আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

এমএলএম ব্যবসার প্রতারণার আর এক নাম রিচ বিজনেস সিস্টেম লিঃ

শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৩, রাত ১১:৫০

ঠাকুরগাঁওয়ের অনেক মানুষ ডেসটিনি করে সর্বশান্ত হয়েছেন। গ্রাহকদের বিনিয়োগ ফেরত পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এখন আর এক প্রতারণা ফাঁদ রিচ বিজনেস সিস্টেম লিঃ নামে একটি কোম্পানী সাধারণ মানুষের কাছে অনেক অর্থ সংগ্রহ করছে। ফলে গ্রাহকরা হতাশায় দিন পার করছে। অনেক গ্রাহক মনে করছে যেকোন সময় উধাও হতে পারে এই প্রতিষ্ঠানটি ।

জানা গেছে, চট্ট্রগ্রামের রিচ বিজনেস সিস্টেম লি: ২০০৩ সালে শপিং মলের ওপর ইনভেস্ট করার নামে প্রথম মানুষ থেকে টাকা সংগ্রহ করে। তাদের “রিচ আই বাজার” নামের শপিং মলগুলো লোকসানের কারণে অনেক জায়গাতে বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ তারা এর ওপরেই দ্বিগুণ টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে টাকা সংগ্রহ করে প্রতারণা করছে। বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে গত দু’বছরে ঠাকুরগাঁও জেলায় কয়েক কোটি টাকা আমানত ও শেয়ার সংগ্রহ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গ্রাহক বাহার আলী  জানান, ডেসটিনি মত বড় প্রতিষ্ঠান উধাও হয়ে গেছে। রিচ বিজনেসে টাকা বিনিয়োগ করে হতাশায় রয়েছি কখন যে উধাও হয়ে যায়।

আর এক গ্রাহক সাহিদা আরবী জানান, যেভাবে ঠাকুরগাঁওয়ের রিচ বিজনেস সিস্টেম লিঃ অফিস পরিবর্তন করছে তাতে গ্রাহকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। উধাও হয়ে গেলে অনেক সাধারণ গ্রাহক পথে বসে যাবে।

দেশে এবং বিদেশে শেয়ার ব্যবসা করে দ্রুত টাকা কয়েক শত গুণ থেকে কয়েক হাজার গুণে উন্নিত করা যায় এমন একটি গুজব উঠলো। মানুষ সব ছেড়ে চলে আসলো শেয়ার ব্যবসার নামে তথাকথিত প্রতারণার আরেকটি ফাদে। রিচ বিজনেস সিস্টেম লিঃ, লিজেন ভ্যাঞ্জার, ফরেক্স ফরেক্স ফর ইউ, ফরেক্স শেয়ার ইত্যাদি কোম্পানি শেয়ারের নামে টাকা সংগ্রহ করলো। এরপর শেয়ার ব্যবসা মন্দ বলে সবগুলো কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়।

ইতিমধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক চক্রকে চিহ্নিত করে এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হলেও নাম পাল্টিয়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে নতুন করে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে তারা।

সম্প্রতি এমএলএম ব্যবসার নামে প্রতারণা থেকে সাবধান করে দিয়ে সতর্কবার্তা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সম্প্রতি এমএলএম ব্যবসার নামে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান অবাস্তব উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে সরল বিশ্বাসী জনগণের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করছে। মানুষের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ বিদেশে স্বর্ণ বা বৈদেশিক মুদ্রা ইত্যাদি ক্রয় করে জমা রাখা বা ব্যবসায়িক লেনদেনে ব্যবহার হচ্ছে বলে ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া প্রতিনিধিদের আয়োজিত ছোট ছোট সভায় প্রচারণার মাধ্যমে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া সংগ্রহ করা অর্থ বিদেশে স্থানান্তর বা বিনিয়োগ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় জব্দ করা হয়েছে। কয়েকটির বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক।

এসব প্রতিষ্ঠান দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন নামে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে। এদের কোনো একটির হিসাব বাংলাদেশ ব্যাংক বা দুদক থেকে অবরুদ্ধ করা হলেই এরা নতুন নামে অন্য এলাকায় একই ধরনের কার্যক্রম শুরু করে। অবাস্তব উচ্চ মুনাফার লোভে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকি অত্যন্ত বেশি। এ কারণে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যে কোনো লেনদেনে সতর্ক থাকার জন্য জনসাধারণকে পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দেশে এমএলএম ব্যবসার সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন ধারায় ব্যবসা সম্প্রসারণ করেছে। জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির ১১শ’ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এর সিংহভাগ শেয়ার সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করা হয়ে গেছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি আমদানি করা বিভিন্ন পণ্য গ্রাহক পর্যায়ে বিক্রি করছে। দেশব্যাপী ব্যাপক প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে ইউনি গ্রুপের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। স্বর্ণ, ডলার কেনার নামে এবং ১০ মাসে দ্বিগুণ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা সহ দেশেন বিভিন্ন স্থান থেকে কোনো জামানত ছাড়াই টাকা নিচ্ছে তারা।

ইতিমধ্যে জিজিএনসহ বেশ কয়েকটি এমএলএম প্রতিষ্ঠান প্রতারণার দায়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। জানা গেছে, এমএলএম প্রতিষ্ঠানগুলো রাজধানী ঢাকার সীমানা ছাড়িয়ে এখন দেশের প্রত্যন্ত গ্রামে চলে গেছে। ঠাকুরগাঁও,দিনাজপুর, পঞ্চগড়, রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জনসাধারণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করেছে। ২য় পর্বে সাধারণ গ্রাহককের টাকা নিয়ে প্রতারণার প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হবে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied