শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টায় নিহতদের নামাযে জানাযা শেষে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি বেলাল উদ্দিন এ হরতালের ডাক দেন। শনিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ হরতাল চলবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ের গড়েয়ার বৃহস্পতিবারের সংঘর্ষে নিহতদের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। এখনও আতংকে আছে এলাকার মানুষ। ভয়ে ওই এলাকার হাট বাজারের দোকান পাট বন্ধ রয়ছে।
সদর উপজেলা জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ৪ জন নিহত হন। নিহতারা হলেন- শিবির কর্মী রুবেল, যুবদল কর্মী ফিরোজ, ছাত্রদল কর্মী মনির উদ্দিন,গ্রামবাসী মিঠুন ।
নিহতদের বাড়িতে এখন কান্নার রোল। স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। এলাকা জুড়ে চলছে শোকের মাতম আর এলাকাবাসীর মনে আতংক। কেউই ভয়ে ঘর থেকে বের হতে চাইছেন না।
নিহত রুবেলের বাবা রুহুল আমিন বলেন, ‘আমার ছেলে স্কুলে পড়ে। সে কোনো জামায়াত-শিবিরের সাথে জড়িত না। পুলিশ ও বিজিবি নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করেছে তাকে।’
এলাকাবাসী সাইফুল ইসলাম জানান, সাইদীর রায়ের পর কিছু লোক উত্তেজিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে পুলিশ মিছিলে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল ছুড়ে। উত্তেজিত জনতা এ সময় ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ গুলি চালিয়ে এলাকার নিরীহ ৪ জনকে হত্যা করে।
একই গ্রামবাসী মজিম উদ্দিন জানান,হত্যার পর এখন এলাকার মানুষের ঘরে ঘরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভয়ে সাধারণ মানুষ বের হতে ভয় পাচ্ছে। কখনও যে আবার পুলিশ এসে হামলা চালায়।
উল্লেখ্য যে, বৃহস্পতিবার দুপুরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অবিযুক্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাইদীর ফাঁসির আদেশ দেয়ার পর ফুসে উঠেন সদর উপজেলা গড়েয়া ইউনিয়নের জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এ সময় তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে দোকানপাট ভাঙচুর করেন।
দুপুর আড়াইটায় পুলিশ ও বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার করলে জামায়াত-শিবির কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালান। চারদিক থেকে জামায়াত-শিবির আক্রমণ করলে পুলিশ ও বিজিবি ৭০/৮০ রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এতে ৪ জন নিহত হন এবং গুলিবিদ্ধ হন কমপে ৫ জন। শুক্রবার সকাল ১১টায় নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় পুলিশ।
ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ফয়সল মাহামুদ জানান, জামায়াত-শিবির আক্রমণ করলে আত্মরায় পুলিশ ও বিজিবি গুলি বর্ষন করে। এতে কিছু মানুষ হতাহত হন। গড়েয়া এলাকার পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।