পেছনে পড়ে রইল আগের চারবার বর্ষসেরা ফুটবলার বার্সেলোনার লিওনেল মেসি আর বায়ার্ন মিউনিখকে গত মৌসুমে `ট্রেবল` জেতানো ফ্রাঙ্কা রিবেরি।
সোমবার সুইজারল্যান্ডের জুরিখে জাঁকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে রোনালদোর হাতে পুরস্কারটি তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে ২০০৮ সালেও ব্যালন ডি অর` জিতেছিলেন তখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে খেলা রোনালদো। তখন ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কার যুক্ত হয়নি ফ্রান্স ফুটবল ম্যাগাজিনের দেয়া এই সম্মানের সঙ্গে। অবশ্য সে বছর ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কারও পেয়েছিলেন এই ফরোয়ার্ড।
গত বছর ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও জাতীয় দলের হয়ে দারুণ পারফরম্যান্সেরই স্বীকৃতি পেলেন ২৮ বছর বয়স্ক রোনালদো। এর আগে ফিফার বর্ষসেরা নারী ফুটবলারের পুরস্কার পান জার্মানির নাডিনে আঙারার।
বিবিসি স্পোর্টসের হিসেব অনুযায়ী, রিয়াল মাদ্রিদ ও জাতীয় দলের হয়ে গত বছর ৫৬ ম্যাচে ৬৬ গোল করেছেন রোনালদো। গোলে সহায়তা করেছেন ১৫টি। ব্যর্থতা ছিল শুধু এক জায়গায়- ক্লাবের হয়ে কোনো শিরোপা জিততে পারেননি তিনি।
তবে দেশকে ব্রাজিল বিশ্বকাপের টিকিট পাইয়ে দিতে সুইডেনের বিপক্ষে বাছাইপর্বের প্লে-অফে করেছিলেন অসাধারণ এক হ্যাটট্রিক।
২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা চারবার ব্যালন ডি`অর জেতা আর্জেন্টিনার মেসি এই পুরস্কারটিকে অনেকটা যেন নিজের-ই করে ফেলেছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় হোঁচট খেলেন এবার। গেল বছরটা তার খুব একটা ভালো যায়নি। বারবার চোটের কারণে তিনি খেলতে পেরেছেন মাত্র ৪৫টি ম্যাচ। তাতে গোল পেয়েছেন ৪২টি, গোলে সাহায্য করেছেন ১৫ বার। তবে দলকে জিতিয়েছিলেন লা লিগার শিরোপা।
এদিকে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে রোনালদো আর মেসির চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও দলীয় অর্জনে কিন্তু এগিয়ে ছিলেন জার্মানির ফ্রাঙ্ক রিবেরি। জার্মানির প্রথম দল হিসেবে গত মৌসুমে বায়ার্নের ‘ট্রেবল’ জয়ে দারুণ অবদান রাখেন এই ফরাসি তারকা।
গত বছর রিবেরি ৫২ ম্যাচে করেছেন ২২ গোল, গোলে সাহায্য করেছেন ১৮বার। সাংবাদিকদের ভোটে ইউরোপের সেরা ফুটবলারও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, ফ্রান্স ফুটবল ১৯৫৬ সাল থেকে ইউরোপের সেরা ফুটবলারকে ব্যালন ডি’অর পুরস্কার দিত। ২০০৭ সাল থেকে পুরস্কারটি দেওয়া হয় বিশ্বের সেরা ফুটবলারকে। ২০১০ সাল থেকে ফিফার বর্ষসেরা পুরস্কারের সঙ্গে একীভূত হয়ে এর নাম হয় ফিফা ব্যালন ডি’অর। বিজয়ীরা নির্বাচিত হন জাতীয় দলগুলোর অধিনায়ক ও কোচ এবং ফ্রান্স ফুটবল ম্যাগাজিনের বাছাই করা প্রায় ১৭০ জন ক্রীড়া সাংবাদিকের ভোটে।
আগের ১০ বারের বিজয়ীরা হলেন, ২০০৩ সালের ফিফা বর্ষসেরা হন জিনেদিন জিদান, ব্যালন ডি’অর পান পাভেল নেদভেদ। ২০০৪ সালের ফিফা বর্ষসেরা রোনালদিনিয়ো, ব্যালন ডি’অর আন্দ্রেই শেভচেঙ্কো। ২০০৫ সালের ফিফা বর্ষসেরা রোনালদিনিয়ো, ব্যালন ডি’অর রোনালদিনিয়ো।২০০৬ সালে ফিফা বর্ষসেরা ফ্যাবিও ক্যানাবারো, ব্যালন ডি’অর ফ্যাবিও ক্যানাবারো। ২০০৭ সালের বর্ষসেরা কাকা, ব্যালন ডি’অরও পান কাকা। ২০০৮ সালের ফিফা বর্ষসেরা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এবং ব্যালন ডি’অরও পান ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ২০০৯ সালের ফিফা বর্ষসেরা লিওনেল মেসি, ব্যালন ডি’অরও লিনেল মেসি পান।
এরপর ২০১০ সালে পুরস্কার দুটি একীভূত হয়। ২০১০ সাল থেকে পরপর তিনবারই এ পুরস্কার মেসির ঝুলিতে ওঠে। পরপর চারবার এ পুরস্কার পান তিনি।