আর্কাইভ  শনিবার ● ১০ জুন ২০২৩ ● ২৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০
আর্কাইভ   শনিবার ● ১০ জুন ২০২৩
 width=
 width=
শিরোনাম: ঢাকা-১৭ আসনে আ.লীগের মনোনয়ন পেলেন আরাফাত       রংপুর জেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটি ঘোষণা       প্রেমিকাকে ধর্ষন পলাতক প্রেমিক গ্রেপ্তার       বিদ্যুৎখাতে দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রতিবাদে রংপুরে বিএনপি’র অবস্থান কর্মসূচি       গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রামবাসির স্বপ্নের তিস্তা সেতুর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে       

কুড়িগ্রামে দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি।। দুর্ভোগ চরমে

সোমবার, ২০ জুন ২০২২, বিকাল ০৭:৪৮

প্রহলাদ মন্ডল সৈকত: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে কমপক্ষে দেড় লাখ মানুষ। সোমবার(২০জুন) বিকেল ৩টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি  চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৫২ সেন্টিমিটার, ব্রম্মপুত্রের নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার২৩ সেন্টিমিটার ও ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম ব্রিজ পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ।
তিস্তার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও তা বিপদসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে।

নদীবেষ্টিত দুর্গম চরাঞ্চলের বন্যা কবলিত মানুষজন অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে।  চুলা জ্বালাতে না পারায় এবং টিউবয়েল তলিয়ে থাকায়  শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে ।
অন্যদিকে টানা বৃষ্টি ও উজানের পানিতে গো-খাদ্য নষ্ট হয়ে হয়ে যাওয়ায় একমাত্র আয়ের উৎস গবাদি পশুর খাদ্য সংকট নিয়েও চরম বিপাকে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষ। বন্যা কবলিত এলাকার কাঁচা-পাকা সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের শাহাজালাল জানান, এই চরের সবগুলো বাড়ি ঘরের অর্ধেকেরও বেশি তলিয়ে আছে। কিছু পরিবার অন্যত্র চলে গেলেও কিছু পরিবার নৌকায়, ঘরের ভিতর উঁচু করা মাচায় দিন-রাত পার করছে। তারা জানান, তাদের নৌকা না থাকায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে উঁচু জায়গায় যেতে পারেনি। ঘরের ভিতর কষ্ট করে আছে। সরকারী ভাবে ত্রাণ সহায়তা পেলেও তা রান্না করার মতো উপায় নেই বলে জানান তিনি।

একই ইউনিয়নের খেয়ার আলগা চরের সদরুল ইসলাম জানান, আমরা কষ্ট করে দিন পার করলেও গরু, ছাগল, ভেড়ার খাদ্য সংকট নিয়ে বিপদে আছি। একদিকে বন্যার পানিতে চারনভূমি পানির নীচে অন্যদিকে টানা বৃষ্টিতে পচে গেছে খড়ও। এই গবাদি পশুই আমাদের মূল আয়ের উৎস। এটা রক্ষা করতে না পারলে আমাদের টানা বৃষ্টি উজানের মনের গোপন ঘরে বাঁচার উপায় থাকবে না।

এদিকে সরকারী ভাবে ত্রাণ তৎপরতার পাশাপাশি বেসরকারীভাবেও কিছু এলাকায় সামান্য ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়েছে। জেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নে ৪শ শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমান উদ্দিন আহমেদ মন্‌জু, মানবিক বাংলাদেশ সোসাইটি কুড়িগ্রাম শাখার পক্ষ থেকে সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ভগবতীপুর এলাকায় ৩শ পরিবারের মঝে ১ কার্টুন করে বিস্কুট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাধ্যমত বন্যার্তদের পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করছেন।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, আমার ইউনিয়নে যে পরিমান মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে তাতে বরাদ্দের বাইরে আরো সহযোগীতার প্রয়োজন হবে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, ৯ উপজেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৩শ ৩৮ মেট্রিক টন চাল, নগদ ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শিশু খাদ্য ও ১৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকার গো-খাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লা আল মামুন জানান, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পানি কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য করুন


 

Link copied