আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

করোনায় বিধি নিষেধ মেনেই নীলফামারীর ৮৪১ মন্ডপে হবে দুর্গাপুজো

সোমবার, ১৯ অক্টোবর ২০২০, দুপুর ১২:৪৬

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ শারদোৎসব দরজায় কড়া নাড়ছে। এই শরতে সনাতন ধর্মে অবশ্যই আনন্দের মেঘ ভাসবে। ঢাকে কাঠি পড়বে। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সংকটকালিন বিধিনিষেধ মেনেই নীলফামারী জেলায় সনাতন ধর্মের সর্ববৃহৎ শারদীয় দূর্গাপুজো আয়োজন চলছে। ষষ্ঠীর মাধ্যমে আগামী ২১ অক্টোবর দূর্গা পুজোর উৎসব ঘিরে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান(বিপিএম,পিপিএম) সনাতন ধর্মের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেলেছেন। আজ সোমবার(১৯ অক্টোবর/২০২০) নীলফামারী পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি এ্যাডঃ অক্ষয় কুমার রায় জানান, এই বছর নীলফামারী ছয় উপজেলা ও চার পৌরসভা এলাকায় দুর্গাপূজা হবে ৮৪১টি মন্ডপে। সদরে ২৭৩, ডোমার উপজেলায় ৯৮, ডিমলা উপজেলায় ৭৫, জলঢাকা উপজেলায় ১৭৫, কিশোরীগঞ্জ উপজেলা ১৪১, সৈয়দপুর উপজেলায় ৭৯টি মন্ডপ রয়েছে। তিনি বলেন, গতবছর পুজা অনুষ্ঠিত হয় ৮৮০টি মন্ডপে, এবার ৩৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। করোনা কালিন এই সময় সরকারের বিধি নিষেধ মেনেই উৎসব পালন করতে হবে। এদিকে প্রতিটি পুজামন্ডবের জন্য সরকারী ভাবে ৫০০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়। তিনি আরো বলেন, প্রতিমা তৈরী রঙ তুলির কাজ শেষ হয়েছে। করোনা মহামারীর কারণে এবারে দুর্গাপূজার প্রতিমা বিসর্জনকালে কোনো শোভাযাত্রা থাকছেনা। নির্দেশিকা অনুযায়ী, পুজো প্যান্ডেলের ভিতরে বা বাইরে মেলা, খাবারের স্টল, নাগরদোলা, প্রদর্শনী ইত্যাদি থাকছেনা। পুজোর জায়গা, সেখানে দূরত্ব বজায় রাখার সুযোগ-সুবিধা রাখতে হচ্ছে। ফেসকভার কিংবা মাস্ক পরে আসতেই হবে। রাখতে হবে স্যানিটাইজার, থার্মাল স্ক্রিনারও। কোথাও বেশি ভিড় বা বড় জমায়েত চলবে না। পুজোমন্ডবে প্রবেশ ও বাহির পথ পৃথক করা হয়েছে। প্রতিমা কারিগর তারক নাথ বলেন, অন্য বছর বড় বড় প্রতিমা তৈরী করতাম। এবার করোনাকালিন প্রতিমার সাইজ ছোট করা হয়েছে। কাঁদা লাগানোর কাজ শেষ, রঙ তুলির কাজেও শেষ। উন্নত রং লাগিয়ে আধুনিক মানের তৈরী করা হয়েছে এসব প্রতিমা। কিছু কিছু মন্ডপের রং তুলির কাজ এখনও চলছে। খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের সন্যাসী তলা গ্রামের মৃৎ শিল্পী রমানাথ চন্দ্র রায় বিকাশ চন্দ্র রায়, কৃষ্ণ চন্দ্র রায়, সন্তোশ কুমার রায় সহ অনেকে প্রতিমায় রঙ তুলির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের বৈঠকে সনাতন নেতাদের জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতির কারণে বিধিনিষেধ কড়াকড়ি করা হয়েছে।জোর দেওয়া হয়েছে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা-সহ একাধিক বিষয়ে। বৈঠকে আরো জানানো হয়, এবারের পুজো যদি একটু অনুজ্জ্বলও হয়, সেটাকে আপনারা গৌরব হিসেবে দেখুন। এই উৎসবে মানুষ পুজোমন্ডপে যাতে কম আসেন, কম সময় থাকেন, দূর থেকে প্রতিমা দেখেন, এ সব সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব আমাদের সকলের কাঁধে তুলে নিতে হবে। উৎসবের অঙ্গনটাকে যদি আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আর সচেতনতার আখড়া বানাতে পারি একমাত্র তা হলেই এবার আপনার পুজো সেরা পুজো হবে। মন্ডপে হুড়োহুড়িতে নয়। বিশেষ ভাবে দায়িত্ব নিতে হবে কম বয়সিদের। এরাই উৎসবে মাতে বেশি, সেটাই স্বাভাবিক। এ বছরটা যে অন্য রকম, তা যদি দামাল কৈশোর ও যৌবনের মাথায় না থাকে, তবে তাদের ণিকের ফুর্তি বাড়িতে-থাকা মা মাসি মেসোদের অসুস্থতা ও জীবনহানির কারণ হতে পারে।মনে রাখতে হবে, আমাদের জীবন এখন কাঁথা-মুড়ি দিয়েই পথ হাঁটছে। কোনও শিথিলতার জায়গা নেই সেখানে। খানিকটা সাফল্য এসেছে মাত্র, কিন্তু এই সময় হতাশা আর অদৃষ্টবাদী মানসিকতায় ডুবে আমরা যদি হুলোড়ে গা ভাসাই, তা হলে সেটা প্রায় জেতা লড়াইয়ে হেরে যাওয়া হবে। তাই আশাবাদী থেকে, শৃঙ্খলাবদ্ধ থেকে পুজোর দিনগুলো কাটিয়ে দিলে জীবন থাকবে, জীবিকা থাকবে, আনন্দ থাকবে। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এসএ হায়াত বলেন, গত বছর জেলায় ৮৮০টি মন্ডবে শারদীয় দূর্গা উৎসব হয়েছিল। এর অনুকুলে ৪২২ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এবার ৮৪১টি মন্ডবের বিপরীতে ৪২২.৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়েছে। তুলনামূলকভাবে কারোনার পরিস্থিতির মধ্যে ৩৯টি মন্ডব কমিয়েছে। সদর থানার ওসি (তদন্ত) মামুদ উন নবী বলেন, করোনা পরিস্থিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আগামী ২২ অক্টোবর থেকে প্রতিটি মন্ডবে একজন করে পোশাকধারী পুলিশ ও পাঁচজন করে আনসার নিয়োগ করা হবে। এ ছাড়াও গ্রাম পুলিশও সহযোগিতা করবে। যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে কঠোর নজরদারী ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান(বিপিএম,পিপিএম) বলেন, এবারে জেলায় ৮৪১টি পুজা মন্ডবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। একজন পোশাক ধারি পুলিশের সাথে পাঁচজন আনসার ও গ্রাম পুলিশ সহযোগিতা করবে। এছাড়াও বিজিবি ও র‌্যাব ২৪ ঘন্টা টহলে থাকবে। এ দিকে জেলার ছয় উপজেলায় পুজা মন্ডব গুলো গোয়েন্দা নজরদারীতে রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে এবার প্রতিমা বিসর্জন করতে হবে সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যার মধ্যে। বেশি রাত পর্যন্ত প্রতিমা বিসর্জন করতে পারবে না। এছাড়াও বিসর্জনে কেউ বক্স নিয়ে বের হতে পারবে না। তিনি বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পওে বিশেষ তদারকি করা হবে। আমরা এসব কিছু মেনে শান্তিপূর্ণ ভাবে পূজা করবো এটাই প্রত্যাশা করছি।

মন্তব্য করুন


 

Link copied