আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪ ● ১৪ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ২৮ মার্চ ২০২৪
 width=
 

 

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

কুড়িগ্রামে সমৃদ্ধির হাতছানি

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

আন্তর্জাতিক যোগাযোগের গেটওয়ে হবে কুড়িগ্রাম

 width=
 
শিরোনাম: কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্ধারিত স্থান পরিদর্শন করলেন ভুটানের রাজা       রানিকে নিয়ে কুড়িগ্রামে পৌঁছেছেন ভুটানের রাজা       ২৯ রমজান কি অফিস খোলা?       আজ ঐতিহাসিক রংপুর ক্যান্টনমেন্ট ঘেরাও দিবস       লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর      

 width=
 

রংপুর পাসপোর্ট অফিসে অনিয়মই নিয়ম

সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০১২, রাত ১০:০৩

প্রাপ্ত তথ্য ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুযায়ী কিছুদিন থেকে রংপুর পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতির প্রকাশ্য রূপ দেখা যায়। পরিচয় গোপন রেখে সরেজমিন অবৈধ অর্থ লেনদেন এবং পাসপোর্ট করতে আসা মানুষ কত বার যে হয়রানির শিকার হয় তা কিছুটা হলেও অনুধাবন করা গেছে। এই অফিসে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাত্রা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। দীর্ঘদিন ধরে রংপুর পাসপোর্ট অফিসে আগত সর্ব সাধারণকে এক প্রকার জিম্মি করে রেখে কর্তা ব্যক্তি ও দালাল চক্রের সিন্ডিকেট প্রতিদিন লাখ লাখ হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে রংপুর বিভাগের ৮ জেলাসহ জয়পুরহাট জেলার পাসপোর্ট করতে আসা মানুষ এখানে এসে মূল খরচের চাইতে ২/৩ গুণ বেশি অর্থ খরচ করে কাংখিত পাসপোর্ট উত্তোলন করছেন।

চাকরি, ব্যবসা, হজব্রত পালন, চিকিৎসাসেবা, শিক্ষা ও ভ্রমণের জন্য এখানে প্রতিদিন শত শত মানুষ এসে পাসপোর্ট নবায়ন বা নতুনভাবে পাসপোর্ট তৈরি করে। বিশেষ করে মালয়েশিয়ায় সরকারিভাবে জনশক্তি রফতানির লক্ষ্যে এখানে বর্তমানে ভিড় বেড়েছে। আর এ পাসপোর্ট তৈরি বা নবায়ন করতে এসে সর্ব সাধারণ পদে পদে হয়রানির শিকার হয়। কোনো ভুল না হলেও ইচ্ছাকৃত ভাবে একেকজন ব্যক্তিকে মাসের পর মাস ঘুরাতে থাকে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিস কর্তাব্যক্তিরা। এমনও অভিযোগ উঠেছে কয়েক মাস ঘুরানোর পরেও মানুষকে বলা হচ্ছে, ফরমে ভুল হয়েছে ঠিক করে আবার জমা দিন। অথচ এর মাঝে একবারও ভুলের কথা বলে না দায়িত্ব-রত ব্যক্তিরা। অযোগ্য ওই ব্যক্তি কোনো দালালের আশ্রয়ে গিয়ে ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যেই পাসপোর্ট হাতে নিয়ে ফিরে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পাসপোর্ট-ধারীকে অতিরিক্ত ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা গুনতে হয়। এ ছাড়া কোনো ব্যক্তি যদি প্রথমেই দালাল বা অফিসের লোকজনের সঙ্গে চুক্তি করে তাহলে দুহাজার থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে কাজ শেষ হয়। এমনও দেখা গেছে কেউ যদি অতি জরুরি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করে এবং উৎকোচ ছাড়াই তা তুলতে চায়, তাহলে অতি জরুরি সময় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে ১২০ ঘণ্টাতেও তা পাওয়া যায় না।

সরেজমিন দেখা গেছে, নতুন পাসপোর্ট করতে আসা ব্যক্তিরা তথ্য চাইলে অফিস থেকে দালাল চক্রকে দেখিয়ে দিয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়। আর তাদের দেখানো লোকের সঙ্গে দেখা ও আলাপচারিতা চূড়ান্ত হলে গ্রাহককে খরচের একটি হিসাব দেয়া হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফরম বাবদ ৫০ থেকে ১০০ টাকা, ফরম পূরণ বাবদ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, ছবি ও ফরমের সত্যায়িত করতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, ফরম জমা দিয়ে একই দিনে ছবি ও আঙ্গুলের ছাপ দিতে চাইলে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, থানা পুলিশ বা ডিএসবি প্রতিবেদন বাবদ দেড় থেকে দুহাজার টাকা, নির্ধারিত দিনেই পাসপোর্ট পেতে হলে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দিতে হবে। যেসব ব্যক্তি এই হিসাব মেনে ব্যাংকে জমা ছাড়াও উদ্ধৃত টাকা দেবে তারা দ্রুত পাসপোর্ট পেয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, অফিসে কর্মরত ব্যক্তি বা দালাল চক্রের কাছে বিভিন্ন এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান এবং প্রথম শ্রেণীর ব্যক্তিদের সিল রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে পাসপোর্ট অফিসের আয়া থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা পর্যন্ত এই অনিয়ম করে যাচ্ছে। আর এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আনসার সদস্য, পুলিশ সদস্য, ডিএসবির পরিচয় দানকারী ব্যক্তি, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিবারের লোকজন এবং স্থানীয় কতিপয় যুবক। তবে স্থানীয় যুবকরা দালাল চক্রের সঙ্গে জড়িত মর্মে প্রচার করা হলেও মূলত অফিসের নিজস্ব দালাল চক্র বা সিন্ডিকেট কাজ করছে। দালাল চক্রের এবং সিন্ডিকেট সদস্যদের সাক্ষাৎ পাওয়া যায় পাসপোর্ট অফিসের ভেতরে, অফিস ভবনের পেছনে, অফিস চত্বরে, পুলিশের কক্ষে, আশেপাশের সড়কের গলিতে, অফিস সংলগ্ন গড়ে ওঠা চা-স্টল ও অন্য দোকান। সেই সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এই অফিসেই নির্ভয়ে অনিয়ম করে যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে আঞ্চলিক উপ-পরিচালক মাসুদ হাসান অভিযোগগুলো অস্বীকার করে জানান, এই অফিসে স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ চলছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied