ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, স্টাফ রির্পোটার,নীলফামারী॥
নীলফামারীতে জমি থেকে আগাম আলু উত্তোলনে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এখানকার আগাম আলু জেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।
আগাম আলু চাষের জন্য বিখ্যাত নীলফামারী জেলার কিশোরীগঞ্জ ও জলঢাকা উপজেলা। দেশের আগাম আলুর সিংহভাগ উৎপাদন হয় এখানে। আগাম আমন ধান কর্তনের পর এখানকার কৃষকরা এক খন্ড জমিও পতিত রাখেন না। মাত্র ৫৫ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে উৎপাদিত সেভেন গ্র্যানুলা জাতের আগাম আলু চাষ করেছে এখানকার কৃষকরা। মাঠে এখন আগাম আলু তোলার ধুম পড়েছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও হয়েছে ভালো। শুরুতে দাম ভালো পাচ্ছে আলু চাষিরা।
আজ সোমবার(২৩ নভেম্বর/২০২০) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় একদিকে চলছে আলু উত্তোলনের কাজ, অন্যদিকে কেউ কেউ মৌসুমী আলু লাগানোর কাজে ব্যস্ত, আবার কেউবা তে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কিশোরীগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুরাকুটি গ্রামের আলু চাষি স্বপন বললেন, তিনি ৫০ শতক জমিতে আগাম আলু উৎপাদন করে পেয়েছেন ৭৮০ কেজি। যা ৮০ টাকা কেজি দরে ফসলের মাঠেই বিক্রি করেছেন। আগাম আলু আবাদে তার ২০ হাজার খরচ টাকা ব্যয় হলেও তিনি এই আলু বেচে পেয়েছেন ৬২ হাজার ৪০০ টাকা। এতে তার লাভ হয়েছে ৪২ হাজার ৪০০ টাকা।
জলঢাকা উপজেলার খুটামারা ইউনিয়নের খালিশা খুটামারা গ্রামের নুরুজ্জামান (৪০) বলেন, আমি ৪ বিঘা জমিতে এবছর আলূ চাষ করেছি। আলুর বয়স এখন ৫৫ দিন হয়েছে। আরও ১০দিন পড়ে আলু তুলবো। এবার আলু দাম বেশ ভাল। তিনি বলেন, দুইদিন আগে দেড় বিঘা জমির আলু তুলে বিক্রি করেছি ৯০ টাকা কেজি দরে। ওই আলু একদিনের ব্যবধানে কমেছে ১০ টাকা কেজিতে।
কিশোরীগঞ্জ উপজেলার পোড়াকোট গ্রামের আলু চাষী লুৎফর রহমান (৪২) বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে এবার আলু চাষ করেছি। আগাম আলুর দাম ভালো থাকায় এক বিঘা জমির আলু বিক্রি করেছি ৮৫ টাকা কেজি দরে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা ক্ষেতে এসে নগদ টাকায় আলু নিয়ে যাচ্ছেন।
ব্যবসায়ী রোস্তম আলী জানান, নীলফামারীতে আগাম আলু উঠতে শুরু করেছে। প্রথমদিকে ১০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে আলু বিক্রি হলেও এখন আলুর প্রকার ভেদে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে ক্রয় করা হচ্ছে। আগাম আলু ট্রাকে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শষ্য) সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশের অন্যান্য জেলার আগেই নীলফামারীর আগাম আলু উঠে এবং আগাম বাজার ধরে লাভবান হন এখানকার কৃষকরা। চলতি বছরে এ জেলায় ২২ হাজার হেক্টর জমিতে আলু রোপনের লমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষমাত্রা প্রতি হেক্টরে ২৫.৩৬ মেট্রিকটন। এ জেলায় ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আগাম আলু উঠবে। এরপর ডিসেম্বর ও জানুয়ারী মাসে আলুর ভরা মৌসুমে বাম্পার আলু বেশী পাওয়া যাবে।