আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

 width=
 
শিরোনাম: রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে       কুড়িগ্রামের খাবারে বেজায় খুশি ভুটানের রাজা       লালমনিরহাটে পুকুরে জাল ফেলতেই জালে উঠে এলো যুবকের মরদেহ       কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা      

 width=
 

ভাঙ্গণ ঠেকানোর পাশাপাশি ঘর বাড়ি হারানোর ভয়ে নিরাপদে সরে যাচ্ছে মানুষ॥ এলাকা পরিদর্শনে ডিসি

মঙ্গলবার, ৩১ আগস্ট ২০২১, বিকাল ০৭:৩০

স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ শামসুল ইসলাম(৫৫)। নির্বাক চেয়ে আছেন তিস্তা গিলে খাওয়া জমির দিকে তাকিয়ে। তার দশ বিঘা জমি খেয়ে ফেলেছে তিস্তা নদী। কপালে এখন আর কিছু নেই। জমি হারিয়ে স্পার বাঁধে আশ্রয় নিয়েও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধে ভাঙ্গণ ধরেছে। সেখান থেকে ঘর বাড়ি সরিয়ে নিয়েছেন অন্যত্র। সাতজনের সংসারে উপার্জনের একমাত্র পথ কৃষি কাজ। গেল কয়েক দফার বন্যায় রোজগারও বন্ধ। নিরুপায় তিনি। আরেকজন শুকুর আলী(৩০)। হারানো জমির দিকে তাকিয়ে বুকফাটা কষ্টের কথা বলছিলেন জোড় করেই। বাবার এক একরেরও বেশি জমি খেয়ে ফেলেছে তিস্তা। ভাগ্যে কি আছে ভাবনা যেন মাথা খেয়েছে তার। তিনি বলেন, এবার দুই বিঘা জমিতে ধান আবাদ করেছি সেগুলো খেয়ে ফেললো তিন্তা নদী। শুধু শামসুল হক, শুকুর আলী নয় তার মত ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ি এলাকার ইমান আলী, আবেদ আলী নবির উদ্দিনের কপাল পুড়েছে তিস্তার কড়াল গ্রাসে। এবারের বন্যায় শত শত একর জমির ধান নষ্ট হয়েছে। নবির উদ্দিন জানান, এক বিষ(২০বিঘা) জমিতে আমন লাগিয়েছি। কিন্ত বাঁধ ভেঙ্গে নতুন চ্যানেল তৈরি হওয়ায় নদীগর্ভে গেছে ধান ক্ষেত। ভাঙ্গণ আতংকে বাড়ির পাশে বতস ঘর থাকায় সেগুলো সরিয়ে নিয়েছি আজ সকালে। আজ মঙ্গলবার(৩১ আগষ্ট/২০২১) বিকাল ৬টায় ডিমলা উপজেলার ঝুনাচাঁপানী ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ি, চরকুটিপাড়া ছাতুনামা এলাকা পরিদর্শনে ছুটে গেছেন নীলফামারীর জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় ও ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নবাগত নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা সহ অন্যান্যরা। জেলা প্রশাসক অতিদ্রুত ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারী ভাবে সহযোগীতা আশ্বাস প্রদান করেন। পাশাপাশি ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জরুরী পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। অপরদিকে সরেজমিনে ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ি এলাকা গিয়ে দেখা গেছে মানুষদের ছুটোছুটি আর ঘর সরানোর চিত্র। যে যার মত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ঘর বাড়ি। স্পার বাঁধটি ঘিরে চারটি ওয়ার্ডের প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস। তারা এখন সবাই পড়েছেন আতংকে। সেখানে থাকা কুটিপাড়া আশ্রয়ন প্রকল্পটি পানিতে ভরেছে। সেখানে বসবাসরত ৩০পরিবার সরে এসে অবস্থান করছেন উচু স্থানে। ভাঙ্গণ ঠেকাতে কেউবা জিও ব্যাগ তৈরিতে ব্যস্ত, কেউবা বালু ভর্তিতে, কেউবা বহনে আবার কেউবা ভাঙ্গণের মুখে বস্তা ফেলতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। এসব কাজে তদারকি করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশন এর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা। ইউনিয়ন পরিষদের আট নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিস্তায় কয়েক দফা পানি বৃদ্ধির ফলে ভেন্ডাবাড়ি চর প্লাবিত হয়ে রয়েছে মাস খানিক ধরে। সবশেষ গত রবিবারের(২৯ আগষ্ট/২০২১) পানি বৃদ্ধিতে রাতে ভাঙ্গণ ধরে স্পার বাঁধের শেষাংসে। আজ পর্যন্ত সেখানে দেড়’শ মিটার ভেঙ্গে যাওয়ায় তিস্তার নতুন চ্যানেল তৈরি হয়েছে। এরফলে পানি প্রবেশ করেছে লোকালয়ে। বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছেন সহ¯্রাধিক পরিবার। তিনি বলেন, স্থানীয় মানুষরা নিরাপদ থাকতে ঘর বাড়ি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এখোনো। ভেঙ্গে নদী গর্ভে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এই বাধঁটি বিলিন হয়ে গেলে হাজার হাজার মানুষ হারাবে বসত ভিটা, গিলে খাবে শত শত একর জমি। তিস্তার প্রসার ঘটবে এবং বাড়তে থাকবে। ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, বাঁধটি ঘিরে প্রায় ২০ হাজার মানুষ টিকে থাকেন। ভাঙ্গণ ধরায় দুঃচিন্তায় পড়েছেন এসব মানুষ। গত রবিবার রাত থেকে নিদ্রাবিহীন সময় কাটাচ্ছেন এলাকার মানুষরা। দুই শতাধিক পরিবারের বসত ঘর নদী গর্ভে বিলিন হলেও নদী ভাঙ্গণের শিকার হচ্ছেন শত শত কৃষক। বাঁধটি যুগোপযোগী করে কার্যকর করা এবং তিস্তা এলাকার মানুষদের বাঁচাতে তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ভাঙ্গণের মুখে পড়া বাঁধটি রক্ষায় আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সম্মিলিত ভাবে কাজ করছি। সার্বক্ষনিক ভাবে নজরদারী করা এবং মানুষের সাথে ক্ষতি না হয় সেজন্য সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত নয় মেট্রিক টন চাল, ২৫০ জনকে শুকনো খাবার সরকারী ভাবে বিতরণ করা হয়েছে এয়াড়া আমি ব্যক্তিগত ভাবে আজ ২৫০টি পরিবারকে শুকনো খাবার দিয়েছি। জানতে চাইলে পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান, বাঁধটি রক্ষায় আমরা চেষ্টা করছি। দেড়’শ মিটারের মত ভেঙ্গে গেছে। যার কারণে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ভাঙ্গণ সৃষ্টি হয়েছে। আজ পর্যন্ত এক হাজার বালুর বস্তা ফেলে ভাঙ্গন রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। যত প্রয়োজন বালু বস্তা ফেলে বাঁধটি টিকে রাখার কাজ করবো আমরা। পাশাপাশি বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে টেকসই ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied