আর্কাইভ  শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ● ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ১৯ এপ্রিল ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: পলাশবাড়ীতে আসামির ছুরিকাঘাতে বাদীর মৃত্যু, গ্রেফতার ১       মন্ত্রী-সংসদ সদস্যদের সন্তান-স্বজনের ভোটে না দাঁড়ানোর নির্দেশ       ভোজ্যতেলের দাম বাড়ল, খোলা তেলে সুখবর       বিএনপি নেতা সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে রংপুরে  মানববন্ধন ও সমাবেশ        খরার ঝুঁকিতে রংপুর অঞ্চল      

 width=
 

মুই মোর ছাওয়াক ক্যাং করি পড়াশোনা করাইম’ মোর যে অতুল্যা টাকা পাইসা নাই

বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০১৩, রাত ০৯:৫৫

ইনজামাম-উল-হক ,নীলফামারী ৯ মে॥ প্রতিবেশীদের মিষ্টি মুখ করাতে না পারলেও রেজাল্ট শুনতে আসা শুভানুধ্যায়ীরা গরমের ফল তরমুজ এনে খাইয়েছেন দরিদ্র মা ও কৃষক মেধাবী ছেলেকে। মা ছকিনা বেগম ছেলে আব্দুল হাকিমকে আনন্দের দিনে কিছু উপহার দিতে না পারলেও চুমু আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে তার জন্য শুভ কামনা করেছেন। চিত্রটি ছিল নীলফামারী সদর উপজেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের গোবিন্দপুর এলাকার। বৃহস্পতিবার এসএসসির রেজাল্ট হওয়ার পর তার বাড়িতে গিয়ে চোখে পড়ে এমন দৃশ্য। প্রতিবেশীরা এসেছেন ভাল খবর শুনতে কিন্তু তাদের মিষ্টি মুখ করাতে না পারলেও অপর প্রতিবেশী আব্দুস সাত্তার খবর শুনে শহর থেকে একটি তরমুজ নিয়ে দেখে আসেন ছেলেটিকে। তরমুজটি কেটে খাওয়ানো হয় মা ছকিনা বেগম, ছেলে আব্দুল হাকিমসহ আগতদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেল পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষি কাজ করতো নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র আব্দুল হাকিম। তিন ভাই, দুই বোন আর মা বাবার সংসারে প্রায় ৮ বছর আগে বাবা মহররম আলী মারা যাওয়ার পর পরিবারে নেমে আসে চরম অনিশ্চয়তা। অন্ধকারে পড়েন পরিবারের লোকজন। স্কুলে ভাল ছাত্র এবং দরিদ্র হওয়ার কারণে শিকরা তাকে পড়িয়েছেন বিনা পয়সায়। অভাব অনটনের সংসারে মাঝি এর কাজ করতেন অন্যের বাড়িতে। পড়াশোনার টাকা যোগার করতে আব্দুল হাকিম নিজেও জমি নিড়ানো, হাল চাষসহ বিভিন্ন কাজ করে সংগৃহীত টাকা জমা করতেন মায়ের কাছে। যা দিয়ে চলতো পড়াশোনা সহ সংসারের যাবতীয় খরচ। প্রতিবেশী নুর ইসলাম জানান, দরিদ্র ঘরের ছেলে আব্দুল হাকিম অত্যন্ত মেধাবী। পড়াশোনার পাশাপাশি কৃষি কাজ করে নিজের খরচের টাকা সংগ্রহ করতো। ব্যক্তিগত ভাবে তাকে সহযোগিতা করেছি অনেক ভাবে যেন সে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে। নীলফামারী সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক গোলাম রব্বানী জানান, আব্দুল হাকিম অত্যন্ত মেধাবী। যা আমরা ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে বুঝতে পেরেছি। শুরু থেকে আমি তাকে প্রাইভেট পড়াতাম। দরিদ্র ঘরের সন্তান হওয়ায় ভবিষ্যতে তার পড়াশোনা টিকিয়ে রাখা হয়ে পড়বে দুরূহ ব্যাপার। এজন্য তাকে সহযোগিতা করতে বিভিন্ন জনের কাছে আহবান জানান তিনি। সাংবাদিকদের কাছে মা ছকিনা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বার বারই বলছেন ‘মুই মোর ছাওয়াক ক্যাং করি পড়াশোনা করাইম’ মোর যে অতুল্যা টাকা পাইসা নাই। তোমরা ছাওয়াটাক ব্যবস্থা করি দ্যান।’

মন্তব্য করুন


 

Link copied