আর্কাইভ  শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪ ● ১৫ চৈত্র ১৪৩০
আর্কাইভ   শুক্রবার ● ২৯ মার্চ ২০২৪
 width=
 
 width=
 
শিরোনাম: দিনাজপুরে ছিনতাইকৃত মালামাল উদ্ধারসহ ছিনতাইকারী চক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার        জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবাকে কবর দিতে ছেলের বাঁধা ॥ পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফন       নীলফামারীতে স্বামীর প্রথম বিয়ের খবরে নববধূ দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যা ॥ স্বামী গ্রেপ্তার       রংপুরবাসীর জন্য সরকারি চাকরি, পদ ১৫৯       স্বাস্থ্যের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক কারাগারে      

 width=
 

ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে দিনমজুরী করছে গোল্ডেন জিপিএ পাওয়া আতাউর

রবিবার, ১৯ মে ২০১৩, রাত ১১:১৭

ইনজামাম-উল-হক,নীলফামারী ১৯ মে॥ গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার পর বাকি পড়াশুনার জন্য খরচ জোগাতে দিনমজুরী করছে আতাউর। বাবা আব্দুল লতিফ দিনমজুর। বৃদ্ধ বাবার এমন পরিশ্রমের কথা চিন্তা করে তাই নিজের লেখাপড়ার খরচ যোগাড় করতে কখনো ইটভাটায়, কখনো মানুষের জমিতে ধান কাটার কাজ করতে হয় আতাউরকে। শত বাঁধা ও দারিদ্র্যতার সাথে লড়াই করে এবারের এসএসসিতে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ পেয়েছে আতাউর। সে নীলফামারী সদর উপজেলার কুন্দুপুকর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ও কুন্দুপুকুর ইউনিয়নের দক্ষিণ হাড়ায়ো গ্রামের আব্দুল লতিফের সর্ব কনিষ্ঠ ছেলে আতাউর। প্রতিবেশীরা জানায়, আব্দুল লতিফের দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। এরা মেধাবী। তবে ছোট ছেলে আতাউর বেশী মেধাবী। সে পঞ্চম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষায় সাধারণ গ্রেডে বৃত্তি পায়। কিন্তু পরিবারের অভাবে একসময় তার পড়া লেখা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে দাড়ায়। তাই সেই ছোট বয়স থেকেই কখনো ইটভাটায় আবার কখনো দিনমজুরি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালায়। তার কষ্ট আজ সার্থক হয়েছে। সে আমাদের গ্রামের গর্ভ। কুন্দুপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোকা রাম রায় ও সহকারী প্রধান শিক্ষক জহিরুল আলম জানান, “আমরা জানতাম সে গোল্ডেন জিপিএ পাবে । ফলাফল প্রকাশের দিন বিদ্যালয়ে আতাউর অনুপস্থিত ছিল। তার ফলাফলে খবর জানাতে তাকে খুঁজে পাওয়া যায় দুই কিলোমিটার দুরে দিন মজুর হিসেবে জমিতে ধান কাটার কাজ করছে।” আতাউর জানান, বাড়ীতে স্বামী পরিত্যক্তা বড় বোন। মেজ বোন নীলফামারী সরকারি কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়নরত। বড় ভাই ডিগ্রী পড়ছে। সবার ছোট বোন অষ্টম শ্রেণীতে। বাবার পক্ষে আমাদের সবার পড়ালেখার খরচ বহন করা একেবারেই অসম্ভব। তাই আমি পড়ালেখার ফাকে কখনো ইটভাটায় আবার কখনো মানুষের বাড়ীতে দিন মজুর হিসেবে কাজ করে নিজের ও বোনদের পড়-লেখার খরচ সংগ্রহ করে আসছি। তাই শেষ পরীক্ষা দিয়ে কলেজে ভর্তির জন্য টাকা সংগ্রহ করতে দিনাজপুর জেলার বিরামপুরের ইটভাটায় ২০০ টাকার দিন হাজিরায় কাজ করি। আমার ফলাফলের আগের দিন আমি বাড়ীতে আসি।

যেদিন ফলাফল প্রকাশিত হয় সে দিন আমি বাড়ী থেকে দুই কিলোমিটার দুরে একজনের জমিতে দিনমজুর হিসেবে ধান কাটার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এমন সময় আমার বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক জহির স্যার এসে জানায় আমি গোল্ডেন জিপিএ পেয়েছি। এখন ভাল একটি কলেজে ভর্তি হয়ে ভবিষ্যতে প্রকৌশলী হয়ে দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হতে চাই। কিন্তু ইটভাটায় আর মানুষের বাড়ীতে দিনমজুরী করে কি প্রকৌশলী হতে পারবো কি? এমনই প্রশ্ন আতাউরের। এদিকে আতাউরের বাবা আব্দুল লতিফ ও মা আসমা বেগম জানান, ভাল রেজাল্ট করে ছেলে বায়না ধরেছে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে। বলেন তো একজন দিন মজুরের পক্ষে কি এটা সম্ভব? ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গেলে অনেক টাকার প্রয়োজন। এতো টাকা আমরা পাবো কই? তবে কি দিনমজুর আর ইট-ভাটর শ্রমিক আতাউরের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। আতাউরের সাথে যোগাযোগের মোবাইল নম্বর-০১৭৪৪-৬৩৫৮০০।

মন্তব্য করুন


 

Link copied