শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকেঃ দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে এশিয়া উপ মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল ফিতরের জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের লক্ষে সকল প্রস্তুতি সমন্ন হয়েছে। বিশাল সৌন্দর্যমন্ডিত এ ঈদগাহ মাঠে এবার ৬ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জামাত শুরু হবে ঈদের দিন সকাল ৯টায় বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। সুষ্ঠুভাবে ঈদের জামাত সম্পন্নের জন্যে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ঈদুল ফিতর নামাজ আদায়ের জন্য দিন রাত কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে,আয়োজকরা। মিনার সংস্কার ও রঙ করা, ধোয়ামোছা, মাঠে মাটি ভোরাট,চুনের দাগসহ আনুসাঙ্গিক কাজ চলছে। পর্যাপ্ত মাইক লাগানো হচ্ছে মাঠে।এরই মধ্যে মাঠের বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যবেক্ষণের টাওয়ার। ঈদের জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সুজজ্জিত প্রবেশদ্বারে সিসিটিভি ক্যামেরা,তিনস্তরের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।
এমনটাই জানিয়েছেন দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ্ ইফতেখার আহমেদ (বিপিএম সেবা)।তিনি জানান, আইন শৃংখলায় নিয়োজিত বাহিনীর পোশাকধারী সদস্য ছাড়াও সাদা পোশাকেও নিয়োজিত থাকবে।
২০১৫ সালে নির্মান কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ৭ টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। করোনার কারনে দীর্ঘ দুই বছর নামাজ আদায় বন্ধ থাকায় দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর গতবছর ঈদুল ফিতর এর নামাজ আবারো আদায় হয়। এবারো একসাথে সর্ববৃহৎ জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য মুসুল্লীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। গোর এ শহিদ ময়দানের মিনারটি ইতিমধ্যেই প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা’র ঈদ কার্ডে স্থান পেয়েছে। গুগলসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে জায়গা করে নিয়েছে ঈদগা মাঠটি।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ জানান, দিনাজপুর গোর এ শহীদ ময়দানটি ২২ একর জমির উপর অবস্থিত। মুসলিবলদেও সুবিধার্থে ইতিমধ্যে মাঠের কোনে অবস্থিত স্টেশন ক্লাবটি ভেংগে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এবার ১২ একর জমি নামাজের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ৫১৬ ফুট দীর্ঘ সর্বোচ্চ ৬০ ফুট উচ্চতার দু’টি গম্বুজসহ মোট ৫২ গম্বুজ রয়েছে। মিনারের দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি এবং প্রধান মিনারের উচ্চতা ৫৫ ফুট। এর মাঝে আরো ২০ ফুট উচ্চতার ৫২ গম্বুজ নিয়ে ৫১৬ ফুট প্রস্থের ঐতিহাসিক গোর এ শহীদ ময়দানের ঈদগাহ মিনারটি এখন ঐতিহাসিক মিনারে পরিণত হয়ে গেছে। প্রত্যেকটি গম্বুজে দেওয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি।
২০১৫ সালে মাঠের পশ্চিম প্রান্তে মিনার নির্মানের সিদ্ধান্ত নেন দিনাজপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম। দৃষ্টি নন্দিত মিনারের পাদদেশে খোলা আকাশের নীচে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতি এবং আল্লাহর প্রদত্ত খুশির দিনের নামাজ আদায়ের স্বপ্ন দেখেন। আজ তা প্রতিফলিত হয়েছে,বলে জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম আশাব্যক্ত করেন। এবারের ঈদে প্রায় ৬ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন বলেও তিনি জানান। রাজধানী ঢাকা,নারায়নগঞ্জ,চট্রগ্রাম,সাতক্ষিরা,টাঙ্গাইল,বগুড়া,রংপুর,নীলফামারী,জয়পুরহাটসহ আশপাশের অনেক জেলার মুসল্লি অংশ নেয় এ জামাতে। এশিয়া উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ এ জামাতে নামাজ আদায় করতে পেতে আনন্দে আপ্লুত হয় মুসল্লিরা।
সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত সুষ্ঠভাবে সম্পন্নের লক্ষে সকল প্রস্ততি সম্পন্ন হয়েছে। এনিয়ে জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে দ’দফায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ঈদ জামাত প্রস্তুডু সভা। মাঠ পরিদর্শন করেছেন, দনাজপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এখন শুধু অপেক্ষা লক্ষ লক্ষ মুসুল্লির অংশগ্রহনে দু’রাকাত নামাজে আদায়ের। ঈদের নামাজে ইমামতি করবেন, দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের খতিব মাওলানা শামসুল হক কাসেমী।