আর্কাইভ  বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ● ৫ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   বৃহস্পতিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: ডোমার ও ডিমলা উপজেলা নির্বাচনে ৩৫ জনের প্রার্থীতা বৈধ ॥ চেয়ারম্যান পদে ১২ জনের মধ্যে আওয়ামীলীগের ৭ জন প্রার্থী       নীলফামারীতে ঐতিহাসিক মুজিব নগর দিবস পালন       নীলফামারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু       কিশোরীগঞ্জে পাঁচতলা ভবন থেকে পড়ে এক ব্যাক্তির রহস্যজনক মৃত্যু       উপজেলা নির্বাচনে জাপার প্রার্থী হতে চান না কেউ      

 width=
 

অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের পাকা বাড়ি: অস্বচ্ছল ছেড়ে স্বচ্ছলের বাড়িত পাকা ভবন !

শনিবার, ১৭ মে ২০১৪, বিকাল ০৫:১১

বর্তমান আ’লীগ সরকার দেশের অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে পাকা ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার ঘোষনা দিয়েছে। এরই মধ্যে তা বাস্তবায়নও শুরু হয়েছে। নিয়ম রয়েছে যারা খুবই দরিদ্র, থাকার ঘর নেই মূলত তাদেরকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সরকারের ওই সুবিধার আওতায় আনতে হবে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া তালিকা উপজেলা প্রশাসন সরেজমিনে তদন্ত করে তা অনুমোদন করবে। কিন্তু রৌমারী উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা কি ভাবে অনুমোদন হলো এবং পাকা ভবন নির্মাণের কাজও শুরু হলো। এনিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রৌমারী উপজেলা ২৪০ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে মাত্র ৩জন মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে পাকা ভবন নির্মার্ণের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এরা হলেন খঞ্জনমারা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মুলক চান, রৌমারী গ্রামের আব্দুল মজিদ ওরফে মুধু ও কাশিয়াবাড়ি গ্রামের সাহার আলী। এদের মধ্যে সাহার আলী নামের মুক্তিযোদ্ধা পরিবার স্বচ্ছল। তিনি উপজেলা ডেপুডি কমান্ডার ছিলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে সাহার আলীর ভালো খায়খাতির রয়েছে। আর এ কারনে তিনি স্বচ্ছল হলেও তার বাড়িতে সরকারি খরচে পাকা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

গ্রামবাসিরা জানান, এক সময়ে মুক্তিযোদ্ধা সাহার আলীর পারিবারিক অবস্থা খুবই খারাব ছিল। কিন্তু এখন তার সে দুরাবস্থা নেই। ভালো চলেন। আ’লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি মুক্তিযোদ্ধার কোটায় অনেক সুযোগসুবিধা নিয়েছেন। গত বছর প্রায় ১৮ লাখ টাকায় যাদুরচর হাটবাজার ইজারা নিয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি ওএমএস’র ডিলার এবং সরকারি ভাবে মুক্তিযোদ্ধা ভাতাও পান। তার বাড়িতে পাকা ভবনও রয়েছে। তার ৫ ছেলেমেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও ১ মেয়ে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চাকরি করছেন। এ অবস্থায় তার বাড়িতে পাকা ভবন না করে তার চেয়ে যারা দরিদ্র এমন মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে করা উচিৎ ছিল বলে জানান মুক্তিযোদ্ধারা। তবে সাহার আলী বলেন, ‘আমার ওই একটা ঘর। একই ঘরে ছেলেমেয়েসহ থাকতে হয়। আর মেয়ের জামাই আসলে তখন সমস্যায় পড়তে। তাছাড়া আমি অনেক তদবির করে বরাদ্দ এনেছি। এতে আমার অনেক টাকাও খরচ হয়েছে।’

অপরদিকে উপজেলার ইছাকুড়ি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা নুরুজ্জামান (৬০) এর বাড়িতে একটি মাত্র ছনের ঘর। ঘরের বেড়া ভাঙ্গাচেরা, চাল ফুটো। একটু বৃষ্টি হলেই ঝপঝপিয়ে পড়ে পানি। তখন ঘরের এক কোনে বসে থাকা লাগে। বাড়িতে কোনো টিউবওয়েল নেই, নেই কোনো স্বাস্থ্য সম্মত ল্যাট্রিন। অন্যের বাড়িতে গোসল ও গণশৌচাগারের কাজ সারতে হয় তাকে। সরকারি ভাবে মাসিক দুই হাজার টাকা ভাতা পান। তা দিয়ে চলে তাদের সংসার। তিনি বলেন, ‘আমার মতো গরীব অসহায় মুক্তিযোদ্ধা মনে হয় আর নেই।’ একই অবস্থা বকবান্দা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক। সে বউপোলাপান নিয়ে অন্যের জমিতে ঘর তুলে বসবাস করছে।

এ সব বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার আব্দুল কাদের জানান, সাহার আলীর বিষয়ে যাদুরচর ইউনিয়নের সকল মুক্তিযোদ্ধা সুপারিশ করেছে। আর এ কারনে তার নাম তালিকা ভুক্ত করা হয়েছে। তার চেয়ে অনেক দরিদ্র ও যাদের বাড়িতে থাকার ঘর নেই এমন অনেক মুক্তিযোদ্ধা থাকার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘উপজেলার ৩ ইউনিয়নে ৩জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এক ইউনিয়নে একের অধিক দেওয়া হয়নি।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান জানান, ওই তালিকা মুক্তিযোদ্ধারাই দিয়েছে। আর সেটাই অনুমোদন হয়ে এসেছে। এরপর বরাদ্দ পাওয়া গেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য করুন


 

Link copied