লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় জমি দখলে নিতে চাচাকে ছুরিকাঘাত করে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ দেয়া পুলিশ কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার(২১ মার্চ) দুপুরে লালমনিরহাট আমলী আদালত ২ এ মামলাটি দায়ের করেন আহত বৃদ্ধ মিনহাজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল বাতেন।
এর আগে শুক্রবার (১৮ মার্চ) দুপুরে উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের উত্তর গোবধা ভালবাসার মোড় এলাকায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন ওই গ্রামের মৃত আমিনুল হকের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে ঢাকা মেট্রোপলিটনে কর্মরত রয়েছেন বলে তিনি স্বীকার করেন।
মামলার বিবরনে প্রকাশ, পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া জমিতে দীর্ঘ দিন ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন উত্তর গোবধা ভালবাসার মোড় এলাকার মিনহাজুল ইসলাম (৭২)। সেই বাড়ির পিছনে রয়েছে তার ভাতিজা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন(৫২) বাড়ি।
কিন্তু চাচা মিনহাজুলের বাড়ির কারণে পুলিশ কর্মকর্তা দেলোয়ারের আলিসান বাড়ি ঢেকে গেছে। এ কারণে চাচা মিনহাজুলকে বাড়ি সরিয়ে পিছিয়ে নেওয়ার দাবি করেন। কিন্তু বৃদ্ধ মিনহাজুল বাড়ি সরাতে আপত্তি জানান। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এর জের ধরে ছুটি নিয়ে গ্রামে এসে শুক্রবার (১৮ মার্চ) দেলোয়ার হোসেন গ্রাম্য সার্ভেয়ার নিয়ে একাই জমি পরিমাপ করে সীমানা পরিবর্তনের চেষ্টা করেন। এতে চাচা মিনহাজুল বাধা দিলে তার ওপর হামলা চালায় দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য শাহানুর আলম শাহীনসহ অনেকেই। এ সময় তাদের দেশি ছুরির আঘাতে বৃদ্ধ মিনহাজুল রক্তাক্ত জখম হন। স্বামীকে বাঁচাতে মিনহাজুলের স্ত্রী আফরোজা বেগম (৬৫) ছুটে গেলে তাকে পিটিয়ে জখম করে দোলোয়ার হোসেন গংরা।
এ সময় দেলোয়ার গংরা বৃদ্ধ মিনহাজুলের উঠানে থাকা খড়ের গাঁধায় আগুন দিয়ে তাদের ঘরেও হামলা ও লুটপাট চালায়। খবর পেয়ে আদিতমারী উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। বৃদ্ধ মিনহাজুল ও তার স্ত্রীকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় আহত বৃদ্ধ মিনহাজুল ইসলামের ছেলে আব্দুল বাতেন বাদি হয়ে পুলিশ কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনকে প্রধান করে ৬ জনের বিরুদ্ধে সোমবার(২১ মার্চ) আমলী আদালত ২ এ একটি এজাহার দায়ের করেন। আদালত এজাহারটি আমলে নিয়ে নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে আদিতমারী থানাকে নির্দেশ দেন।
এ মামলার অপর বিবাদিরা হলেন, পুলিশ কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের ভাই শাহানুর আলম শাহীন(৩৪), শাহাববুদ্দিন সাবু(৩৭), মোক্তার হোসেন লেবু(৪৮), বোন সংরক্ষিত ইউপি সদস্য লাইলী বেগম(৪৮) ও বোন জামাই স্থানীয় গোবধা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফয়জার রহমান(৫৭)।
লালমনিরহাট আদালতের আইনজীবি অ্যাভোকেট প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, বাদির এজাহার শুনে সন্তোষ্ট হয়ে বিজ্ঞ আদালত এজাহারটি গ্রহন করে নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করতে আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেছেন।