আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ● ৫ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল       সার্ভার ডাউন: রসিকে জন্ম নিবন্ধন নিয়ে ভোগান্তি চরমে       রংপুরে ফটোসাংবাদিক ফিরোজ চৌধুরীর একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী       ডোমার ও ডিমলা উপজেলা নির্বাচনে ৩৫ জনের প্রার্থীতা বৈধ ॥ চেয়ারম্যান পদে ১২ জনের মধ্যে আওয়ামীলীগের ৭ জন প্রার্থী       নীলফামারীতে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালন      

 width=
 

লেখাপড়া করার সুযোগ চায় ঠাকুরগাঁওয়ের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শরীফ আলী

শনিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১, দুপুর ১১:৩২

করোনায় সরকারিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের প্রায় দেড়বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্তে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা। কিন্তু চিন্তার শেষ নেই ঠাকুরগাঁওয়ের শিক্ষার্থী শিশু শরীফের। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হওয়ায় মাধ্যমিকের কোন বিদ্যালয়েই ভর্তীর সুযোগ পাচ্ছেনা সে। তবে কি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এই শিক্ষার্থীর শিক্ষার জীবন এখানেই শেষ এমন প্রশ্ন শিক্ষার্থীর বাবা, মা এর ?

ঠাকুরগাঁও শহরের মুন্সির হাট মাদ্রাসা পাড়া এলাকার দরিদ্র পরিবারের সন্তান শরীফ। ছোটবেলায় মাত্র তিনবছর বয়সে মারাত্মক অসুখে চোখের জ্যোতি হারিয়ে যায় তার। অনেক কষ্টে তার মা বাবা দেশে ও ভারতে চিকিৎসা করান। কিন্তু টাকার অভাবে ভারতে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারে না তার পরিবার।

শরীফ জানায়, দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা পরিবার ও সমাজের বোঝা। বোঝা হয়ে সে থাকতে চায়না। তাই পঞ্চম শ্রেণী থেকে উত্তির্ণ হওয়ার পর ৬ষ্ট শ্রেণীতে ভর্তীর জন্য প্রথমে স্থানিয় সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় ও পরবর্তীতে সমাজ সেবা কার্যালয় ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বহুবার যোগাযোগ করেছে সে। এরই মধ্যে প্রায় আট মাস অতিবাহিত হয়ে গেছে। কালক্ষেপন করে সকলেই তাকে আশ্বাস দিলেও কেউই তার ভর্তীর বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেনা। স্কুলে ভর্তীর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সহ শিক্ষা মন্ত্রীর সুদৃষ্টি ও সহযোগীতা কমনা করেছে শরীফ আলী।

এদিকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সন্তানের ভবিষ্যত ও সুচিকিৎসা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন দরিদ্র পিতা মাতা। শরীফের বাবা রমজান আলীর অভিযোগ করে বলেন, ঠাকুরগাঁও সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ভর্তীর কোটা ও নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা। তার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী সন্তানের শিক্ষার ক্ষেত্রে কারো সহযোগীতাও পাচ্ছেন না তিনি।

শরীফের মা শফুরা বেগম জানান, তার মৃত্যুর পর শরীফ অসহায় হয়ে পরবে। কেউই তার পাশে থাকবে না। তাই লেখাপড়া জানা থাকলে ভবিষ্যতে আর যাই হোক শরীফকে ভিক্ষা করে চলতে হবে না। তাই সন্তানের স্কুলে ভর্তীর বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রীর সুদৃষ্টি ও সহযোগীতা কমনা করেন তিনি।

জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো: আল মামুন জানান, জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের অধিনে সমন্বিত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হোস্টেলে শরীফ ভর্তী রয়েছে। করোনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় হোস্টেল বন্ধ রয়েছে। হোস্টেলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও জনবল সংকটের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম কিছুটা বিঘিœত হচ্ছে। তবে শরীফের ৬ষ্ট শ্রেণীতে ভর্তীর বিষয়ে চেষ্ঠা চলছে।

ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পিযুষ কান্ত রায় জানান, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে তার বিদ্যালয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষার সুযোগ থাকলেও এর জন্য নিদৃষ্ট শিক্ষক ও উপকরণ সুবিধা নেই। বিদ্যালয়ে যে চারজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তী রয়েছে তাদেরও শিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। শরীফের ভর্তীর বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশ পেলে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা শিক্ষা অফিসার খন্দকার মো: আলাউদ্দীন আল আজাদ জানান, ঠাকুরগাঁওয়ে যে দুটি সরকারি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে তার সভাপতি জেলা প্রশাসক। ভর্তীর বিষয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করার পরামর্শ দেন তিনি।

সরকারি তথ্যানুযায়ী ঠাকুরগাঁও জেলায় মোট ১৬৬৮ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণ এবং নিদৃষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না থাকায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীই শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied