মঙ্গলবার, ১ জানুয়ারী ২০১৩, দুপুর ০১:০৪
ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৪৬ সালে পহেলা জানুয়ারি ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ি গ্রামে ৫টি বন্দুক নিয়ে জোড়দাররা অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে ওই গ্রামের কৃষক যোদ্ধা তন্না নারায়ন কে গুলি করে হত্যা করেছিল। আন্দোলনে তৎকালীন পূর্ব বাংলার প্রথম প্রাণ চলে যায় কৃষক যোদ্ধা তন্না নারায়নের। ঘটনার প্রতিবাদে সেদিন হাজার হাজার কৃষক যে ঐতিহাসিক মিছিল করেছিল তা ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের দনি খড়িবাড়ী গ্রামে নিহত তন্না নারায়নের মেয়ে সুখোবালার সাথের কথা হয়। জাতীয় পরিচয়পত্র মতে সুখোবালার বর্তমান বয়স ৯০ বছর। তার স্বামীর নাম মৃত হরানন্দ্র রায়। তার মা দয়ামনি, তারা ৩ ভাই ও ২ বোন। ভাইরা হলেন তারিনী মহন,গীরিশ চন্দ্র রায় ও নগেন্দ্র নাথ রায় এবং বোনের মধ্যে তিনি সুখোবালা ও বাকসী বালা রায়। সুখোবালা তার মনের স্মৃতিগাথাঁকে জেগে তুলে বলেন, “আমার বিয়ের কিছু দিন পর বাবা কে গুলি করে মারে জোড়দাররা। আমরা বাবার লাশটাও দেখতে পাইনি। জোড়দারদের হুমকির কারণে আমরা পালিয়ে পালিয়ে থাকতাম। পরে জীবনের ভয়ে মা, তিন ভাই ও ছোট বোনটি চলে যায় ভারতে। তারা আর ফিরে আসেনি। আমি থেকে যাই স্বামীর কাছে। সুখোবালা বলেন আমার বাবার বাড়ীটা ছিল যাদু মিয়ার(মশিউর রহমান) বাড়ীর কাছে ঝিগেরতলায়। এখন সেই বাড়ির ভিটাটা দখল করে ভোগ করছে প্রভাবশালীরা। সুখোবালা আরও জানায় তার মা ভাই বোনরা সকলে মারা গেছে। তিনি একমাত্র বেঁচে আছেন। তার ১ ছেলে ৫ মেয়ে। কৃষক বিদ্রোহের ঐতিহাসিক তেভাগাঁ আন্দোলনে সে সময় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় গড়ে ওঠা কৃষক নেতাদের মধ্যে ছিলেন জমসেদ আলী চাটী,বাচ্চা মামুদ,দীন দয়াল, কালাচাঁদ বাবু , কার্তিক কবিরাজ ও তন্নানারায়ন(জোতদারের গুলিতে নিহত)সহ নাম না জানা আরও অনেকে। এদের কেউ আজও বেঁচে নেই। তবে শুধু রয়েছে মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের এক জ্যোতির্ময় অধ্যায়। কৃষিজীবী মানুষের নিজের জমি আর জমির ফসলের ওপর যে অধিকার রয়েছে তার দৃঢ়তার পিছনেই ছিল কৃষক বিদ্রোহ তেভাগাঁ আন্দোলন। উল্লেখ্য যে, ১৯৪০ সালের গোঁড়ার দিকে জমি থেকে উৎপন্ন ফসলের ৩ ভাগের ২ ভাগ পাবে চাষী, ১ ভাগ পাবে জমির মালিক । এ দাবী থেকে তেভাগাঁ আন্দোলন সংগঠিত হতে থাকে। এ আন্দোলনের আগে বর্গা প্রথায় জমির সমস্ত ফসল মালিকের গলায় উঠত এবং উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক বা তার আরও কম বরাদ্দ থাকত ভূমিহীন কৃষক বা ভাগ চাষীর জন্য। যদিও ফসল ফলানোর জন্য বীজ ও শ্রম দু’টোই কৃষক দিত। পাক-ভারত সৃষ্টির আগে কৃষকদের তেভাগাঁ আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলেও এ ডিসেম্বর মাসেই ডিমলায় তেভাগা আন্দোলন অগ্নিমূর্তি ধারণ করে। আন্দোলনের শ্লোগান ছিল; নিজ গোলায় ধান তোলো, অর্ধেক নাই, তেভাগাঁ চাই, ধার করা ধানের সুদ নাই। আন্দোলনের এ মন্ত্রে বেগবান হয়ে ১৯৪৬ সালের শুরু থেকেই বর্তমান নীলফামারীর জেলার ডিমলা উপজেলায় শত শত কৃষক স্বেচ্ছায় মাঠ থেকে যৌথভাবে ধান কেটে চাষীদের বাড়ীতে তুলতে থাকে। এ দৃশ্য দেখে জোতদাররা তাদের পেটোয়া গুণ্ডা বাহিনী চাষীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। সে সময় কৃষকদের লাঠির আঘাতে গুণ্ডা বাহিনী ধরাশায়ী হয়ে পালিয়ে যায়। এ অবস্থা দেখার পর ডিমলার জোতদাররা কৃষকদের বিরুদ্ধে বন্দুক আমদানি করেছিল। সেই বন্দুকের গুলিতে হত্যা করা হয়েছিল কৃষক বিদ্রোহের তেভাগাঁ আন্দোলনের সোচ্চার কন্ঠ স্বর তন্না নারায়ন ।
ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৪৬ সালে পহেলা জানুয়ারি ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ি গ্রামে ৫টি বন্দুক নিয়ে জোড়দাররা অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে ওই গ্রামের কৃষক যোদ্ধা তন্না নারায়ন কে গুলি করে হত্যা করেছিল। আন্দোলনে তৎকালীন পূর্ব বাংলার প্রথম প্রাণ চলে যায় কৃষক যোদ্ধা তন্না নারায়নের। ঘটনার প্রতিবাদে সেদিন হাজার হাজার কৃষক যে ঐতিহাসিক মিছিল করেছিল তা ইতিহাসের পাতায় স্থান করে নিয়েছে। ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের দনি খড়িবাড়ী গ্রামে নিহত তন্না নারায়নের মেয়ে সুখোবালার সাথের কথা হয়। জাতীয় পরিচয়পত্র মতে সুখোবালার বর্তমান বয়স ৯০ বছর। তার স্বামীর নাম মৃত হরানন্দ্র রায়। তার মা দয়ামনি, তারা ৩ ভাই ও ২ বোন। ভাইরা হলেন তারিনী মহন,গীরিশ চন্দ্র রায় ও নগেন্দ্র নাথ রায় এবং বোনের মধ্যে তিনি সুখোবালা ও বাকসী বালা রায়। সুখোবালা তার মনের স্মৃতিগাথাঁকে জেগে তুলে বলেন, “আমার বিয়ের কিছু দিন পর বাবা কে গুলি করে মারে জোড়দাররা। আমরা বাবার লাশটাও দেখতে পাইনি। জোড়দারদের হুমকির কারণে আমরা পালিয়ে পালিয়ে থাকতাম। পরে জীবনের ভয়ে মা, তিন ভাই ও ছোট বোনটি চলে যায় ভারতে। তারা আর ফিরে আসেনি। আমি থেকে যাই স্বামীর কাছে। সুখোবালা বলেন আমার বাবার বাড়ীটা ছিল যাদু মিয়ার(মশিউর রহমান) বাড়ীর কাছে ঝিগেরতলায়। এখন সেই বাড়ির ভিটাটা দখল করে ভোগ করছে প্রভাবশালীরা। সুখোবালা আরও জানায় তার মা ভাই বোনরা সকলে মারা গেছে। তিনি একমাত্র বেঁচে আছেন। তার ১ ছেলে ৫ মেয়ে। কৃষক বিদ্রোহের ঐতিহাসিক তেভাগাঁ আন্দোলনে সে সময় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় গড়ে ওঠা কৃষক নেতাদের মধ্যে ছিলেন জমসেদ আলী চাটী,বাচ্চা মামুদ,দীন দয়াল, কালাচাঁদ বাবু , কার্তিক কবিরাজ ও তন্নানারায়ন(জোতদারের গুলিতে নিহত)সহ নাম না জানা আরও অনেকে। এদের কেউ আজও বেঁচে নেই। তবে শুধু রয়েছে মানুষের বেঁচে থাকার লড়াইয়ের এক জ্যোতির্ময় অধ্যায়। কৃষিজীবী মানুষের নিজের জমি আর জমির ফসলের ওপর যে অধিকার রয়েছে তার দৃঢ়তার পিছনেই ছিল কৃষক বিদ্রোহ তেভাগাঁ আন্দোলন।
উল্লেখ্য যে, ১৯৪০ সালের গোঁড়ার দিকে জমি থেকে উৎপন্ন ফসলের ৩ ভাগের ২ ভাগ পাবে চাষী, ১ ভাগ পাবে জমির মালিক । এ দাবী থেকে তেভাগাঁ আন্দোলন সংগঠিত হতে থাকে। এ আন্দোলনের আগে বর্গা প্রথায় জমির সমস্ত ফসল মালিকের গলায় উঠত এবং উৎপন্ন ফসলের অর্ধেক বা তার আরও কম বরাদ্দ থাকত ভূমিহীন কৃষক বা ভাগ চাষীর জন্য। যদিও ফসল ফলানোর জন্য বীজ ও শ্রম দু’টোই কৃষক দিত। পাক-ভারত সৃষ্টির আগে কৃষকদের তেভাগাঁ আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলেও এ ডিসেম্বর মাসেই ডিমলায় তেভাগা আন্দোলন অগ্নিমূর্তি ধারণ করে। আন্দোলনের শ্লোগান ছিল; নিজ গোলায় ধান তোলো, অর্ধেক নাই, তেভাগাঁ চাই, ধার করা ধানের সুদ নাই। আন্দোলনের এ মন্ত্রে বেগবান হয়ে ১৯৪৬ সালের শুরু থেকেই বর্তমান নীলফামারীর জেলার ডিমলা উপজেলায় শত শত কৃষক স্বেচ্ছায় মাঠ থেকে যৌথভাবে ধান কেটে চাষীদের বাড়ীতে তুলতে থাকে। এ দৃশ্য দেখে জোতদাররা তাদের পেটোয়া গুণ্ডা বাহিনী চাষীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। সে সময় কৃষকদের লাঠির আঘাতে গুণ্ডা বাহিনী ধরাশায়ী হয়ে পালিয়ে যায়। এ অবস্থা দেখার পর ডিমলার জোতদাররা কৃষকদের বিরুদ্ধে বন্দুক আমদানি করেছিল। সেই বন্দুকের গুলিতে হত্যা করা হয়েছিল কৃষক বিদ্রোহের তেভাগাঁ আন্দোলনের সোচ্চার কন্ঠ স্বর তন্না নারায়ন ।
মন্তব্য করুন
টপ নিউজ’র আরো খবর
সংশ্লিষ্ট
ভারত থেকে ৩ দিনের মধ্যে পেঁয়াজ আসবে: বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
পেঁয়াজ রপ্তানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করল ভারত
মালিকপক্ষকে জলদস্যুদের ফোন, যে কথা হলো
কমলো সোনার দাম