লালমনিরহাট প্রতিনিধি: ১ মার্চ থেকে পার্বতীপুর যাবে না লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগের জনবান্ধব ট্রেন বুড়িমারী কমিউটার।
সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ মোহাম্মদ সুফি নূর।
পার্বতীপুর না গেলেও বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনটি সকাল ৮টায় লালমনিরহাট স্টেশন থেকে ছেড়ে বুড়িমারী যাবে। সেখানে ২০ মিনিট বিরতী দিয়ে পুনরায় লালমনিরহাটে ফিরে যাত্রা সমাপ্ত করবে।
জানা গেছে, দিনাজপুরের পার্বতীপুর স্টেশন থেকে ভোর ৫ টায় ৪৫ মিনিটে ছেড়ে রংপুর লালমনিরহাট হয়ে বুড়িমারী পৌছত সকাল ১০টায়। সেখানে ২০ মিনিট বিরতি দিয়ে পুনরায় একই রুটে পার্বতীপুর পৌছত। ফলে লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও চাকুরীজীবিরা যাতায়ত করতে পারত। রংপুরের যাত্রীরাও এ ট্রেনে লালমনিরহাট জেলার অফিসের কাজকর্ম করতে পারত। শিক্ষার্থীরা এ ট্রেনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ, কারমাইকেল কলেজ ও দিনাজপুর হাজী দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়সহ এ বিভাগের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পেত। একই ভাবে বুড়িমারী স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা এ ট্রেনে রংপুর যাতায়ত করত। এ কারনে ট্রেনটি লাভজনক ও জনবন্ধব বাহনে পরিনত হয়। ট্রেনটি বন্ধ হলে এসব যাত্রী চরম ভোগান্তিতে পড়বে।
এ দিকে ১ মার্চ থেকে বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনটি পার্বতীপুর না গিয়ে সিডিউল পরিবর্তন করেছে রেল বিভাগ। নতুন সিডিউল অনুযায়ী ১ মার্চ থেকে সকাল ৮টায় ট্রেনটি লালমনিরহাট স্টেশন থেকে ছেড়ে বুড়িমারী পৌছবে এবং সেখানে ২০ মিনিট বিরতি দিয়ে পুনরায় লালমনিরহাট পৌছে যাত্রা সমাপ্ত করবে। ফলে রংপুর বিভাগে এ জনবান্ধব ট্রেনটি আর জনবান্ধব বা লাভজনক থাকছে না বলে আশংকা স্থানীয় সুশিল সমাজের। ট্রেনটি বন্ধ না করার দাবি তাদের।
অপর দিকে করোনা কালে বন্ধ হওয়া রমনা কমিউটার ট্রেনটি ১ মার্চ থেকে চালুর সিদ্ধন্ত নিয়েছে রেল বিভাগ। যার সিডিউল নিয়ে আপত্তি যাত্রী সাধারনের। নতুন সিডিউল অনুযায়ী রমনা কমিউটার ট্রেনটি সকাল ৮টায় কুড়িগ্রামের রমনা বাজার থেকে ছেড়ে রংপুর পৌছবে সকাল ১১টায়। সেখান থেকে লালমনিরহাট যাবে।পুনরায় লালমনিরহাট থেকে এ ট্রেনটি রাত ১০টায় কাউনিয়া হয়ে রমনা বাজার পৌছবে রাত দেড়টায়। এ সময় রমনা কমিউটারও যাত্রীদের তেমন কাজে আসবে না বলে দাবি রেল যাত্রীদের। রেল বিভাগের এ সিদ্ধান্তের ফলে রংপুর বিভাগের যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ ও ট্রেন সংকটে পড়বে বলে দাবি করছেন সচেতন মহল।
রেলওয়ের নিয়মিত যাত্রী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, বুড়িমারী কমিউটার হয়ে রংপুরে যোগাযোগ করতাম। এখন এটি বন্ধ হলে বিকল্প কোন ট্রেন না থাকায় বাসে যেতে হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের তো সংকটই থেকে গেলো। ট্রেনটি বন্ধ করার আগে রেল বিভাগের আরও ভাবা উচিৎ। অপর দিকে রমনা কমিউটারের সময় তো যাত্রীদের তেমন কোন কাজে আসবে না। ফলে বৃহত্তর রংপুর বিভাগে ট্রেন যোগাযোগ ভেঙ্গে পড়বে বলেও দাবি করেন তিনি।
রংপুর কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী রহিম মিয়া বলেন, বুড়িমারী কমিউটার ট্রেনটি রংপুর অঞ্চলের জনবান্ধব একটি ট্রেন। এ ট্রেনে অনেকেই রংপুর শহরে বসবাস করেও লালমনিরহাট জেলার যেকোন উপজেলার অফিস করতেন। বন্ধ হলে তো লোকসানে পড়বে রেল বিভাগ। রেল বিভাগের এ সিদ্ধান্তটি আত্নঘাতি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার শাহ মোহাম্মদ সুফি নূর বলেন, বুড়িমারী কমিউটার বন্ধ নয়। যাত্রা ছোট করা হয়েছে। যা পার্বতীপুর না গেলেও লালমনিরহাট -বুড়িমারী রুটে আপ ও ডাউন করবে। অপর দিকে কুড়িগ্রামের যাত্রীদের বিবেচনা করে বন্ধ থাকা রমনা কমিউটার ট্রেনটি ১ মার্চ থেকে চালু করা হচ্ছে।