লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে নব নির্বাচিত ইউপি সদস্যের তিনদিন ধরে টর্চার সেলে নির্যাতিত দুই ব্যক্তির মধ্যে আনোয়ারুল ইসলাম (৩০) ৬দিন পর রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) রাত সাড়ে নয়টায় কালিগঞ্জ থানার ওসি গোলাম রসূল এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে উপজেলার চলবলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোজ্জাম্মেল হকের বাড়ির পাশে ঝুপড়ি ঘর থেকে পুলিশ উদ্ধার করে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কালীগঞ্জ ইউনিয়নের চলবলা ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের নবনির্বাচিত মেম্বার মোজাম্মেল হক (৪৬), তার ছোট ভাই মোশারফ হোসেন ভুট্টু (৩০) ও মেম্বারের পুত্র সুজনসহ (২৪) আদিতমারী উপজেলার নামড়ি ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের মজিবরের পুত্র আনোয়ারুল ইসলাম পাওনা টাকা চাইতে বাড়িতে মান। ৩ দিন আটকে রেখে তার ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালায়। এ সময় তাকে উদ্ধার করতে প্রতিবেশী কুদ্দুসের পুত্র রোকনুজ্জামান গেলে তাকেও আটকে রেখে নির্যাতন করে।একপর্যায়ে তাকে বেঁধে রেখে সারারাত নির্যাতন করে। আনারুল ইসলাম চিত্কার-চেঁচামেচি করলে এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক বৃদ্ধাঙ্গুল কেটে দেন।
পরেরদিন আত্মীয়-স্বজনরা আটকে রাখার খবর পেয়ে ইউপি সদস্যের বাড়িতে ছুটে যান। আনোয়ারুল ইসলামের পরিবারের কথা না শুনে লাঠি দিয়ে ধাওয়া করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। উপায় না পেয়ে ৯৯৯ ফোন করেন আনোয়ারুল ইসলামের পরিবার।
পরে বৃহস্পতিবার সকালে চলবলা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোজ্জাম্মেল হকের বাড়িতে গিয়ে দুজনকে আটকে রাখার বিষয়টি জানতে চাইলে তারা অস্বীকার করেন। এর কিছুক্ষণ পরই এলাকায় দুজন চোর আটক আছেন এমন খবর ছড়িয়ে দেন নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য মোজ্জাম্মেল হক।
পরে পুলিশ খবর পেয়ে আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করেন। এছাড়া দু’জনের মাথা ও শরীরে পৈশাচিক নির্যাতনের একাধিক ক্ষত রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন পুলিশ। ওইদিন সন্ধ্যায় ৫ জনকে আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন, জেলার কালীগঞ্জ ইউনিয়নের চলবলা ইউপির ৯নং ওয়ার্ডের নব নির্বাচিত মেম্বার মোজাম্মেল হক (৪৬), তার ছোট ভাই মোশারফ হোসেন ভুট্টু (৩০) ও মেম্বারের পুত্র সুজন (২৪) সহ ৫ জন।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম রসুল জানান, দায়ের করা মামলা মধ্যে প্রধান আসামি ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হকসহ আরো একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।