শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকে হত্যা চেষ্টা স্পর্শকাতর চাঞ্চল্যকর মামলার রায় আগামি ৮ নভেম্বর ।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন,দিনাজপুর আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো.মনিরুজ্জামান। ৪ অক্টোবর এই মামলার রায় হওয়ার কথা থাকলেও বিচারকের বদলির কারণে রায় পেছানোর পাশাপাশি নতুন করে মামলার যুক্তি-তর্ক পর্যালোচনা নির্ধারন ছিলো আজ ২০ অক্টোবর।
দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালত- ৩ এর বিচারক বেগম সাদিয়া সুলতানা আজ বৃহস্পতিবার এই স্পর্শকাতর মামলার যুক্তি-তর্ক নতুন করে পর্যালোচনা শেষে ৮ নভেম্বর রায়ের তারিখ নির্ধারন করেন। এ তথ্য জানিয়েছেন,পাবলিক পসিকিউটর- পিপি এডভোকেট মো.রবিউল ইসলাম।
প্রসঙ্গত: সরকারী ডাক বাংলোয় ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখকে হুত্যার প্রচেষ্টা চালায় দুর্বৃত্ত। এ ঘটনা সেময় টক অব দ্যা কান্ট্রিতে রূপ নেয়। এই স্পর্শকাতর ঘটনার পর সারাদেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) নিরাপত্তার জন্যে কার্যালয় ও বাসভবনে আনসার মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গগত :এর আগেই অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতে মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়। বিচারক ৪ অক্টোবর রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেন। কিন্তু বিচারক বদলির কারণে তা পরিবর্তন করা হয়।
২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাতে সরকারি ডাক বাংলোতে ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলী শেখের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্ত তাদের হত্যার চেষ্টা চালায়। ৩ সেপ্টেম্বর সকাল আটটায় তাদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের অবস্থার অবনতি হলে হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকার জাতীয় নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে হস্থান্তর করে। এ ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইউএনও ওয়াহিদার ভাই শেখ ফরিদ ঘোড়াঘাট থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা বেশ কয়েকজনকে আটক করেন। এনিয়ে চলে বেশ নাটকীয় ঘটনা।
১১ সেপ্টেম্বর রাতে বিরল উপজেলার বিজোড়া ইউনিয়নের বিজোড়া গ্রামের খতিব উদ্দীনের ছেলে ও ঘোড়াঘাটের ইউএনওর বাসভবনের চাকুরিচ্যুত কর্মচারী রবিউল ইসলামকে আটক করা হয়।
এরপর ২০ সেপ্টেম্বর দিনাজপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম আমলি আদালত-৭-এর বিচারক ইসমাইল হোসেনের কাছে হামলার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন রবিউল। পরদিন দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে রবিউলের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
আদালতের পাবলিক পসিকিউটর- পিপি এডভোকেট মো.রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, দিনাজপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে প্রথম থেকে মামলার কার্যক্রম পরিচালিত করা হয়েছে। পরে দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতে হস্তান্তর করা হয়। সেখানেই গত ২৬ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়।
এ মামলায় ৫৩ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য নেয়া হয়। এক মাত্র আসামি রবিউল হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন। তার উপস্থিতিতেই আদালতে বিচারকার্য্য পরিচালনা করা হয়েছে।তবে, অভিযুক্ত রবিউল অভিযোগ, পুলিশ তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার আশ্রয় নিয়ে হয়রানী করছে। এ ঘটনার সাথে তার কোন সম্পৃক্তা নেই।