নিজস্ব সংবাদদাতা,নীলফামারী॥ নীলফামারী জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের নাড়ারডাঙ্গা ভূমিহীন পল্লীতে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে দিয়েছে মান্নান বাহিনীর প্রধান আব্দুল মান্নান ও তার সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার রাত ১২টার পর এ ঘটনা ঘটানো হয়। খবর পেয়ে নীলফামারী ও সৈয়দপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ৮ পরিবারের ১৬টি ঘর,ঘরে থানা আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বাকী ২০ পরিবার আগুনের হাত থেকে রক্ষা পেলেও তারা পুনরায় মান্নার বাহিনীর হামলার আশংকায় চরমভাবে আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। তারা সেখানে পুলিশ পাহারার দাবি করেছে।এলাকাবাসী জানায় এ ঘটনার আগের দিন সোমবার দুপুরে ভূমিহীন পল্লী নাড়ারডাঙ্গা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিয়ে মান্নান বাহিনীর লোকজন ভূমিহীন পল্লীর চারজন প্রতিবন্ধী কে রক্তাক্ত জখম করে। এই চারজন কে নীলফামারী আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এরা হলো ফুলঝার রহমান(৬০), মনছুর আলী(৬৫), সুধীর চন্দ্র(৫০) ও ফজিলা বেওয়া(৫৫)।
এই ঘটনায় নীলফামারী থানায় বাদী হয়ে আহত সুধীর চন্দ্র একটি মামলা দায়ের করেছেন।
ভূমিহীন পল্লীর মোতালেব,রমজান ও এহছানুল অভিযোগ করে জানায় ২০০৮ সালের আগে পর্যন্ত নাড়ারডাঙ্গার ১৩ একর খাস জমি অবৈধভাবে সোনারায় ইউনিয়নের মৃত শওকত আলীর ছেলে আব্দুল মান্নানের দখলে ছিল। সেটি সরকারের লোকজন সহ এলাকাবাসী মান্নান কে ওই খাস জমি থেকে উচ্ছেদ করে দেয়। এরপর সেখানে গড়ে উঠে নাড়ারডাঙ্গা ভূমিহীন পল্লী। এই পল্লীতে পুনরায় দখলের পায়তারা করছে মান্নান। এ জন্য সে বিভিন্ন সময় ভূমিহীন পল্লীর বসবাসকৃত পরিবারগুলো কে খাস জমি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। এ অবস্থায় সোমবার ( ৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মান্নানের সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন এসে পুনরায় খাস জমির ঘরবাড়ি ভেঙ্গে চলে যাওয়া জন্য ১২ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়ে চলে যায়। এ সময় তারা ভূমিহীন পল্লীর ফুলঝার রহমান(৬০), মনছুর আলী(৬৫), সুধীর চন্দ্র(৫০) ও ফজিলা বেওয়া(৫৫) সহ চারজনকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তাদের কে নীলফামারী আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ অবস্থায় মঙ্গলবার রাত ১২ টার দিকে মান্নান বাহিনীর প্রধান আব্দুল মান্নান ও তার বাহিনীর লোকজন ভূমিহীন পল্লীতে এসে ভূমিহীন পল্লীর মাটি ছেড়ে যাওয়ার জন্য পেট্রোল ঢেলে দিয়ে ঘর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় গোটা ভূমিহীন পল্লীর বাসিন্দারা আত্মœরক্ষার জন্য চিৎকার সহ পালাতে থাকে। এ সময় আগুনে ৮টি পরিবারের ১৬টি টিনের, খড়ের, বাঁশের চাটাইয়ের ঘরগুলো ও ঘরে থানা আসবাবপত্র কাপড় জামা সব পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের নীলফামারী ও সৈয়দপুরের দুটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলে ভূমিহীন পল্লীর আরো ২০ পরিবারের ঘরবাড়ি রক্ষা পায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে মান্নান বাহিনীরা পালিয়ে যায়।
এলাকাবাসী জানায় মান্নান একজন ডাকাত সরদার। তার একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে। তারা সকলেই ডাকাতির সাথে জড়িত। বিভিন্ন ঘটনায় মান্নানের বিরুদ্ধে ২৯টি মামলা হয়। মামলায় সে জেলে ছিল। জামিন পেয়ে এখন ফের সন্ত্রাসী তাণ্ডব চালাচ্ছে।
নীলফামারী থানার ওসি আবু আক্কাছ আহমেদ ঘটনার কথা জানিয়ে বলে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে আসামীদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।