মমিনুল ইসলাম রিপন: কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতারণার প্রতিবাদে ও মাইগ্রেশনের দাবিতে এবার গায়ে কাপনের কাপড় জড়িয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন রংপুরের নর্দান প্রাইভেট মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০) মার্চ দুপুর ১টা থেকে বেলা সোয়া ৩টা পর্যন্ত মেডিকেল মোড়ে রংপুর-দিনাজপুর সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এ সময় সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ।
নেপাল থেকে আসা ৪০ শিক্ষার্থীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নর্দান মেডিকেল কলেজে শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য কোনো হাসপাতালে নেই, শিক্ষক নেই, বিএমডিসি এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অনুমোদন নেই। এরপরেও প্রায় তিনশ’ শিক্ষার্থী এখানে ভর্তি হয়ে লেখাপড়া করছেন। কর্তৃপক্ষ বার বার আশ্বাস দেয়ার পরেও কোনো অনুমোদন আনতে পারেনি। ধার করা শিক্ষক দিয়ে ক্লাস করিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ধ্বংস করা হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, টানা ৩৩ দিন ধরে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো, রাজধানীতে গিয়ে মানববন্ধন ও রংপুরে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ, মানববন্ধন করলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে না।
দশম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশরাফুল বলেন, ধার করা রোগী ও শিক্ষক দিয়ে ক্লাস করিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের শিক্ষা জীবন ধ্বংস করছে কর্তৃপক্ষ, হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এ সমস্যা নিরসনে অন্য মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশনের সুযোগ দেয়ার দাবি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার গায়ে কাফনের কাপড় জড়িয়ে আন্দোলনে নেমেছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদ হাসান মৃধাসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক ছেড়ে দেয়ার আহবান জানালে প্রায় সোয়া ২ ঘণ্টা পর আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এই সময়ে যান চলাচলা বন্ধ হয়ে পড়ায় উভয়পাশে প্রায় ২/৩ কিলোমিলাটার ব্যাপী যানবহন আটকা পড়ে দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়।
পঞ্চমবর্ষের শিক্ষার্থী আলমগীর কবির বলেন, বুধবারের কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল তাদের দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাবে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) আলতাফ হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে শির্ক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে আসছে। মাইগ্রেশেনের প্রক্রিয়ার বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। আপাতত শিক্ষার্থীরা সড়ক ছেড়ে দিয়েছেন। যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।