পুলিশ ও প্রত্যক্ষর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টায় মিঠাপুকুর জামায়াত অফিস থেকে কয়েক হাজার জামায়াত শিবিরের নেতা কর্মীরা লাঠি-শোঠা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি মহাসড়কের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট, টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে। এসময় জামায়াত- শিবির কর্মীরা পাল্টা ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ঘটনাস্থলে ৫ জন ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে ১ জন নিহত হয়। নিহতরা হলেন, কাশীপুর গ্রামের জামায়াত কর্মী সাহেব আলী (৫০), শিবির কর্মী লতিবপুরের সাদেকুল, ভাংনী ভগবানপুর এলাকার মাহমুদুল, ইমাদপুরের আশিকুর, মির্জাপুর এলাকার মশিউর।
গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষ হামলার ঘটনার জেরে শুক্রবার স্থানীয় জামায়াত ও আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এতে জামায়াতের হামলায় এক রিকশাচালক নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় দিকে উপজেলার ধনশার হাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রিকশাচালকের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এদিকে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে জামায়াত-শিবিরের সহিংসতায় গুরুতর আহত তোজাম্মেল আলী নামে আরও এক পুলিশ কনস্টেবলের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪ পুলিশসহ ৮ জনে। নিহত অপর পুলিশ সদস্যরা হলেন- বাবলু (২৮), নাজিম (৩০), হযরত (৩৫)।
জামায়াত-শিবিরকর্মীরা সুন্দরগঞ্জ থানা ও বামনডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ি অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ফলে, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা জামায়াত-শিবির নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর জামায়াত-শিবির কর্মীরা সংগঠিত হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গোটা সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তাণ্ডব শুরু করে। তারা সুন্দরগঞ্জ থানা ঘেরাও করে থানায় হামলার চেষ্টা চালায়। পুলিশ প্রথমে ফাঁকা গুলি করে তাদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু জামায়াত-শিবির কর্মীরা থানায় হামলা চালালে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এ সময় জামায়াত-শিবিরের ৩ কর্মী নিহত হন।
ঠাকুরগাঁও: মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের আদেশের পর ঠাকুরগাঁওয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষে পাঁচ জন নিহত হয়েছে। সদর উপজেলার গড়েয়া বাজার এলাকায় সংঘর্ষে তারা নিহত হন।
ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আব্দুল জব্বার সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে পাঁচজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এছাড়া বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানান তিনি। নিহতরা হলেন, ফিরোজ (২৩), রবিউল ইসলাম বাদল (৩০), মনির (২১), মিঠুন (২০) ও সুমন (২৬)।
ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার ফয়সাল মাহমুদ বলেন, “জামায়াত-শিবির কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালালে আত্মরক্ষার্থে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা গুলি চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।”
দিনাজপুর: দিনাজপুর-সৈয়দপুর মহাসড়কের রামডুবি এবং চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দরে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় ফয়জার রহমান (৩০) নামে এক ব্যক্তি গুলিতে নিহত হয়।
এদিকে পার্বতীপুরে জামায়াতের ডাকা সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলাকালে ছাত্রলীগের কর্মীরা উপজেলা জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা চালায় ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে।