র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত এ প্রসাধন কারখানায় অভিযান চালায়। উদ্ধার করা হয় কোরিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের নকল প্রসিদ্ধ প্রসাধন সামগ্রী (হিমতাজ তেল, চুলের কলপ হাই স্পিড, ভেনাস হারবাল নামের মেহেদি)। কারখানা মালিককে পাওয়া যায়নি। আদালত কারখানা ম্যানেজার কবির বিন জাকিরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও কারখানাটি সিলগালা করে দেয়।
র্যাব-১০ এর মেজর শামীম আহম্মেদের নেতৃত্বে অভিযান কালে উপস্থিত ছিলেন বিএসটিআই-এর প্রতিনিধি সাইদুর রহমান। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ারা পাশা জানান, 'আয়ুর্বেদিক হিমতাজ প্রোডাক্ট' নামের এ কারখানার বিএসটিআই বা ওষুধ প্রশাসনের কোন অনুমোদন নেই। এখানে কলকাতার বিখ্যাত হিমতাজ তেল নকল করা হচ্ছিল। এ তেলের মোড়কের গায়ে বাংলাদেশের কোন কারখানার কোন ঠিকানা ব্যবহার না করে বড় বড় করে কলকাতা, ইন্ডিয়া লেখা রয়েছে। ফলে ক্রেতারা এসব পণ্য আসল ভেবে কিনে প্রতারিত হচ্ছেন।
তবে অভিযানকালে কারখানা ম্যানেজার কবির জানায়, কলকাতার মূলকারখানাকে জানিয়ে তারা এগুলো তৈরি করছে। কিস্তু বাংলাদেশের নাম ব্যবহার করলে কম বিক্রি হবে বলে, তারা এ কৌশল অবলম্বন করেছে।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী উপকরণসহ পণ্যের বিস্তারিত বিবরণ মোড়কের গায়ে বাংলায় উল্লেখ থাকা বাধ্যতামূলক হলেও এ কারখানার পণ্যের মোড়কে হিন্দি ও ইংরেজি ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া এ কারখানায় তৈরি করা হয় মেড ইন কোরিয়া লেখা চুলের কলপ 'হাই স্পিড'। কোরিয়ান এ পণ্যটি হুবহু নকল করে বাজারজাত করা হচ্ছিল। যা চুল, ত্বক, চোখসহ স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পাশা জানান, এ গুলোতে ব্যবহূত রাসায়নিক উপকরণ এবং রং ত্বকের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য নমুনা পাঁচটি ল্যাবরেটরী ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পরই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
র্যাব কর্মকর্তারা জানান, বেশ বড় পরিসরে তৈরি কারখানাটি। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছর আগে এটি গড়ে ওঠে। অভিযানের সময় ৩০ জন শ্রমিক কাজ করছিল। মালিককে পাওয়া যায়নি।
কারখানার ম্যানেজার কবির জানিয়েছেন, মালিক খুব একটা আসে না। ভ্রাম্যমাণ আদালত ম্যানেজারকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও কারখানা সিলগালা দেয়। পাশাপাশি মালিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিএসটিআই কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তারা আরও জানান, তাদের কাছে তথ্য রয়েছে এ কারখানায় উত্পাদিত মেহেদি কড়ই পাতার গুঁড়ার রং ও এসিড মিশিয়ে তার তৈরি করা হয়। বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্য নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।