সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মানাধিন শেখ হাসিনা হল এবং ড. ওয়াজেদ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইউজিসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশনা পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্তে নামে ইউজিসি। তদন্ত কমিটি অনিয়মের সঙ্গে অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর জড়িত থাকার প্রমাণ পায় এবং এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে সুপারিশ করে। আর তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে নিজের অবস্থান জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন উপাচার্য। ঘন্টাব্যাপী চলা সংবাদ সম্মেলনে নানা বিষয়ের অবতারণা করেন উপাচার্য কলিমউল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনের এক পর্যায়ে তিনি নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ‘আমি আমাদের যতগুলো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি, সেখানে একটি ‘ক্লজ’ যুক্ত করে দিয়েছে। যেটি আর কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে আমার জানামতে নেই। যেকোনো ধরনের লিখিত ও মৌখিক তদবির প্রার্থীর অযোগ্যতা বলে বিবেচিত হয়। অর্থাৎ লিখিত তদবির বলতে আমি বুঝিয়েছি ডিও লেটার, মন্ত্রী কিংবা জনপ্রতিনিধিরা এধরনের ডিও লেটার ইস্যু করে থাকেন। আমি এখন পর্যন্ত একটা ডিও লেটারও অনার করিনি। দায়িত্ব নিয়ে বলছি। লিখিত তদবির বলতে আমরা টেক্সট মেসেজ বুঝি। আর মৌখিক তদবির সেগুলো কিন্তু প্রতিটাই আমি ডিজঅনার করেছি। কোনো নজির নেই আমি কারও তদবির একসেপ্ট করিছি এজন্য অনেকেই আমার উপর মন খারাপ করেছেন। মাননীয় স্পীকার থেকে শুরু করে মাননীয় মন্ত্রী আমাদের জ্যোষ্ঠ মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজেম্মল হক থেকে কোনো লোক বাদ নেই যাদেরকে আমি সবিনয়ে বলেছি যে এটা করব না, পারব না। আমার উপর লোকের রুষ্ট প্রতিক্রিয়াগুলোর অন্যতম কারণ এটা।’
এদিকে, নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে দুষেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ। তিনি বলেন, এ ধরনের জায়গা থেকে এমন অভিযোগ তোলা রাজনৈতিক অপকৌশল। এসময় তিনি নিজের এলাকার সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গও তোলেন। ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা শিক্ষামন্ত্রীর আশ্রয়, প্রশ্রয় ও আসকারায়। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (ইউজিসি) উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন তিনি।
বেরোবি উপাচার্য বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এখনো আমরা পাইনি। এর আগেই গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। উল্লেখ্য, বেরোবির শেখ হাসিনা হল এবং ড. ওয়াজেদ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ইউজিসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশনা পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্তে নামে ইউজিসি। তদন্ত কমিটি অনিয়মের সঙ্গে অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর জডড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। ইউজিসির তদন্ত কমিটি প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত নকশা পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানোর অজুহাতে অনিয়মের বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে উপাচার্য, তার ভাগ্নে ইঞ্জিনিয়ার মজনুর কাদের এবং অন্যান্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।