রাহার মাতা বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় চানমিয়া হাউজিংয়ের বাসা থেকে বের হয় রাহা। সঙ্গে ছিল লামিয়া নামে এক তরুণী। পরে মধ্যরাতে একাই বাসায় ফিরে আসে। ওই সময় রাহাকে বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল। নিজেই বলছিল- শরীর খারাপ লাগছে। আমি বললাম- কি খেয়েছ? কেউ কি খারাপ কিছু খাইয়েছে? জবাবে সে ছিল নিরুত্তর। ওই নীরবতায় আমি আঁতকে উঠি। মনে হলো- খারাপ কিছু হয়েছে। পরে পীড়াপীড়ি করার পর বলে, ধানমন্ডিতে ফুচকা খেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ওই সময় মেয়ের শরীর ঘামছিল। অন্যরকম দেখাচ্ছিল। তাড়াহুড়ো করে বাথরুমে ঢুকলো। দীর্ঘ সময় নিয়ে গোসল করেছে। আমি নামাজের জন্য তাড়া দিলাম। সে পড়বে বলে জানায়। শরীর বেশি খারাপ দেখে- গ্যাসট্রিকের ওষুধ, স্যালাইন ও শরবত বানিয়ে দিলাম। সবই খেয়ে বললো- মা আমি তোমার সঙ্গে ঘুমুবো। কিন্তু আমার বিছানায় এলো না। পরক্ষণেই নিজের রুমে চলে গেল। আমি তার পিছু পিছু গিয়ে অনেকক্ষণ ছিলাম। বললাম- কারও সঙ্গে কিছু হয়েছে? সাকিব কিছু বলেছে? তোকে কি অপছন্দ করে? একথা শুনে রাহা বলে ওঠে, ওই তো আমাকে পছন্দ করেছে। আমি তো অফার করিনি। পরে রাত ২টার পর নিজের রুমে আসি। তখন সে ঘুমানোর কথা বলে দরজা লাগিয়ে দেয়। পরের দিন সকালে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে মেয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই।
তিনি বলেন, মেয়ের নামে কোন ফ্ল্যাট নেই। ভাড়া বাসায় থাকি। বাসা ভাড়া বাবদ মাসিক ২৭ হাজার টাকা মেয়েই যোগাড় করতো। ওর একটি প্রাইভেটকার ছিল। কোন শোরুম থেকে নিয়েছিল। পরে সম্পর্ক খারাপ হওয়ায় ওই গাড়ি ফেরত দিয়ে দেয়। তারপর থেকে রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশায় চলাচল করতো।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, রাহা কখন, কার সঙ্গে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন, কখন ও কার সঙ্গে ফিরেছিলেন সবই তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়া, ফুড পয়জনিংয়ে তার মৃত্যু হয়েছে, নাকি অন্য কোন কারণ আছে- সব বিষয়ই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ওসি বলেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে তাকে অসুস্থ মনে হয়েছে। তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা আছে। তার কাছে রাহার আত্মহত্যার বিষয়টি গোপন করার কারণ জানতে চাইলে জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন- কোন অভিযোগ না থাকার কারণে পুলিশকে না জানিয়ে দাফন করা হয়। ওসি আজিজুল হক আরও বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতার কারণে কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলনে দেরি হচ্ছে। লাশ উত্তোলনের পর পোস্টমর্টেম ও ভিসেরা পরীক্ষার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।