আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে আইন লঙ্ঘন করেই চলেছেন ভিসি

সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, বিকাল ০৬:০২

বেরোবি প্রতিনিধি: বিভাগীয় প্রধান নিয়োগে আইন লঙ্ঘন করেই চলেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। বিশ্ববিদ্যালয় আইন, বিধি-সংবিধি লঙ্ঘন করে যোগ্য ব্যাক্তিকে বাদ দিয়ে নিজের পছন্দের ব্যাক্তিকে একের পর এক বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভিসির বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে একাই কয়েকটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নিয়ে রাখার অভিযোগও রয়েছে ভিসির বিরুদ্ধে। ভিসি সার্বক্ষণিক ঢাকায় অবস্থান করার কারণে সেসব বিভাগে ভেঙ্গে পড়েছে একাডেমিক শৃঙ্খলা। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন ২০০৯ (২০০৯ সনের ২৯ নং আইন ) এর ২৮(৩) বিধি মোতাবেক- ‘যদি কোন বিভাগে অধ্যাপক না থাকেন তাহা হইলে ভাইস-চ্যান্সেলর সহযোগী অধ্যাপকের মধ্যে হইতে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পালাক্রমে একজনকে বিভাগীয় প্রধান নিযুক্ত করিবেনঃ তবে শর্ত থাকে যে, সহযোগী অধ্যাপকের নিম্নের কোন শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধান পদে নিযুক্ত করা যাইবে নাঃ আরও শর্ত থাকে যে, সহযোগী অধ্যাপক পদমর্যাদার কোন শিক্ষক কোন বিভাগে কর্মরত না থাকিলে, সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রবীণতম শিক্ষক উহার প্রধান হইবেন।’ কিন্তু এ আইনের কোন তোয়াক্কাই করছে না ভিসি কলিমউল্লাহ। আইন লঙ্ঘন কওে যোগ্য ব্যাক্তিকে বঞ্ছিত করে নিজের পছন্দের ব্যাক্তিকে দিচ্ছেন বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ, নয়তো নিজেই দখল করে থাকছেন বিভাগীয় প্রধানের পদ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৪ জানুয়ারি সফলভাবে লোকপ্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের মেয়াদ পূর্ণ করেন ওই বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক যুবায়ের ইবনে তাহের। এরপর আইন ও জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী বিভাগটির শিক্ষক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ বিভাগীয় প্রধান হওয়ার কথা থাকলেও অবৈধভাবে ভিসি নিজে বিভাগটির বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। নিয়োগ বঞ্ছিত শিক্ষক আসাদুজ্জামান ভিসির অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব অবস্থানে থাকার কারণে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি বলে মনে করছেন বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এর আগেও ২০১৭ সালেও ভিসি নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ঐ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের পদ দখল করে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি করেন। শিক্ষার্থীদের কঠোর আন্দোলনের মুখে পড়ে ভিসি বিভাগীয় প্রধানের পদ ছাড়তে বাধ্য হন। শুধু তাই নয় ভিসি বিভাগটির প্রধান থাকাকালীন সময়ে ওই বিভাগটির একজন শিক্ষক তার বিরুদ্ধে বিভাগের অর্থ তছরুপের লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়া জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের যোগ্য শিক্ষক থাকার পরেও সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বিভাগটির বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বও নিয়ে রেখেছেন ভিসি। মাসের পর মাস ভিসি ক্যাম্পাসে না থাকায় এক প্রকার গায়েবী ভাবেই চলছে বিভাগটি, বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর নিতে হয়রানির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। শুধু তাই নয় বিভাগটির প্লানিং কমিটিতে অবৈধভাবে একাই দুই সদস্যের পদ নিয়ে প্লানিং কমিটির অন্য সদস্যের স্বাক্ষর ছাড়াই নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন করে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে ভিসির বিরুদ্ধে। একই ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে। বিভাগটির একজন সহযোগী অধ্যাপক থাকা সত্ত্বেও সহকারী অধ্যাপক তানিয়া তোফাজকে অবৈধভাবে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী সহযোগী অধ্যাপক ড. বিজন মোহন চাকী বিভাগীয় প্রধান হওয়ার কথা থাকলেও গায়েবী কারণে তাকে নিয়োগ দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকে বৈধভাবে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বিভাগটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এদিকে ঢাকায় গিয়ে ভিসির সাথে ফটোসেশন না করায় একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের যোগ্য শিক্ষককে বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ না দিয়ে বিভাগটির অপর শিক্ষককে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভিসি কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে। ভিসির সাথে ওই শিক্ষকের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। অডিও ক্লিপ থেকে জানা যায়, ভিসি একাউন্টিং বিভাগের শিক্ষক উমর ফারুককে ফোন দিয়ে ঢাকায় তার সাথে ফটোসেশন করে নিয়োগ পত্র নেয়ার কথা বলেন। ঢাকায় গিয়ে নিয়োগ পত্র নেয়ার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন ওই শিক্ষক। এর পরপরই উমর ফারুককে বাদ দিয়ে একই বিভাগের শিক্ষক আমির শরিফকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেন ভিসি। অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগে তিন বছরের জন্য বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেয়ার আইন ও রীতি থাকলেও ভিসি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান নিয়োগে নিয়ম ভঙ্গ করে দুই বছরের জন্য নিয়োগ প্রদান করেন। এ ঘটনাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও নারীর প্রতি অবিচার উল্লেখ করে ভিসি বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শুধু লোকপ্রশাসন বিভাগ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রসায়ন বিভাগ, একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ ও জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগই নয়, এর আগেও আইন লঙ্ঘন করে ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে। রসায়ন বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান এইচ এম তারিকুল ইসলাম বলেন, উপর্যুপরি আইন লঙ্ঘনের মাধ্যমে ভিসি প্রমাণ করতে চাচ্ছেন দেশে আইন বলে কিছু নেই। ভিসি এ ধরনের নেতিবাচক বিষয় প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন না যদি না তাকে কেন্দ্র করে যে চক্র কাজ করছে তাদের ইন্ধন পেতেন। রাষ্ট্রের আইন লঙ্ঘনের জন্য ভিসির বিচার হওয়া উচিত। পাশাপাশি এই আইন লঙ্ঘনে যারা একের পর এক সহযোগিতা করে চলেছেন তাদেরকে অবশ্যই কঠোর বিচারের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, আইনের মধ্যে থেকে যে বিভাগীয় হওয়ার কথা তাকে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেয়া প্রয়োজন। এতে করে বিভাগের কাজ গতিশীল হয় আর আইনেরও লঙ্ঘন হয়না। এসব অনিয়মের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আইন ও বিধি অনুযায়ী বিভাগীয় প্রধান নিয়োগের আহবান জানান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু কালাম মো: ফরিদ উল ইসলাম। সার্বিক বিষয়ে জানতে ভিসি অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলে তারা কেউ ফোন রিসিভ করেনি।

মন্তব্য করুন


 

Link copied