ সময় ১৯৭৪ সালের ইন্দিরা-মুজিব ছিটমহল বিনিময় চুক্তির বাস্ত

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অভ্যন্তরে ভারতীয় দাশিয়ারছড়া ছিটমহল-বাসীরা সম্মিলিত ভাবে কালির হাট নামক স্থানে বাঁশ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ছয়টায় শহীদ মিনারের পাদদেশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচীর সূচনা করেন দাশিয়ার ছড়া ছিটমহল ইউনিটের সভাপতি আলতাফ হোসেন। সাড়ে সাতটায় বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ ইউনিটের সভাপতি মইনুল হক শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় ছিটমহলের শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের মানুষ ফ’ল হাতে নিয়ে শহীদ মিনার চত্বরে আসতে থাকেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ফুলে-ফুলে ঢেকে যায় বাঁশের তৈরি শহীদ মিনার। তাদের অন্যান্য কর্মসূচীর মধ্যে ছিল মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির বাংলাদেশ ইউনিটের সভাপতি মইনুল হক সাংবাদিকদের জানান, শুধু দাশিয়ারছড়া ছিটমহলেই নয়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতীয় এক’শ এগারটি ছিটমহলের মানুষ বাংলাদেশের বিজয় দিবস পালন করছেন। তিনি আরও বলেন, ১৯৭৪’র ইন্দিরা-মুজিব চুক্তির আলোকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতীয় ছিটমহল-বাসীরা ২০০৯ সালে স্ব-প্রণোদিত হয়ে ভারতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হওয়ার ঘোষণা দেন। দীর্ঘদিনের বন্দি জীবনের ইতি টানতে তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মন্তব্য করুন


 

Link copied